:: নোয়াখালী প্রতিনিধি ::
প্রবাসীকে চোখ বেঁধে বাসা থেকে তুলে নিয়ে নির্যাতন ও টাকা দাবির অভিযোগে নোয়াখালী জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) দুই সদস্যকে প্রত্যাহার করে জেলা পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়েছে।
নির্যাতনের শিকার ওই প্রবাসীর নাম মহিন উদ্দিন। নির্যাতনের শিকার মহিন উদ্দিন বেগমগঞ্জ উপজেলার চৌমুহনী পৌরসভা এলাকার বাসিন্দা।
প্রত্যাহার হওয়া ডিবির দুই সদস্য হলেন এসআই শরীফুল ইসলাম ও কনস্টেবল মুরাদ হোসেন। পুলিশ সুপার (এসপি) মো. শহীদুল ইসলাম ডিবির দুই সদস্যকে প্রত্যাহার করার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এ বিষয়ে তিনি বলেন, অভিযুক্ত ডিবির দুই সদস্যের বিরুদ্ধে উত্থাপিত ওই অভিযোগ তদন্তের দায়িত্ব অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস), নোয়াখালী বিজয়া সেনকে দেওয়া হয়েছে। তিনি পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত শেষ করে প্রতিবেদন দাখিল করবেন।
প্রবাসী মহিন উদ্দিন থেকে জানা গেছে, ১১ ফেব্রুয়ারি তিনি দুবাই থেকে দেশে ফেরেন। দেশে ফেরার সময় এক প্রবাসী কিছু স্বর্ণালংকার, একটি মুঠোফোন ও একটি ল্যাপটপ ঢাকায় তার এক প্রতিবেশীর কাছে পৌঁছে দিতে অনুরোধ করেন। ওই প্রবাসী মহিনের কাছে ঢাকায় থাকা প্রতিবেশীর একটি ছবিও দেন। বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পর দুই ব্যক্তি ওই ছবি দেখিয়ে জিনিসগুলো নিয়ে যান। তখন তারা প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী মহিনকে ১০ হাজার টাকা দেন। কিন্তু কিছুদিন পর দুবাইয়ে থাকা ওই প্রবাসী অভিযোগ করেন, মালামাল তার প্রতিবেশী পাননি।
প্রবাসী মহিন বলেন, ‘৩ মার্চ রাতে ডিবির এসআই শরীফুল ইসলাম বাড়িতে গিয়ে কোনো লিখিত অভিযোগ বা গ্রেফতারি পরোয়ানা ছাড়াই গামছা দিয়ে আমার চোখ বেঁধে ধরে নিয়ে যান। ডিবি কার্যালয়ে আটক রেখে শারীরিক নির্যাতন করেন। পরদিন ডিবি কার্যালয়ে সালিশ বসিয়ে ২০ মার্চের মধ্যে ডিবি পুলিশকে ছয় লাখ টাকা দিতে হবে বলে সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়। অন্যথায় আমাকে ক্রসফায়ারের ভয় দেখানো হয়।’
মহিন আরও বলেন, ‘ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে আমার কাছ থেকে একাধিক সাদা কাগজে স্বাক্ষর নেওয়া হয়। পাশাপাশি ডিবি কোনো সালিশ করেনি এবং এ ঘটনায় ডিবির কোনো সম্পৃক্ততা নেই বলে উল্লিখিত কাগজেও স্বাক্ষর নেয়। এরপর আমি নগদ ২০ হাজার টাকা দিয়ে ডিবির কাছ থেকে ছাড়া পাই। পরে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি হই।’
এ বিষয়ে পুলিশ সুপার বলেন, ’অভিযুক্ত ডিবির দুই সদস্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্তের দায়িত্ব অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) বিজয়া সেনকে দেওয়া হয়েছে। তিনি পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত শেষ করে প্রতিবেদন দাখিল করবেন।
জেলা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. নাজিম উদ্দিন আহমেদ বলেন, পুলিশ সুপারের কাছ থেকে লিখিত আদেশ পেয়ে অভিযুক্ত দু’জনকে তাৎক্ষণিকভাবে অনলাইনের মাধ্যমে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে।