:: ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব ::
ভবিষ্যতের কি হবে এটা কেউ জানে না। কিন্তু বর্তমান দেখে ভবিষ্যতে কি হবে সেইটা নিয়ে , অযাচিত প্রত্যাশা তৈরি করা করাটা নিঃসন্দেহে ক্ষতিকর। ফয়েজ ভাইকে ধন্যবাদ এই মিথ্যা প্রত্যাশা গুলোর বেলুনে সুই ঢুকিয়ে দেওয়ার জন্য।
উনার লেখার কিছু কিছু বক্তব্যের সাথে বিরোধ রয়েছে। কিন্তু মূল যে থিমটা সেটার সাথে আমি শতভাগ একমত।
সম্ভাব্য বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় গুজব রটানোর প্রেক্ষিতে সুস্পষ্ট ভাষায় কিছু কথা বলা প্রয়োজন। নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় জালিয়াতির সাথে সংশ্লিষ্ট যে কোনো পক্ষকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নিয়মিত বিরতিতে টার্গেটেড স্যাংশন দিবে। সার্বিক অর্থে ‘ট্রেড ব্যান বা বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা’ দিবে একথা কেউ বলেনি! সুতরাং কলিমুল্লাহ সাহেবদের তথ্য প্রচার করে আন্দোলনকারী পক্ষগুলো পরে যাতে হাসির পাত্র না হয়!
একইভাবে ইউরোপীয় ইউনিয়নও বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞার কথা বলেনি। বাস্তবতা হচ্ছে, এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন পর্যন্ত মধ্যবর্তী সময়ে ‘এভরিথিং বাট আর্মস, শুল্কমুক্ত ইবিএ সুবিধা বন্ধ হয়ে ‘জিএসপি প্লাস’ উত্তীর্ণ হবার পথে ট্রানজিশন হিসেবে ‘ইন্টারমিডিয়েট জিএসপি+’ সুবিধা আসার কথা। ইইউ পার্লামেন্টের প্রস্তাবে মানবাধিকারসহ বাংলাদেশের গণতন্ত্র ও নির্বাচন প্রসঙ্গ যেমন এসেছে, তেমনি বাংলাদেশের জন্য ইইউর অবাধ বাজার সুবিধা ‘এভরিথিং বাট আর্মস (ইবিএ)’ অব্যাহত রাখা যৌক্তিক কি না, সেই প্রশ্নও স্পষ্টভাবে উঠেছে।
ইবিএর অধীনে বাণিজ্যের যে শুল্কসুবিধা দেয়া হয়, তা শর্তযুক্ত। ইইউর ইবিএ সুবিধার সঙ্গে শ্রমিকের অধিকার, নারীর অধিকার, পরিবেশগত দূষণ-সম্পর্কিত বিষয়ও রয়েছে। মূলত যেসব দেশ মানবাধিকার, সুশাসন, দুর্নীতি দমন, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, নাগরিক অধিকার ইত্যাদির প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে এবং আন্তর্জাতিক শর্ত মেনে চলে, তাদেরই এই সুবিধা দেয়া হয়। অর্থাৎ গুম খুন রাজনৈতিক হয়রানি, মানবাধিকার কর্মীদের বিচারিক হয়রানিসহ গণতান্ত্রিক অবনমনের প্রেক্ষিতে ইইউ’তে বাংলাদেশের শুল্কমুক্ত বাজার সুবিধা সাময়িক স্থগিত হতে পারে, কেননা ইইউ জিএসপি+ এর সাথে গণতন্ত্র মানবাধিকার মতপ্রকাশের স্বাধীনতা এবং শ্রমিক অধিকারকে আরো কঠোরভাবে টাইড আপ করতে চায়।
trade.ec.europa.eu সাইটে পরিষ্কার বলা আছে, ইইউ’র জেনারেল স্কিম অফ প্রেফারেন্স প্লাস (GSP+) উন্নয়নশীল দেশগুলিকে টেকসই উন্নয়ন এবং সুশাসনের জন্য বিশেষ প্রণোদনা দেয়। কিন্তু যোগ্য দেশগুলিকে ২৭ টি আন্তর্জাতিক কনভেনশন বাস্তবায়ন করতে হবে, নিম্নোক্ত বিভাগে- ১. মানবাধিকার, ২. শ্রম অধিকার, ৩. পরিবেশ, ৪. সুশাসন। বিনিময়ে, ইইউ তাদের রপ্তানির শুল্ক লাইনের দুই তৃতীয়াংশেরও বেশি আমদানি শুল্ক কমিয়ে কিংবা শূন্য করে দিবে।
সরকারের ন্যাক্কারজনক মানবাধিকার রেকর্ডে এই ২৭টি কনভেনশন বাস্তবায়ন অগণতান্ত্রিক ও জবাবদিহিহীন পরিবেশে কঠিন হবে।
অর্থাৎ ইউরোপীয় ইউনিয়ন বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা দিবে না, GSP+ উঠিয়ে দিতে পারে, এতে ১৭% শুল্ক দিয়ে বাংলাদেশকে পণ্য বেচতে হবে! অর্থনীতি ও কর্মসংস্থান ভুগবে, বার্তা এটাই । এই পরিমাণ শুল্ক বাংলাদেশকে মার্কিন বাজারে প্রবেশ করতে এখনই দিতে হচ্ছে, ২০১৩ সালে রানা প্লাজা ধ্বসের পরে মার্কিন বাজারে বাংলাদেশের অগ্রাধিকার প্রবেশাধিকার বন্ধ করা হয়। ইউরোপীয় ইউনিয়ন বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পের একক বৃহত্তম বাজার বলে, প্রায় ৩৫ বিলিয়ন ডলারের এই একক বৃহত্তম রপ্তানি বাজারে শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার সুবিধা বন্ধ হলে বাংলাদেশের তৈরি পোশাকশিল্পে রক্তক্ষরণ শুরু হবে।
মনে রাখতে হবে, এটি অবশ্যই বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা নয়। মানবাধিকার পরিস্থিতির অবনতির কারণে ২০১০ সালে শ্রীলঙ্কা জিএসপি+ মর্যাদা হারিয়েছে, ২০১৭ সালে ফিরে পেয়েছে, তবে ইউরোপ শ্রীলঙ্কার ওপর বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা দেয়নি।
কেউ কেউ ইরান বা উত্তর কোরিয়া স্টাইলে স্যাংশন আসার অবাস্তব আশা করছেন! বাংলাদেশ কোন দেশে বোমা ফেলেনি, কোন দেশের নিরাপত্তা হুমকি হয়নি, বরং ভারতের নিরাপত্তা সমস্যার সমাধান করেছে। হ্যাঁ দেশের অভ্যন্তরে গুম, খুন, রাজনৈতিক হয়রানির জন্য, নির্বাচনী জালিয়াতির জন্য টার্গেটেড ব্যক্তির উপর ভিসা স্যাংশন বা ম্যাগনেটোস্কি আইনে নিষেধাজ্ঞা আসবে, এটাকে বিরোধীরা কাজে লাগাতে না পারলে তাদেরকে পরাজিত হতে হবে আরেক দফা।
অসত্য, মিথ্যা কিংবা আংশিক তথ্য দিয়ে, কিংবা গুজব বিশ্বাস করে আপনি অগণতান্ত্রিক কর্তৃত্ববাদী সরকারের মোকাবেলা করতে পারবেন না, শুধু শুধু মানুষকে গাছে তোলার মিথ্যা হাইপ তৈরি করার অর্জন শূণ্য। বরং এর মাধ্যমে আন্দোলনকে বিদেশ নির্ভর করে ফেলার চক্রান্ত আছে।
অতীতে কেউ কেউ ‘লাখে কোটিতে মানুষ লাঠি হাতে মিছিলে যাবে’, ‘১২০ দিনে সরকার পড়ে যাবে’, ফরেন কারেন্সি রিজার্ভ ৪.২ বিলিয়ন ডলার হয়ে গেছে’- এরকম মিথ্যা তথ্য প্রচার করে প্রতিবার আন্দোলনের ঠিক আগ মুহূর্তে নেতাকর্মীদের বিভ্রান্ত করেছেন। তারা বার্তা দিতে চায় সরকার তো পড়েই গেছে, খামোখা লাগাতার আন্দোলনের দরকার কি!
বাস্তবতা হচ্ছে, বিএনপি-গণতন্ত্র মঞ্চকে আমেরিকা ক্ষমতায় বসাবে না, লাগাতার গণ আন্দোলন ছাড়া তাদের কোনো বিকল্প নেই। চক্রান্তকারীদের ‘গাছে তুলে আছাড় মারার’ প্রকল্প থেকে বিরোধী নেতা কর্মীদের দূরে থাকতে হবে!
গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের বিরোধীদের কয়েকটি ব্রেক থ্রু দিয়েছে। এর বেশি আশা করা অযৌক্তিক এবং আত্মঘাতীও। বাংলাদেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের দায় ও দায়িত্ব এদেশের মানুষের ও রাজনৈতিক দলগুলোর, যুক্তরাষ্ট্রের নয়!
গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে যুক্তরাষ্ট্র সাপোর্টিভ রোল প্লে করছে, মেইন রোল নয়। বিএনপি যাতে এই সত্য ভুলে না যায়! আন্দোলনকে বিদেশ নির্ভর করার কোন বার্তা যুক্তরাষ্ট্র কিংবা ইইউ কখনোই দেয়নি। কূটনৈতিক বার্তার ‘বি’টুইন দ্য লাইনের’ অর্থ বিরোধীরা যাতে ভুল না বুঝে!
আরেকটি বিষয় স্পষ্ট করা দরকার, সরকার মনে করে ঘোষিত নিষেধাজ্ঞার পেছনে বিএনপির লবিং এর অবদান আছে, আবার কিছু বিএনপি নেতা সেসবকে নিজেদের কাজ দেখিয়ে ক্রেডিট নিতে তৎপর। বাস্তবতা হচ্ছে, যা নিষেধাজ্ঞা এসেছে তাতে বিএনপি নেতাদের অবদান নাই, এসব হচ্ছে পশ্চিমের নিজস্ব ভূ-রাজনৈতিক স্বার্থে এবং গুম খুন রাজনৈতিক নির্যাতন প্রশ্নে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থার অতি শক্ত অবস্থানের কারণে।
বিএনপি বিগত কয়েক বছরে বিভিন্ন সমাবেশে ভোটাধিকারের ব্যাপারে যে বার্তা দিয়েছে, সেসব যৌক্তিক ছিলো, পশ্চিমাদের বিভিন্ন পদক্ষেপ অন্তত সেটিই জানান দেয়। কিন্ত এখন তাদের ভোটাধিকারকে সেন্ট্রালে রেখে মানুষের পালস বুঝে সেভাবে কাজ করতে হবে, দুর্ভোগের বিষয়গুলো নিয়ে স্পষ্টভাবে কথা বলতে হবে, সঠিক তথ্য দিয়ে অর্থনীতির দুরবস্থার কথা জনগণকে জানাতে হবে এবং একই সাথে পালাবদল ঘটলে তাদের সম্ভাব্য পদক্ষেপ সম্পর্কে বিশ্বাসযোগ্য বয়ান প্রস্তুত করে সেটা সমাবেশে ডেলিভার করতে হবে। নতুবা মানুষকে কানেক্ট করা যাবে না।
সরকার যদি এই দুঃসময় কাটিয়ে উঠে, অর্থনীতি ভালো হয়ে গেলে বিএনপিকে সরকার পতনে আরেকটা অর্থনৈতিক ধ্বস পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে, সাধারণত দুটা বড় সংকটের মাঝে কয়েক বছর গ্যাপ থাকে। অপ-রাজনীতির নাবিককে সংকটকালেই পরিবর্তন করতে হয়! সরকার পরিবর্তন হলেই বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি হবে, অন্যথায় না! সুতরাং গণতন্ত্র ও মানবাধিকার পুনরুদ্ধারে গণআন্দোলনের বিকল্প নেই।
। দুই ।
ভোটাধিকারের একদফায় বিএনপি-গণতন্ত্র মঞ্চ দেশের মানুষকে ব্যাপকভাবে সংযুক্ত করেছে সফলভাবে। তথাপি শুধু ভোটাধিকার দিয়ে ক্ষুধার্থ মানুষের পেট ভরবে না, অভাবী আর্থিক টানাপোড়েনে থাকা কৃষক শ্রমিক নিম্ন মধ্যবিত্তের দিন শুধু ভোট দিয়ে চলবে না! মানুষ রাজনীতির অতীত দেখেছে যা খুব সুখকর ছিল বলা যাবে না! রাজনীতি দিয়ে মানুষের যাপিত জীবনের সংকট সমাধানের সূত্র না দিলে সে রাজনীতি মানুষকে টানবে না। ক্ষমতায় গেলে কি করবেন, কতটা আন্তরিকতা দেখবেন-সেটা নিয়ে ‘মাস পিপল কমিউনিকেশন’ আবশ্যিক।
আওয়ামী লীগ ১০ টাকার চাল, ঘরে ঘরে চাকরি, গৃহহীনে ঘরের মত প্রতিশ্রুতি দিয়ে কোটি মানুষকে কানেক্ট করেছেন। এসব মিথ্যা আশ্বাস ছিল! কিন্তু টিসিবির ট্রাকে দুই চার ঘন্টা অপেক্ষা করে ১০ টাকার চাল কিন্তু বহু হয়রানি ও সম্মানহানির পরে পাওয়া গেছে! আওয়ামী লীগের নেতাদের ঘরে ঘরে চাকরি, ব্যবসা, টেন্ডার হয়েছে, আবাসনের ঘর ভেঙে গেলেও প্রকল্পের উদ্যোগ ছিল। এসবের বিপরীতে আরো বোধগম্য আশ্বাস নিয়ে আসতে হবে বিরোধীদের এবং প্রতিশ্রুতিকে জনতার মাঝে ‘কমিনিউকেট’ করতে হবে! মানুষ সব বুঝে, তারা নির্বোধ নয়। বিএনপির ভিশন-২০৩০ এবং ৩১ দফা সংস্কার নিয়ে সমাবেশগুলোতে বিস্তারিত আলাপ থাকে না। অধিকাংশ মানুষ জানে না, বিএনপি আসলে তাদের জন্য আসলে কী করবে!
বিরোধীদের মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিতে হবে না, কিন্তু খাদ্যের দাম কমাতে, প্রকল্পের ব্যয় কমাতে, ব্যাংক লুট থামাতে, কালোবাজারি সিন্ডিকেট ভাঙতে, বেপরোয়া দুর্নীতি থামাতে বিরোধীরা কী করবেন- তা মানুষ নেতাদের মুখে শুনতে চায়!
তারুণ্যের সমাবেশে চাকরি ও কর্ম তৈরির পথ দেখাতে না পারলে, কৃষকের সমাবেশে মজুতদারি বাজারজাতকরণের সংকট সার ও সেচের সংকট সমাধানের আশা দেখতে না পারলে, শ্রমিকের সমাবেশে মজুরি কাঠামো এবং শ্রম অধিকারের আশ্বাস না দিতে পারলে বিরোধী রাজনীতি আসলে অন্তঃসার শুন্য হয়ে পড়ে! এসব মানুষ থেকে ব্যাপক বিচ্ছিন্নতার ইঙ্গিত দেয়! বিএনপি নেতাকর্মীরা ছাড়া সাধারণ জনতার রাস্তায় না নামার অর্থ হচ্ছে, বিএনপি আন্দোলনে মানুষকে সম্পৃক্ত করতে না পারা! মানুষ যদি না জানে, বিএনপি আসলে তাদের জন্য কি করবে, তাহলে আন্দোলনে মানুষ সম্পৃক্ত হবে না, শুধু ভোটাধিকার দিয়ে ক্ষুধার্থ মানুষের পেট ভরবে না ।
বিএনপি বিগত কয়েক বছরে বিভিন্ন সমাবেশে ভোটাধিকারের ব্যাপারে যে বার্তা দিয়েছে, সেসব যৌক্তিক ছিলো, পশ্চিমাদের বিভিন্ন পদক্ষেপ অন্তত সেটিই জানান দেয়। কিন্ত এখন তাদের ভোটাধিকারকে সেন্ট্রালে রেখে মানুষের পালস বুঝে সেভাবে কাজ করতে হবে, দুর্ভোগের বিষয়গুলো নিয়ে স্পষ্টভাবে কথা বলতে হবে, সঠিক তথ্য দিয়ে অর্থনীতির দুরবস্থার কথা জনগণকে জানাতে হবে এবং একই সাথে পালাবদল ঘটলে তাদের সম্ভাব্য পদক্ষেপ সম্পর্কে বিশ্বাসযোগ্য বয়ান প্রস্তুত করে সেটা সমাবেশে ডেলিভার করতে হবে। নতুবা মানুষকে কানেক্ট করা যাবে না।
সরকার যদি এই দুঃসময় কাটিয়ে উঠে, অর্থনীতি ভালো হয়ে গেলে বিএনপিকে সরকার পতনে আরেকটা অর্থনৈতিক ধ্বস পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে, সাধারণত দুটা বড় সংকটের মাঝে কয়েক বছর গ্যাপ থাকে। অপরাজনীতির নাবিককে সংকটকালেই পরিবর্তন করতে হয়!
সরকার পরিবর্তন হলেই বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি হবে, অন্যথায় না! সুতরাং গণতন্ত্র ও মানবাধিকার পুনরুদ্ধারে গণআন্দোলনের বিকল্প নেই।
ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব: টেকসই উন্নয়নবিষয়ক লেখক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক