■ নাগরিক প্রতিবেদক ■
আগামী সপ্তাহে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করতে পারবে বলে আশা করছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। বৃহস্পতিবার বিকেলে আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে ইসি সচিবালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব আখতার আহমেদ সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
জাতীয় নির্বাচনের বেশ আগে একটি রোডম্যাপ ঘোষণা করে থাকে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচনের প্রস্তুতিগুলো কোনটি কবে নাগাদ শেষ করা হবে, মূলত সেটাই থাকে রোডম্যাপ। আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতি নিতে ইতিমধ্যে ইসিকে অনুরোধ করেছে অন্তর্বর্তী সরকার।
ইসি সচিব সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা এটা (রোডম্যাপ) নিয়ে আলোচনা করেছি এবং আমরা আশা করছি, আগামী সপ্তাহে আপনাদের আমাদের নির্বাচনের রোডম্যাপ দিতে পারব।’
রোডম্যাপে কী থাকবে, এমন প্রশ্নের জবাবে ইসি সচিব বলেন, ‘রোডম্যাপে কী কী থাকবে, ওটা রোডম্যাপই বলে দেবে। অংশীজনদের সঙ্গে সংলাপ, আইনবিধি সংশোধনের সম্পর্কিত যাবতীয় তথ্য দেওয়া হবে। তবে এখন সুনির্দিষ্ট করে বলা সম্ভব হচ্ছে না।’
নির্বাচনে পর্যবেক্ষক প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যারা পর্যবেক্ষক হিসেবে আবেদন করেছেন, ৩১৮টা আবেদন পেয়েছি, এটা পর্যালোচনা চলছে। আর ২২টা যে রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন হয়েছে, প্রাথমিকভাবে তাদের জন্য কাউকে ফিল্ডে পাঠাব, আমাদের প্রয়োজনীয় তথ্যের জন্য।
প্রবাসীদের ভোট দেওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আউট অব কান্ট্রি ভোটিং (প্রবাসীদের ভোট) নিয়ে আজকে কিছু আলোচনা হয়েছে- পদ্ধতিটা কী, প্রসেসটা কী হবে, কোথায় কোনটা কতদিনে এটা কভার করতে হবে। এই জিনিসগুলো আমরা আজকে আলোচনা করেছি। এটা নিয়ে আরেকটু আলোচনা বাকি আছে। আলোচনার পর আমরা নিয়মিত ব্রিফ করব।
আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজন করতে চায় অন্তর্বর্তী সরকার। এ জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কাছে চিঠি পাঠানো হবে, যেন কমিশন আগামী রমজান মাস শুরুর আগে ফেব্রুয়ারিতে সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।৫ আগস্ট জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে এ ঘোষণা দেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তির দিন ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবসে’ রাত ৮টা ২০ মিনিটে তিনি এই ভাষণ দেন।
২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে রোজার আগে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের ঘোষণা এসেছে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের কাছ থেকে। নির্বাচন কমিশনও বলছে, ডিসেম্বরের প্রথমার্ধে ভোটের আগে ৫০ থেকে ৬০ দিন হাতে রেখে ভোটের তফসিল দেবে।
নবম সংসদ নির্বাচনের আগে ২০০৭-২০০৮ সাল থেকে কাজের অগ্রগতি তুলে ধরে রোডম্যাপ প্রকাশের রেওয়াজ চলে এসেছে। সর্বশেষ দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের দেড় বছর আগে ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে রোডম্যাপ দিয়েছিল তৎকালীন ইসি। বর্তমান ইসিও এ ধরাবাহিকতা বজায় রাখছে।
ভোটার তালিকা, সীমানা নির্ধারণ, দল নিবন্ধন, নির্বাচনী আইনের সংস্কার, সরঞ্জাম কেনাকাটা, দল ও অংশীজনের সঙ্গে সংলাপ, প্রশিক্ষণ, মুদ্রণ, আইন শৃঙ্খলা সভা, নির্বাচনী কর্মকর্তাদের নিয়ে সভাসহ তফসিলের আগে-পরে প্রস্তুতির ফর্দ থাকবে এ রোডম্যাপে।
বর্তমান ইসি ২০২৪ সালের নভেম্বরে যোগ দেওয়ার পর ২০২৫ সালের ডিসেম্বরকে ধরে একটা প্রাথমিক কর্মপরিকল্পনা সাজিয়েছিল।
এবার ফেব্রুয়ারিতে ভোটের সম্ভাব্য সময় নির্ধারণ হওয়ার পর নতুন সময় ধরে কর্মপরিকল্পনাটির পরিমার্জন চলছে।
কর্মপরিকল্পনা চূড়ান্ত করতে ১৮ অগাস্টে এ নিয়ে বৈঠক করার কথা রয়েছে। ইসির অনুমোদনের পর তা পুস্তিকা আকারে প্রকাশ হতে পারে।
বর্তমান ইসি ২০২৪ সালের নভেম্বরে যোগ দেওয়ার পর ২০২৫ সালের ডিসেম্বরকে ধরে একটা প্রাথমিক কর্মপরিকল্পনা সাজিয়েছিল। এবার ফেব্রুয়ারিতে ভোটের সম্ভাব্য সময়সীমা নির্ধারণ হওয়ার পর নতুন সময় ধরে কর্মপরিকল্পনাটির পরিমার্জন চলছে। কর্মপরিকল্পনা চূড়ান্ত করতে ১৮ আগস্ট এ নিয়ে বৈঠক করার কথা রয়েছে। বৈঠকে অনুমোদনের পর তা পুস্তিকা আকারে প্রকাশ করতে পারে এ এম এম নাসির উদ্দিন কমিশন।