:: বাগেরহাট প্রতিনিধি ::
কয়লা সংকটে বাগেরহাটের রামপালে কয়লাভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রে উৎপাদন আবারও বন্ধ রয়েছে। কয়লা আমদানি করতে না পারায় গত ২৩ এপ্রিল রাতে বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ রাখা হয়।
তবে কর্তৃপক্ষ বলছে, সপ্তাহ খানেকের মধ্যে আবারও উৎপাদন শুরু হবে।
এর আগে কয়লা সংকটের কারণে গত ১৪ জানুয়ারি বিদ্যুৎকেন্দ্রটিতে উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। কয়লা সরবরাহ স্বাভাবিক হওয়ার এক মাসের মাথায় আবার উৎপাদন শুরু হয়। পরে ১৫ এপ্রিল রাত থেকে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে মেগা প্রকল্পটির উৎপাদন বন্ধ রাখা হয়। তিন দিন বন্ধ থাকার পর ১৮ এপ্রিল আবার সচল হয়।
গত ৬ সেপ্টেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে রামপালে ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট মৈত্রী সুপার থার্মাল পাওয়ার প্রজেক্টের আওতায় ৬৬০ মেগাওয়াটের প্রথম ইউনিট থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হয়। প্রাথমিক পর্যায়ে কেন্দ্রটি চালু রাখতে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির আওতায় ৮০ লাখ টন কয়লা ক্রয়ের সিদ্ধান্ত হয়। এখন পর্যন্ত রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য ইন্দোনেশিয়া থেকে ২ লাখ ৬৭ হাজার ৭৫২ টন কয়লা আমদানি করা হয়েছে।
রামপাল তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ হওয়ার প্রভাব পড়েছে বিদ্যুৎ সরবরাহে। ফলে লোডশেডিং বেড়েছে। বিদ্যুৎ সরবরাহ প্রতিষ্ঠান ওজোপাডিকোর মোংলা অঞ্চলের আবাসিক প্রকৌশলী ফরহাদ হোসেন বলেন, উৎপাদনে আসার পর থেকে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে খুলনাসহ এ অঞ্চলে বিদ্যুৎ সরাবরাহ করা হতো। কিন্তু ঈদের পর থেকে হঠাৎ বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ থাকায় লোডশেডিং এবং বিদ্যুৎ বিভ্রাট বেড়েছে। দক্ষিণের জেলাগুলোতে পিক আওয়ারেও লোডশেডিং হচ্ছে। গ্রাহকরা অধৈর্য হচ্ছেন।
বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া পার্টনারশিপ পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেডের (বিআইএফপিসিএল) উপমহাব্যবস্থাপক আনোয়ারুল আজিম বলেন, কয়লা সংকটের কারণে ২৩ এপ্রিল রাত থেকে কেন্দ্রের উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। কয়লা আনার জন্য নানা প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়েছে। ৩ মের দিকে আবারও উৎপাদন শুরু করতে পারবেন বলে প্রত্যাশা করছেন।
দায়িত্বশীল একটি সুত্র বলেছে, মূলত ডলার সংকটের কারণে দীর্ঘদিন অপ্রয়োজনীয় ও বিলাসবহুল পণ্য আমদানিতে এলসি খোলার ব্যাপারে কড়া অবস্থানে ছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। সেই তালিকায় কয়লাও পড়ে যায়। এমন অবস্থায় কবে নাগাদ কয়লা আমদানি স্বাভাবিক হবে এবং এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি স্বাভাবিক উৎপাদনে ফিরবে তা নিয়ে আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল। এই পরিস্থিতিতে বিদ্যুৎ উৎপাদনের বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক রাষ্ট্রায়াত্ত ব্যাংকগুলোকে ১৭ জানুয়ারি কয়লা আমদানির জন্য এলসি খোলার অনুমতি দেয়।