:: নাগরিক নিউজ ডেস্ক ::
গোল্ডেন ভিসা প্রক্রিয়ায় পরিবর্তন এনেছে আমিরাত। সংযুক্ত আরব আমিরাত ৬ মাসের ‘এন্ট্রি-পারমিটের’ ফি বৃদ্ধি করেছে। তবে এতে করে ১০ বছরের গোল্ডেন ভিসার প্রক্রিয়া সহজ হবে।
দেশটির ফেডারেল অথরিটি ফর আইডেনটিটি, সিটিজেনশিপ, কাস্টমস অ্যান্ড পোর্ট সিকিউরিটি (আইসিপি) এক বিবৃতিতে এসব তথ্য জানিয়েছে।
ছয় মাসের ভিসা পারমিটের জন্য এখন থেকে ১ হাজার ২৫০ দিরহাম দিতে হবে। ওই ফির সঙ্গে ইস্যু চার্জ হিসেবে ১ হাজার দিরহাম, আবেদনের জন্য ১০০ দিরহাম, স্মার্ট পরিষেবার জন্য ১০০ দিরহাম, ই-পরিষেবার জন্য ২৮ দিরহাম এবং ফেডারেল অথরিটি ফি ও আল খালিজের জন্য ২২ দিরহাম যোগ হবে। ফেডারেল অথরিটি ফর আইডেনটিটি, সিটিজেনশিপ, কাস্টমস অ্যান্ড পোর্ট সিকিউরিটি (আইসিপি) এ ফি নির্ধারণ করেছে।
দেশটিতে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে গোল্ডেন ভিসা দেওয়া হয়। এ ক্ষেত্রে মেধাবী, বিজ্ঞানী, বিশেষজ্ঞ, সরকারি বিনিয়োগে বিনিয়োগকারী, আবাসন খাতে বিনিয়োগকারী, উদ্যোক্তা, উচ্চমাধ্যমিকের শীর্ষস্থানীয় অর্জনকারী, সংযুক্ত আরব আমিরাতের স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক, দেশের বাইরের স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক এবং প্রতিরক্ষা বিভাগের শ্রমিকদের প্রাধান্য দেওয়া হয়।
যারা গোল্ডেন ভিসার জন্য আবেদন করবেন তাদের গুরুত্বপূর্ণ কিছু কাগজপত্র সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দিতে হয়। যার মধ্যে রয়েছে স্পন্সর করা ব্যক্তির পাসপোর্ট, রঙিন ছবি ও গোল্ডেন ভিসা পাওয়ার যোগ্যতা প্রমাণের নথি। কাগজপত্রে যদি কোনো সমস্যা থাকে, তাহলে ৩০ দিন পর স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিসার আবেদনটি বাতিল হয়ে যাবে।
গোল্ডেন ভিসার বিস্তারিত
গোল্ডেন ভিসা হচ্ছে একটি বিশেষ ধরনের রেসিডেন্স পারমিট ভিসা। কিছু দেশ তাদের অর্থনৈতিক উন্নয়নে বিনিয়োগ করতে ইচ্ছুক বিদেশিদের এ ভিসা অফার করে। এটির মূল উদ্দেশ্য হল কেউ দেশে বড় অঙ্কের অর্থ বিনিয়োগ করলে তাকে স্থায়ী বসবাসের অনুমতি দেয়া হবে। গোল্ডেন ভিসা প্রদানকারী দেশের সংখ্যা দিনদিন বাড়ছে এর মধ্যে পর্তুগাল, গ্রিস, কানাডা, স্পেন, হাংগেরি, মনটেনেগ্রো দেশ এ ভিসা প্রদান করে।
গোল্ডেন ভিসা পাওয়ার জন্য খুব বেশি সময় লাগে এমন নয়। এছাড়াও গোল্ডেন ভিসা পাওয়ার জন্য কোন তৃতীয় পক্ষেরও দরকার নেই। গোল্ডেন ভিসা পাওয়ার জন্য ওই দেশের দূতাবাসে যোগাযোগ করতে হবে। তাদের গোল্ডেন ভিসার শর্তগুলো সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করতে হবে। এরপর আপনি যদি তাদের সব শর্ত পূরণ করতে পারলেই গোল্ডেন ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন।
আর্থিক শর্ত
দেশ অনুযায়ী আর্থিক শর্তের অঙ্ক ভিন্ন ভিন্ন হতে পারে। এটি মূলত উক্ত দেশের জীবনমানের ওপর নির্ভর করে। তাই কোন দেশে অঙ্কের পরিমান বেশি হলে অবাক হওয়ার কিছু নেই। গোল্ডেন ভিসার খরচের ব্যাপারে আপনি ওই দেশের দূতাবাসের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন। আর্থিক শর্ত পূরণের প্রক্রিয়াও খুব সহজ।
এটির জন্য আবেদন করার তিনমাস আগে নির্দিষ্ট পরিমান অর্থ আপনার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ডিপোজিট করতে হবে। তিনমাস পর আপনি গোল্ডেন ভিসার আবেদন করলে ৬ মাসের জন্য গোল্ডেন ভিসা পেতে পারেন। সময়সীমা দেশ অনুযায়ী ভিন্ন হতে পারে।
রেসিডেন্সি পারমিট
গোল্ডেন ভিসায় আবেদন করার আগে আপনার বৈধ বাসস্থানের অনুমতি থাকতে হবে। এটি দির্ঘমেয়াদী বা স্টুডেন্ট রেসিডেন্স পারমিট হতে পারে। তবে যাদের বৈধ রেসিডেন্সি পারমিট নেই তারা প্রথমে এটির জন্য আবেদন করতে পারে বা একজন ভাল আইনজীবীর সাথে কথা বলতে পারেন। যাদের ইতিমধ্যেই বৈধ ভিসা আছে তারা রেসিডেন্সি পারমিট গোল্ডেন ভিসায় পরিবর্তন করতে পারেন। এটি পরিবর্তন করতে সর্বোচ্চ (১-৬) মাস লাগতে পারে।
ডকুমেন্টেশন
আবেদনের আগে আপনাকে ওই দেশে গোল্ডেন ভিসা প্রদান করে কিনা সে ব্যাপারে জানতে হবে। এরপর ইনভেস্ট অ্যাকাউন্ট খুলতে প্রয়োজনীয় সব কাগজ সাথে রাখতে হবে। তবে এটি কোন সমস্যা নয়। কারন অনেক দেশেই কিছু ব্যাংকের নাম সরবরাহ করে যারা নিজেরাই এটি করবে। তবে মাঝেমাঝে কিছু শর্ত পূরণ করতে হবে। যেমন: পর্তুগালে কমপক্ষে ৫০০,০০০ ইউরো দুই বছরের জন্য ইনভেস্ট করতে হবে।
গোল্ডেন ভিসার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজ ওই দেশের দূতাবাসের উপর নির্ভর করে। দূতাবাস থেকেই জানা যাবে কি কি কাগজ লাগবে গোল্ডেন ভিসায় আবেদন করতে।
ভাষা দক্ষতা
অনেক দেশেই গোল্ডেন ভিসার আবেদনের শর্ত হিসাবে নির্দিষ্ট ভাষায় দক্ষতা দেয়া হয়। তাই সতর্ক হোন! দূতাবাসে যোগাযোগ করলেই এ ব্যাপারে আপনি জানতে পারবেন। সাধারনত ইংরেজি বা পর্তুগিজ বা ফ্রেন্স ভাষায় দক্ষতা চাওয়া হয়। বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন ভাষায় দক্ষতা চাওয়া হয়।