:: নাগরিক বিনোদন ::
ডা. রওশন আরা, ডাক নাম ডেইজি। মিটফোর্ড মেডিক্যাল স্কুল (বর্তমান স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজ) থেকে, এমবিবিএস পাশ করেন। এই নারীর কারণে সূচনালগ্নেই প্রাণ সঞ্চারিত হয়েছিলো ঢাকাই চলচ্চিত্র শিল্পে।
পাবনার মৌলভী বজলুর রহমান এবং মোছাঃ দুরুদুননিসার ছোট মেয়ে ডা. রওশন আরা ওরফে ডেইজি চলচ্চিত্রে অভিনয়, সে সময়ের সকল সামাজিক কূপমন্ডুকতা ভেঙে যেন উজ্জীবিত করেছিল শক্তিশালী গণমাধ্যম চলচ্চিত্রকে। ১৯৪০ সালের ৩ আগষ্ট পাবনায় জন্ম হলেও পারিবারিক প্রয়োজনে তাঁদের চলে যেতে হয়েছিলো রাজশাহী। সেখানে পিএন গার্লস স্কুলে ভর্তি হয়েছিলেন তিনি। এরপর বগুড়া ও নড়াইলের স্কুলে পড়াশোনা করেছেন। ১৯৫০ সালে তাদের পরিবার আবার পাবনায় ফিরে আসেন। ভর্তি হন পাবনা গার্লস স্কুলে। ১৯৫৪ সালে সেখান থেকে এসএসসি এবং ১৯৫৬ সালে পাবনা এডওয়ার্ড কলেজ থেকে এইচএসসি উত্তীর্ণ হয়ে তিনি ভর্তি হয়েছিলেন মিটফোর্ড মেডিক্যাল স্কুলে।
এই সময় তার বড়ো বোনের বিয়ে হয়, কবি বন্দে আলী মিয়ার সঙ্গে। রওশন আরা অভিনীত, মহিউদ্দিন পরিচালিত “মাটির পাহাড়” ছবিটি মুক্তি পায় ১৯৫৯ সালে। প্রশংসিত হন। ১৯৬০ সালে তাঁর বিয়ে হয় ডা. জহুরুল কামালের সঙ্গে। স্বামী ছিলেন তার অভিনয় জীবনের অন্যতম প্রেরণা। পেশাদার চিকিৎসক হিসেবে কাজ করার পাশাপাশি তিনি নিয়মিত অভিনয় করেছেন চলচ্চিত্রে। যে নদী মরুপথে, সূর্যস্নান, নতুন সুর, শাদী, ইয়েভি এক কাহানি, নদী ও নারী এমন সব সাড়া জাগানো এবং আলোচিত ছবিতে এই নায়িকার অভিনয় যারা দেখেছেন, তারা ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। নজর কেড়েছিলেন ঋদ্ধ দর্শকদেরও। রওশন আরা সর্বশেষ হারুন অর রশিদ পরিচালিত “মেঘের অনেক রঙ” ছবির গুরুত্বপূর্ণ একটি চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন, যা মুক্তি পেয়েছিলো ১৯৭৬ সালে।
চলচ্চিত্র শিল্পের মানুষদের, বিশেষ করে জুনিয়র নারী শিল্পীদের চিকিৎসায় সব সময়ই সহযোগিতা করতেন তিনি। ২০১০ সালের ২৪ জুন ঢাকায় ইন্তেকাল করেন ডা. রওশন আরা। তাঁকে সমাহিত করা হয় মিরপুর ১১ নম্বর সেকশনের কবরস্থানে।