■ নাগরিক প্রতিবেদন ■
সংবিধানে গণভোটের বিধান বহাল করতে হাইকোর্টের কাছে আর্জি জানিয়েছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী কেন অবৈধ হবে না, এই মর্মে জারি করা রুলের শুনানিতে এই আর্জি জানান তিনি।
বুধবার (১৩ নভেম্বর) বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চে অ্যাটর্নি জেনারেল বক্তব্য তুলে ধরেন।
অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বলেন, সংবিধানের ১৪২ অনুচ্ছেদে গণভোটের বিধান ছিল। পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধানের এই বিধান তুলে দেয়া হয়েছিল। আমরা গণভোটের এই বিধানটি বহাল চাই। যারা নিশি রাতে ভোট ডাকাতির মাধ্যমে এমপি হয়েছিলেন তাদের ভোটে এই বিধান বাতিল হয়।
পঞ্চদশ সংশোধনীর বৈধতার রুল শুনানিতে পঞ্চদশ সংশোধনী সরাসরি আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পরিপন্থি বলে মন্তব্য করেন তিনি।
অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, পঞ্চদশ সংশোধনী সংবিধানের মৌলিক কাঠামোকে আঘাত করেছে। এই সংশোধনী বাতিল না হলে ৯০ ও ২৪ এর গণঅভ্যুত্থানে যারা আত্মাহুতি দিয়েছে তাদের আত্মা শান্তি পাবে না।
তিনি আরও বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি বাতিল করে গণতন্ত্র, মৌলিক অধিকার ও আইনের শাসনের কবর রচনা করা হয়েছে।
মো. আসাদুজ্জামান বলেন, পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে ফ্যাসিজম দীর্ঘায়িত হয়েছে রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব ক্ষুন্ন হয়েছে। ক্ষুন্ন হয়েছে সংবিধানের শ্রেষ্ঠত্ব। তাই পঞ্চদশ সংশোধনী বাতিল করতে হবে।
গত ১৯ আগস্ট তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল করে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী কেন অবৈধ হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট।
বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি শশাঙ্ক শেখর সরকারের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করেছিলেন। সুজনের সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদারের রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে আদালত এ রুল জারি করেন।
২০১১ সালের ৩০ জুন জাতীয় সংসদে পঞ্চদশ সংশোধনী পাস হয়। এই সংশোধনীর মাধ্যমে শেখ মুজিবুর রহমানকে জাতির জনক হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। এই সংশোধনীর দ্বারা তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করা হয়।
এ ছাড়া, জাতীয় সংসদে নারীদের জন্য সংরক্ষিত আসন সংখ্যা বিদ্যমান ৪৫-এর স্থলে ৫০ করা হয়।
উল্লেখ্য, ১৯৯১ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশে একটি সাংবিধানিক গণভোট অনুষ্ঠিত হয়। ভোটারদের জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল “গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান (দ্বাদশ সংশোধন) বিল, ১৯৯১-এ রাষ্ট্রপতির সম্মতি দেওয়া উচিত কি না?” সংশোধনীগুলি সংসদীয় সরকারের পুনঃপ্রবর্তনের দিকে পরিচালিত করবে, রাষ্ট্রপতি সাংবিধানিক রাষ্ট্রের প্রধান হবেন, কিন্তু প্রধানমন্ত্রী হবেন নির্বাহী প্রধান। এটি উপ-রাষ্ট্রপতির পদটিও বিলুপ্ত করে এবং সংসদ কর্তৃক রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হবে।
ফলাফলের পক্ষে ৮৩.৬% ভোট পড়েছে, ৩৫.২% ভোট বিপক্ষে পড়েছিল।