■ নাগরিক প্রতিবেদক ■
বাংলাদেশে ১৪৪৬ হিজরি সনের জিলহজ মাসের চাঁদ দেখা গেছে। ফলে আগামী ৭ জুন (শনিবার) সারা দেশে ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য ও ত্যাগের মহিমায় উদযাপিত হবে পবিত্র ঈদুল আজহা।
বুধবার (২৮ মে) সন্ধ্যায় বায়তুল মুকাররম ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সভাকক্ষে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
সভায় দেশের বিভিন্ন জেলা প্রশাসন, আবহাওয়া অধিদপ্তর এবং ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মাঠপর্যায়ের কার্যালয় থেকে প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্ত পর্যালোচনা করে চাঁদ দেখা যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়। সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার (২৯ মে) থেকে জিলহজ মাস গণনা শুরু হবে।
ধর্ম মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, চাঁদ দেখা যাওয়ার তথ্য জানাতে টেলিফোন ও ফ্যাক্স নম্বর খোলা রাখা হয়েছিল। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে চাঁদ দেখা যাওয়ার তথ্য আসায় দ্রুত সিদ্ধান্তে পৌঁছানো সম্ভব হয়েছে।
সভায় তথ্য অধিদপ্তরের প্রধান তথ্য কর্মকর্তা মো. নিজামূল কবীর, ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মু. আ. আউয়াল হাওলাদার, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) ড. মো. আয়াতুল ইসলাম, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের যুগ্ম-সচিব মোহাম্মদ খোরশেদ আলম খান, বাংলাদেশ টেলিভিশনের মহাপরিচালক মো. নাজিম উদ্দিন, বাংলাদেশ ওয়াকফ প্রশাসনের উপ-সচিব শামীম আহমেদ, বাংলাদেশ মহাকাশ গবেষণা ও দূর অনুধাবন প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মদ শহিদুল ইসলাম, বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক মো. নূরুল করিম, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি লোকমান হোসেন, চরমোনাই আহছানাবাদ রশিদিয়া কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সৈয়দ মো. মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী, চট্টগ্রাম আন্তর্জাতিক ইসলামিক বিশ্ববিদ্যালয়ের দাওয়া ও ইসলামিক শিক্ষা বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান ড. আব্দুল্লাহ ফারুক, সরকারি মাদ্রাসা-ই-আলিয়ার অধ্যক্ষ মোহাম্মদ ওবায়দুল হক, জমিয়াতুল উলুমিল ইসলামিয়ার সহকারী অধ্যক্ষ আব্দুল গাফফার উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, এর আগে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ওমান ও ইন্দোনেশিয়ায় ২৮ মে চাঁদ দেখা যাওয়ার খবর আসে। এসব দেশে ৫ জুন অনুষ্ঠিত হবে আরাফাতের দিন এবং ৬ জুন ঈদুল আজহা উদযাপন করা হবে।
ঈদুল আজহার দিনে মুসলমানরা নামাজ আদায় করেন, কুরবানি দেন, আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধুদের সঙ্গে আনন্দ ভাগাভাগি করেন এবং দরিদ্রদের জন্য সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন।
এই উৎসবটি বিশ্বব্যাপী মুসলমানদের জন্য ত্যাগ, শ্রদ্ধা, ঐক্য ও দানশীলতার প্রতীক।
ওমান ও ইন্দোনেশিয়ায়ও আগামী ৬ জুন ঈদুল আজহা পালিত হবে। মালয়েশিয়া ও ব্রুনাইয়ে ৭ জুন।
আরাফাতের দিন হজযাত্রীরা আরাফাতের পাহাড় ও ময়দানে জড়ো হন। ওইদিন তাদের লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক ধ্বনিতে মুখরিত হয় আরাফাতের প্রান্তর। হজের দ্বিতীয় দিন আরাফাতের দিন পড়ে। যারা হজ পালন করেন না তাদের অনেকে সেদিন রোজা রাখেন।
শেষ নবী হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) তার জীবনের শেষ ভাষণটি এই আরাফাতের ময়দানে দিয়েছেলেন। যা বিদায়ী ভাষণ হিসেবে পরিচিত।
এদিকে পাকিস্তানে আজ চাঁদ দেখতে দেশটির চাঁদ দেখা কমিটি বৈঠকে বসেছিল। তবে এদিন দেশটিতে চাঁদ দেখা যায়নি। তাই পাকিস্তানের মানুষ আগামী ৭ জুন পশু কোরবানির মাধ্যমে ঈদুল আজহা উদযাপন করবেন।
সাধারণত সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর ঈদ উদ্যাপনের পরদিন বাংলাদেশে ঈদ উদ্যাপিত হয়ে থাকে। সে হিসাবে চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ৭ জুন (শনিবার) বাংলাদেশে ঈদুল আজহা উদ্যাপিত হবে।