:: নাগরিক নিউজ ডেস্ক ::
বান্দরবানের রোয়াংছড়িতে পাহাড়ি সশস্ত্র দুই পক্ষের গোলাগুলিতে আটজন নিহত হয়েছেন। গতকাল (৬ এপ্রিল) রাত ১০টার দিকে উপজেলার রুমা-রোয়াংছড়ির সড়কের খামতামপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
রোয়াংছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. খোরশেদ আলম চৌধুরী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, দুই পক্ষের মধ্যে গতকাল রাতে গোলাগুলির ঘটনায় আটজন নিহত হয়েছেন। মরদেহ উদ্ধারের জন্য ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনী ও পুলিশ সদস্যদের পাঠানো হয়েছে।
৮ মরদেহ উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রোয়াংছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল মান্নান।
ওসি বলেন, দুপুর সাড়ে ১২টায় স্থানীয়দের দেওয়া তথ্যে খামতাং পাড়ায় গিয়ে ৮ গুলিবিদ্ধ মরদেহ উদ্ধার করা হয়। মরদেহগুলো ময়নাতদন্তের জন্য বান্দরবান হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তবে কাদের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধ হয়েছে তা জানা যায়নি।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও স্থানীয়রা জানায়, রোয়াংছড়ি উপজেলার সদর ইউনিয়নের দুর্গম খানতাম পাড়া এলাকায় পাহাড়ে বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র সংগঠন কুকি চিন ন্যাশনাল আর্মির (কেএনএ) সঙ্গে সশস্ত্র সংগঠন ইউপিডিএফ গণতান্ত্রিক অস্ত্রধারীদের মধ্যে গোলাগুলি হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে এবং আজ সকালে কয়েকদফায় গোলাগুলির এ ঘটনা ঘটে। স্থানীয় বাসিন্দাররা পাহাড়ের ঢালে আট জনের মরদেহ পড়ে থাকতে দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দেয়।
নিহতদের মধ্যে সাত জন বম জনগোষ্ঠীর সদস্য বলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্বীকার করেছে বম জনগোষ্ঠীর সশস্ত্র সংগঠন কেএনএ। এঁরা হলেন ভানদু বম (৩৫), সাংখুম বম (৪৫), সানফির থাং বম (২২), বয়ে রেম বম (১৭), জাহিম বম (৪০), লাল লিয়ান নাং বম (৪৪) এবং লালঠা জার বম (২৭)।
নিহত ব্যক্তিরা রোয়াংছড়ি উপজেলার জুরভারাং পাড়া এবং পানখিয়াং পাড়ার বাসিন্দা। অপরজনের নাম পরিচয় জানা যায়নি। কেএনএর দাবি, সরকারের মদদে অস্ত্রধারী সংগঠনের সশস্ত্র বাহিনী সাধারণ বম জনগোষ্ঠীদের মানুষকে হত্যা করেছে। তবে ইউপিডিএফ গণতান্ত্রিক সংগঠনের জেলা সাধারণ সম্পাদক উবামং মারমা বলেন, ইউপিডিএফ গণতান্ত্রিক এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত নয়। তাদের হাতে ভারি কোনো অস্ত্রশস্ত্রও নেই।
এদিকে সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনায় রোয়াংছড়ি ও রুমা উপজেলার অভ্যন্তরীণ সড়কের খানতামপাড়ার খেয়াং জনগোষ্ঠীর ৯০টি পরিবারের ১৭৮ জন নারী-পুরুষ, শিশু ভয়ে আতঙ্কে পালিয়ে রোয়াংছড়ি সদরে সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে আশ্রয় নিয়েছে। আশ্রয় গ্রহণকারীদের নিরাপত্তায় সেনাবাহিনী এবং পুলিশ ঘটনাস্থলের আশপাশের এলাকাগুলোতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে। আশ্রয় নেওয়া পরিবারগুলোকে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে খাবার এবং পানি সরবরাহ করা হচ্ছে।