ঢাবিতে হামাস প্রধান ইয়াহিয়া সিনওয়ারের গায়েবানা জানাজা

■ ঢাবি প্রতিনিধি ■

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ভিসি চত্বরে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের প্রধান ইয়াহিয়া সিনওয়ারের গায়েবানা জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) রাত ১০টায় আজাদ ফিলিস্তিনের ব্যানারে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে এ গায়েবানা জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। 

গায়েবানা জানাজার আগে বক্তব্য রাখেন ঢাবির ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম (এমআইএস) বিভাগের শিক্ষক আরিফুল ইসলাম অপু ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী ইমরান।

আরিফুল ইসলাম অপু বলেন, ‘সাহাবি হজরত ওসমান (রা.) হত্যার বিষয় শোনার পর রাসুল সা. এর হাতে সবাই যেরকম বাইয়াত (শপথ) নিয়েছে তেমনি আমাদেরও বাইয়াত নিতে হবে। ইয়াহিয়া সিনওয়ার আমাদের নেতা। আল্লাহ তার শাহাদাত কবুল করুক।’ 

গায়েবানা জানাজা নামাজের ইমামতি করেন আরবি বিভাগের শিক্ষার্থী আশিক বিল্লাহ। নামাজ শেষে দোয়া-মোনাজাত পরিচালনা করেন তিনি। মোনাজাত শেষে মিছিল নিয়ে রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এসে শেষ হয়। এ সময় তারা ‘ফ্রম দ্যা রিভার টু দ্যা সি, প্যালেস্টাইন উইল বি ফ্রি’, ‘অকিউপেশন অকিউপেশন, নো মোর নো মোর’, ‘আমাদের নেতা ইয়াহিয়া সিনওয়ার, লাল সালাম লাল সালাম’ ইত্যাদি স্লোগান দেন। 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী ইমরান হোসাইন বলেন, ‘ফিলিস্তিনের আজাদী আন্দোলন এখন আর ফিলিস্তিনের একার না, তা সারা বিশ্বের আন্দোলনে রূপ নিয়েছে। ফিলিস্তিনের আজাদী আন্দোলনে বাংলাদেশের ছাত্র-জনতা সবসময় সাড়া দিবে। ফিলিস্তিনের জনগণের মুক্তির সংগ্রাম নির্দিষ্ট কোনো ভূখণ্ডের সংগ্রাম নয়, এটা আমাদেরও সংগ্রাম। আমরা এখান থেকে জানাতে চাই, আমরা ফিলিস্তিনের পাশে রয়েছি।’ 

বিক্ষোভ মিছিলে ‘ইসরায়েল নিপাত যাক, ফিলিস্তিন মুক্তি পাক, ওয়ান টু থ্রি ফোর, জায়োনিজম নো মোর, ইউনাইটেড ন্যাশন, শেম শেম শেম শেম’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে দেখা যায়।

বিক্ষোভ সমাবেশে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতির বিভাগের শিক্ষার্থী আরাফাত হোসেন ভুঁইয়া বলেন, ইসরায়েলের ইহুদি এবং তাদের মদদপুষ্টরা আজকে যদি তোমরা মনে কর ইয়াহিয়া সিনওয়ারকে বেহেশতে পাঠিয়ে তোমরা বিজয় অর্জন করছে। তবে শুনে রাখ আমাদের গন্তব্য তো বেহেশতই ছিল। আমরা বিজয় অর্জন করেছি। একজন ইয়াহিয়া সিনওয়ারকে শহীদ করে  হামাসকে দমিয়ে রাখা যাবে না। একজন ইয়াহিয়া সিনিয়র শহীদ হয়েছে লক্ষ লক্ষ ইয়াহিয়া সিনওয়ার তৈরি হয়েছে।

আজাদী ফিলিস্তিন -এর আহ্বায়ক সাজ্জাদ হোসেন বলেন, প্রথমে শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি জুলাই বিপ্লবে সকল শহীদদের। জুলাই বিপ্লবের শহীদরা আমাদের শিখিয়েছেন কীভাবে জুলুমের প্রতিবাদ করতে হয়। তাদেরই অনুরূপ শহীদ সিনওয়ার। শহীদ আবরারের সাথে দাঁড়িয়ে আছেন শহীদ সিনওয়ার, শহীদ আবু সাঈদের সাথে দাঁড়িয়ে আছেন ইয়াহিয়া সিনওয়ার। 

‘শহীদ সিনওয়ার আমাদের শিখিয়েছেন কীভাবে মৃত্যুকে শৈল্পিক রূপ দিতে হয়। ইসরায়েলের সন্ত্রাসীরা তোমরা যদি মনে কর ইয়াহিয়া সিনওয়ারকে হত্যার মাধ্যমে ফিলিস্তিনিকে দমিয়ে রাখবে তাহলে তোমরা ভুল। যেভাবে আবরারকে শহীদ করার পর আবু সাঈদরা জেগে উঠেছে। আবু সাঈদকে শহীদ করার পর মুগ্ধরা জেগে উঠেছে। সেভাবে ইসমাইল হানিয়াকে শহীদ করার পর ইয়াহিয়া সিনওয়ার জেগে উঠেছে, ইয়াহিয়া সিনওয়ারকে শহীদ করার পর লক্ষ লক্ষ ইয়াহিয়া সিনওয়ার তৈরি হয়েছে।’

শেয়ার করতে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *