■ নাগরিক প্রতিবেদন ■
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সহ-সমন্বয়ক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী খালেদ হাসান নিখোঁজ হয়েছেন। শনিবার (২১ ডিসেম্বর) বিকেল থেকে তার কোনো সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে না।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক নুসরাত তাবাসসুম গণমাধ্যমকে এ তথ্য দিয়েছেন। রোববার নিজের ফেসবুক আইডিতে দেওয়া এক পোস্টে তিনি জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সহ-সমন্বয়ক খালেদ হাসানকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
তিনি আরও জানান, আন্দোলনে সক্রিয় থাকার কারণে নানা হুমকি ছিল খালেদের জীবনে।
নুসরাত তার পোস্টে সবাইকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে খালেদের খোঁজ চালানোর অনুরোধ করেন এবং কোনো তথ্য জানলে তা জানাতে বলেছেন।
এদিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ময়মনসিংহে দায়িত্ব পালন করা এক সমন্বয়ককে সম্প্রতি মুঠোফোনে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় গত বৃহস্পতিবার নগরের কোতোয়ালি মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরিও (জিডি) করেছেন তিনি।
হুমকি পাওয়া সমন্বয়কের নাম আশিকুর রহমান (২৬)। তিনি জেলার ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার তারুন্দিয়া ইউনিয়নের কোনাপাড়া গ্রামের আবু তালেবের ছেলে। আশিকুর রহমান ময়মনসিংহ নগরের কলেজ রোড এলাকার একটি বাসায় থাকেন। আনন্দ মোহন কলেজে স্নাতকোত্তরে পড়ছেন তিনি।
অপরদিকে সম্প্রতি দুর্বৃত্তদের হাতে নিহত হন আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশে (এআইইউবি) শিক্ষার্থী মো. ওয়াজেদ সীমান্ত ও ইস্টওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী তাজবির হোসেন শিহানসহ তিনজন।
এ তিন শিক্ষার্থীর মৃত্যুতে প্রতিবাদ জানিয়ে মিছিল ও বিক্ষোভ করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা। –জনতার অভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া এ তিন শিক্ষার্থীকে গুপ্তহত্যার অভিযোগ আনেন তারা।
গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে খালেদ হাসান তার বন্ধু ওমর ফারুকসহ বিশ্ববিদ্যালয় ও আশপাশ এলাকায় ঘোরাফেরা করেন। পরবর্তীতে গত শুক্রবার ভোর ৫ ঘটিকার সময় তিনি পূর্বাচল জলসিঁড়ি আবাসিক এলাকায় অনুষ্ঠিতব্য ২১ কিলোমিটার ম্যারাথন দৌড়ে অংশগ্রহণ করেন। ম্যারাথন শেষে তার বন্ধুকে ফার্মগেট এলাকায় নামিয়ে দিয়ে তিনি সকাল ১০টা ৪৩ মিনিটে তার মোটর সাইকেল করে বিশ্ববিদ্যালয়ে তার কক্ষে ফিরে আসেন। হলে থাকা সিসি ক্যামেরায় তা দেখা গেছে। তার ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি এখনো হলে রয়েছে।
সিডিআর পর্যালোচনা করে দেখা যায়, তিনি গত ২০ ডিসেম্বর সকাল ১০টা ১৭ মিনিটে সর্বশেষ তার এক বন্ধুর সঙ্গে কথা বলেন, যিনি ঢাকার বাইরে আছেন। তার রুমের দরজা বাহির থেকে তালা দেওয়া অবস্থায় পাওয়া যায়। তাকে খুঁজে না পাওয়ায় তার বন্ধুরা তার তালাবদ্ধ রুমের দরজা পাশের রুমে থাকা চাবি নিয়ে খুলে তার ব্যবহৃত একটি অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল পায়। ক্যাম্পাসে তাকে বিকাল ৩ টায় জিহাদ নামের একজন ছেলে দেখেছে।
এ নিয়ে রোববার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রশিবিরের সভাপতি সাদিক কায়েমও একটি পোস্ট করেছেন। তিনি লিখেছেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২১-২২ সেশনের শিক্ষার্থী, চব্বিশের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের সাহসী সঙ্গী খালেদ হাসান গত ২৪ ঘণ্টা যাবৎ নিখোঁজ। আমরা তার নিরাপত্তা নিয়ে যথেষ্ট উদ্বিগ্ন ও শঙ্কিত।
ইতোমধ্যে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে বলে জানিয়ে তিনি আরও লিখেছেন, তারা তাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা অব্যাহত রাখার ব্যপারে আশ্বাস দিয়েছেন। আল্লাহ যেন খালেদকে সুস্থতার সঙ্গে আমাদের মাঝে ফিরিয়ে দেন। আমিন।