:: ক্রীড়া প্রতিবেদক ::
আর্থিক কেলেঙ্কারির দায়ে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম সোহাগকে দুই বছরের জন্য নিষিদ্ধ করেছে ফিফা। পরবর্তী দুই বছর ফুটবল সংশ্লিষ্ট সব ধরনের কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকতে বলেছে সংস্থাটি।
বাফুফে সাধারণ সম্পাদক পড়েছেন আর্থিক জরিমানার মুখেও। ১০ হাজার সুইস ফ্রা বা ১১ লাখ ৯৪ হাজার টাকা জরিমানা দিতে হবে তাকে, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ১২ লাখ টাকা।
ফিফা জানিয়েছে, ফিফার থেকে বাফুফের জন্য ফান্ড পাওয়ার জন্য ফেডারেশন সেক্রেটারি জাল বা বানোয়াট নথি ব্যবহার করেছেন বলে ফিফার স্বাধীন বিচারিক কমিটি রায় দিয়েছে।
ফিফা তার বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রেক্ষিতে যত্নসহকারে তদন্ত করে নথি জালের প্রমাণ পেয়েছে এবং শুনানিতে ফিফার বিচারিক কমিটি সাজা নিশ্চিত করার বিষয়ে সন্তোষজনক উত্তর পেয়েছে।
তার বিরুদ্ধে ফিফার আচরণবিধির ১৩ ধারা (সাধারণ কর্তব্য), ১৫ ধারা (আনুগত্য) ও ২৪ ধারা (জালিয়াতি) ভঙ্গের প্রমাণ পেয়েছে। ফিফার পক্ষ থেকে তাদের সিদ্ধান্ত আবু নাঈন সোহাগকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
তার এই নিষেধাজ্ঞা ও জরিমানার মুখে পড়ার কারণ তিনটি। ফিফা তাদের বিবৃতিতে জানায়, বাফুফে সাধারণ সম্পাদক ফিফা কোড অব এথিকসের ১৩, ১৫ ও ২৪ নম্বর অনুচ্ছেদের নিয়ম ভঙ্গ করেছেন। যার প্রথমটি হচ্ছে দায়িত্বে অবহেলা, দ্বিতীয়টি সততা ও তৃতীয়টি মিথ্যা তথ্য দেওয়া। ফিফা তাদের তদন্তে এ তিনটি নিয়ম ভঙ্গের আলামত পায়। এরপর শুনানিও হয়েছে এ বিষয়ে। সবকিছু বিশ্লেষণের পরই তার ওপর নেমে এসেছে এ নিষেধাজ্ঞা।
ফিফা জানিয়েছে, নিষেধাজ্ঞার একটি কপি পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে বাফুফে সাধারণ সম্পাদককে। এরপর বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন ও এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশনকেও এ চিঠির কপি পাঠিয়ে দিয়েছে ফিফা। যদিও এ নিষেধাজ্ঞা নেমে আসার পর থেকে এখনও কোনো প্রতিক্রিয়াই জানায়নি বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন।
এর আগে আর্থিক অনিয়মে কারণ দর্শানোর নোটিশের জবাব দিতে সশরীরে ফিফার সদরদপ্তর জুরিখে যান আবু নাঈম সোহাগ। তবে নিজেকে রক্ষা করতে পারেননি তিনি। পরে জুরিখে বাফুফে অর্থ সহকারী অনুপম সরকার, ম্যানেজার কম্পিটিশনস জাবের বিন তাহের আনসারী ও হাসান মাহমুদ।
এ ব্যাপারে প্রতিক্রিয়া জানতে আবু নাঈম সোহাগ ও বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিনকে একাধিকবার ফোন করা হলেও রাত পৌনে ৯টা পর্যন্ত তাঁরা কেউই ফোন ধরেননি।
আবু নাঈম ম্যানেজার কম্পিটিশনস ( ক্লাব এন্ড অ্যাডমিনিস্ট্রেশন) হিসেবে ২০০৫ সালে বাফুফেতে যোগ দেন। ২০১১ সালের মে মাসে বাফুফের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক আল মুসাব্বির সাদী মারা গেলে বাফুফে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দেওয়া হয় তাঁকে। প্রায় দেড় বছর পর দুই বছরের জন্য সাধারণ সম্পাদক পদে নিয়োগ দেওয়া হয়। এর পর ধাপে ধাপে মেয়াদ বাড়ানো হয়। সর্বশেষ ২০২১ সালের জুনে আরও দুই বছরের জন্য দায়িত্ব পান।