■ নাগরিক প্রতিবেদক ■
অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা বা সরকারের অন্য যে কোনো পদে থেকে কেউ আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার (ইসি) মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার।
ইসি আনোয়ারুল আরও বলেন, নির্বাচনি আচরণবিধি অনুযায়ী সরকারের পদে থেকে নির্বাচনি প্রচারে অংশ নেওয়া যাবে না। প্রচার করা না গেলে তো প্রার্থীও হতে পারবেন না। কাজেই সরকারের কোনো পদে থেকে কেউ প্রার্থী হতে পারবেন না।
তিনি বলেন, সরকারের উপদেষ্টা বা অন্য যে কোনো পদে থেকে কেউ আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না৷ তারা নিজেরা যেমন নির্বাচনের প্রার্থী হতে পারবেন না, এমনকি কোনো প্রার্থীর পক্ষে ভোটের প্রচারেও অংশ নিতে পারবেন না।
মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) নির্বাচন কমিশনার আনোয়ারুল ইসলাম সরকার সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
নির্বাচনি প্রস্তুতি বিষয়ে ইসি আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, আমাদের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন। তফসিল ঘোষণা এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। তফসিল ঘোষণার জন্য যে প্রস্তুতি প্রয়োজন তা সম্পন্ন করেছে ইসি। আসনবিন্যাস, আইন অনুযাযী রিটার্নিং অফিসার, সহকারী রিটার্নিং অফিসার যারা থাকবেন তাদেন প্রজ্ঞাপন, বিভিন্ন বিষয়ে ২০টির মতো পরিপত্র জারি হবে।
তিনি বলেন, মোবাইল কোর্ট, ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ, ইলেকটোরাল ইনকোয়ারি কমিটি নিয়োগ, বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ, মনিটরিং সেল গঠন, আইনশৃঙ্খলার সেল গঠন—এই ফরমেটগুলো রেডি রয়েছে। তফসিল ঘোষণার পরপরই সেগুলো ধারাবাহিকভাবে আমরা জারি করবো।
এদিকে, নির্বাচন কমিশনার আব্দুর রাহমানেল মাছউদ বলেন, তফসিল ঘোষণার আগে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ইসির দায়িত্ব নয়। আনুষ্ঠানিকভাবে সবার জন্য সমান সুযোগ সৃষ্টির দায়িত্ব আসবে তফসিল ঘোষণার পর। চূড়ান্ত পোস্টাল ব্যালটে নিষিদ্ধ বা কার্যক্রম স্থগিত কোনো দলের প্রতীক থাকবে না।
তিনি বলেন, তফসিল ঘোষণায় সিইসির ভাষণের সবকিছু চূড়ান্ত। বুধবার (১০ ডিসেম্বর) রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে সন্ধ্যায় অথবা বৃহস্পতিবার তফসিল ঘোষণা করা হবে। এতে রাজনৈতিক দলসহ সবার সহযোগিতার বিষয়ে বিশেষভাবে গুরুত্ব দেওয়া হবে। আগামীকাল বুধবার দুপুরে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যাবে নির্বাচন কমিশন।
তফসিলের পর অনুমতি ছাড়া সমাবেশ-আন্দোলন থেকে বিরত থাকার আহ্বান
আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে। তফসিল ঘোষণার পর সব ধরনের বেআইনি ও অনুমোদনহীন জনসমাবেশ, আন্দোলন পরিচালনা থেকে বিরত থাকতে সবাইকে আহ্বান জানাচ্ছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।
মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) দুপুরে প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়েছে।
আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে অনুষ্ঠাতব্য ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচন যেন অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, গ্রহণযোগ্য ও উৎসবমুখর হয়- বর্তমানে এটিই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মূল লক্ষ্য। একটি সুন্দর নির্বাচন আয়োজনের জন্য যা যা করণীয় সরকার সেইদিকেই মনোনিবেশ করছে।
নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার পর সশস্ত্র বাহিনীসহ দেশের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত সব বাহিনী নির্বাচনী পরিবেশ যাতে নিশ্চিত হয় সে লক্ষ্যে কাজ করবে। দেশের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় সশস্ত্র বাহিনীসহ অন্যান্য বাহিনীর প্রায় নয় লাখ সদস্য নিয়োজিত থাকবে, যা এ যাবৎকালের মধ্যে সর্বোচ্চ। সুষ্ঠু নির্বাচন পরিচালনার জন্য ইতোমধ্যেই রেকর্ডসংখ্যক দেড় লাখ পুলিশ সদস্যকে নির্বাচনী প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। তফসিল ঘোষণার পর থেকে নির্বাচন পর্যন্ত যেকোনো ধরনের বেআইনি ও অনুমোদনহীন জনসমাবেশ, জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করে এমন আন্দোলন কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হবে। যারা বেআইনিভাবে সভা-সমাবেশে অংশ নেবেন তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, ‘আমরা জানি, অনেকেরই ন্যায্য দাবি-দাওয়া রয়েছে। গত দেড় বছরে দুই হাজারের বেশি আন্দোলন-বিক্ষোভ সংগঠিত করে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আন্দোলনকারীরা দাবি-দাওয়া উপস্থাপন করেছেন। সরকার ন্যায্য দাবিতে সবসময়ই সাড়া দিয়েছে, আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনা করে সমাধানে পৌঁছাতে চেষ্টা করেছে।
