:: ফয়েজ আহমদ তৈয়ব ::
মিয়ানমারের দিক থেকে নিরাপত্তা হুমকি আসছে বাংলাদেশে।
১। ভারত রাখাইন রাজ্যের অর্থনৈতিক করিডোরে যে বিনিয়োগ করেছে সেটা হুমকিতে।
২। জান্তার অবস্থা বেগতিক দেখে চীন দুই পক্ষের সাথেই আতত করছে। দিনশেষে চীন নিজের পশ্চাদ্দেশ রক্ষা করতে পারলেও ভারত সমস্যায় পড়তে যাচ্ছে। কারণ জান্তার পক্ষে রাখাইন রাজ্য রাখা টাফ হয়ে যাচ্ছে।
৩। জান্তার সেনারা কেউ কেউ বিদ্রোহীদের কাছে আত্মসমর্পণ করছে কিংবা পালিয়ে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে আশ্রয় চাচ্ছে। থাইল্যান্ডে ঢুকছে এবং বাংলাদেশেও। জান্তা নিউ রিক্রুট করতে ব্যর্থ হচ্ছে এবং ক্রমাগত অঞ্চল হারাচ্ছে।
৪। বাংলাদেশের সমস্যা দুই ধরনের-
ক। সীমান্তবর্তী গ্রামগুলোতে যুদ্ধের গোলা এসে পড়ছে। মানুষ ভয়ে এলাকা ছড়ছে। যুদ্ধ বাংলাদেশের ভিতরে ঢুকে গেছে, ইতিমধ্যেই মানুষ মারা গেছে, বাড়িঘরে গোলা এসে আগুনে পুড়ে দিচ্ছে। সীমান্তের চাষিদের কপালে চিন্তার ভাঁজ, ফসলভর্তি ক্ষেত ফেলে বাড়িঘর ছাড়ছে তাঁরা।
খ। জান্তার সেনারা পালিয়ে আশ্রয় চাচ্ছে। (মিয়ানমার বর্ডার গার্ডের মোট ৩২৭ সদস্য ৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দেশে ঢুকেছেন।) এখানে ভারত তাদেরকে জান্তার কাছে ফিরিয়ে দিতে আবদার করে থাকতে পারে।
গুরুত্বপূর্ণ সংবাদ হচ্ছে, গত শনিবার ঢাকায় অজিত দোভালসহ অন্তত ২ শীর্ষ ভারতীয় নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ ঢাকা এসেছেন। কেন এসেছেন?
এমতাবস্থায় ভারত একা, অথবা ভারত-চীন উভয়ে মিলে বাংলাদেশকে মিয়ানমারের জান্তাকে গোপনে সামরিক সহায়তা ও অস্ত্র সরবরাহ করার চাপ দিয়ে থাকতে পারে। পালিয়ে আসা সৈন্যদের ফেরত দিতে বলতে পারে। (Ajit Doval completes brief visit to Bangladesh, Indian nat’l security chief visits Bangladesh, New Age BD, Dhaka Feb 05,2024)
৫। বাংলাদেশ নৌবাহিনীর (২য় সোর্স থেকে যাচাই করা সম্ভব হয়নি) একটি সোর্স বলছে, মিয়ানমার নৌবাহিনীর দুটি জাহাজ সেন্ট মার্টিনের অদূরে মোতায়েন করা আছে, যা অস্বাভাবিক। সাধারণত এধরনের জাহাজ পেট্রোল করে চলে যায়। যাদের স্যাটেলাইট ইমেজে/জিয়াইএস এক্সেস আছে, বিষয়টা যাচাই করতে পারেন।
কাকতালীয় ভাবেই পরিবেশ ইস্যু তুলে সরকার সেন্ট মার্টিনে পর্যটক নিষিদ্ধ এবং স্থানীয়দের ইভাকুয়েশনের চিন্তাও করছে।
এমতাবস্থায় আজ প্রধানমন্ত্রী সশস্ত্র বাহিনী ও বিজিবিকে ধৈর্য ধারণ করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
এর অর্থ কী? সামথিং সিরিয়াস ঘটছে কিংবা ঘটতে যাচ্ছে? এই যে বাংলাদেশ গত ১৫ বছর চীন-ভারতের সাথে দহরম-মহরম করলো, মিয়ানমার ও রোহিঙ্গা প্রশ্নে কোন আপস হল না, উলটো যুদ্ধ গায়ে আনল।
বন্ধুর চাপে জান্তার পালিয়ে আসা সদস্যদের গোপনে বা প্রকাশ্যে ফেরত দিলে আরাকান আর্মি কি বাংলাদেশেই অ্যাটাক করে বসবে?
১৫ বছরে মিয়ানমার প্রশ্নে বাংলাদেশের অর্জন শূন্য নয় বরং ভয়ংকর নেগেটিভ। মিলিয়ন শরাণার্থী গিলে বসে আছে। বাংলাদেশের উচিত মিয়ানমারের হারু পার্টি ভারতের সাথে ঘুটু না করে দেশের স্টেইক হোল্ডারদের সাথে দ্রুত বসা। দেশের স্বার্থ ইন স্টেইক!
লেখক: টেকসই উন্নয়নবিষয়ক লেখক ও গবেষক