:: তাহসিন আহমেদ ::
১৯৯০ সালের ২৭ ডিসেম্বর স্বৈরাচার এরশাদবিরোধী আন্দোলনের সময় তৎকালীন সরকারের লেলিয়ে দেয়া ভাড়াটে সন্ত্রাসীদের গুলিতে ডা. শামসুল আলম খান মিলন মৃত্যুবরণ করেন।
বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশনের একটি সভায় যোগ দিতে রিকশাযোগে শাহবাগের পিজি হাসপাতালে যাচ্ছিলেন ডা. মিলন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে টিএসসি এলাকা অতিক্রমকালে এরশাদের ভাড়াটে সন্ত্রাসীরা তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি চালালে তাৎক্ষণিকভাবে তার মৃত্যু হয়।
ডাক্তার মিলন ঢাকা মেডিকেল কলেজের শিক্ষক ও বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশনের (বিএমএ) তৎকালীন যুগ্ম-মহাসচিব ছিলেন।
তৎকালীন সময়ে কারফিউ উপেক্ষা করে দেশব্যাপী রাজপথ-রেলপথ অবরোধ আন্দোলন চলাকালে বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশনের একটি সভায় যোগ দিতে রিকশাযোগে শাহবাগের পিজি হাসপাতালে যাচ্ছিলেন ডা. মিলন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে টিএসসি এলাকা অতিক্রমকালে এরশাদের ভাড়াটে সন্ত্রাসীরা তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি চালালে তাৎক্ষণিকভাবে তার মৃত্যু হয়।
শহীদ ডাক্তার মিলনকে মেডিক্যাল কলেজ চত্বরে দাফন করা হয়।
১৯৯১ সালে বাংলাদেশ গণতন্ত্রে ফেরার পর তৎকালীন বিএনপি সরকার ডা. শামসুল আলম খান মিলনের স্মরণে ২ টাকা মূল্যমানের ডাক টিকিট প্রকাশ করে। ১৯৯১ থেকে প্রতিবছরের ২৭ নভেম্বর রাজনৈতিক ও চিকিৎসক সংগঠনসমূহ বিভিন্ন কর্মসূচীর মধ্য দিয়ে ডা. মিলন দিবস পালন করে।
মিলনের স্মরণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গ্রন্থাগারের দক্ষিণ-পূর্ব কোণে নির্মিত হয়েছে “নিঝুম” নামে ম্যুরাল ও স্মৃতিফলক। তার স্মরণে ঢাকা মেডিকেল কলেজের ইন্টার্ন ডাক্তারদের হোস্টেলের নামকরণ করা হয় ‘শহীদ ডা. মিলন ইন্টার্নি হোস্টেল’ এবং ছাত্রীদের একটি হলের নাম রাখা হয় ‘ডা. মিলন হল’।
ডা. মিলনের ১৯৫৭ সালে ২১ আগস্ট ঢাকার হলি ফ্যামিলি হাসপাতালে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৭৩ সালে তিনি সরকারী বিজ্ঞান কলেজ থেকে শিল্পকলা (ইন্ডাস্ট্রিয়াল আর্টস) বিভাগে ২য় স্থান অধিকার করে এসএসসি পাস করেন। ১৯৭৫ সালে তিনি ঢাকার নটরডেম কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করেন। একই বছর তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজে ভর্তি হন। মিলনের ব্যাচ নম্বর ছিল কে-৩৪ । ১৯৮৩ সালে তিনি এমবিবিএস ডিগ্রী লাভ করে চিকিৎসক হিসেবে যোগদান করেন।