■ ময়মনসিংহ প্রতিনিধি ■
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) কম্বাইন্ড ডিগ্রির দাবিতে আন্দোলনকারীদের উপর দেশীয় অস্ত্র দিয়ে হামলা করেছে দুর্বৃত্তরা। এতে শিক্ষার্থী–সাংবাদিকসহ অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন।
রোববার (৩১ আগষ্ট) রাত পৌনে ৮ টা নাগাদ এই ঘটনা ঘটে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন মিলনায়তনের আশেপাশে অবস্থানরত শিক্ষার্থীদের উপর দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা। এসময় বেশ কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণের শব্দও শোনা যায়।
হামলার ঘটনায় সাংবাদিকসহ অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন।
এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবন ভাঙচুর করে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। বর্তমানে ক্যাম্পাস উত্তাল। ক্যাম্পাসে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কোনো সদস্যের উপস্থিতি দেখা যায়নি। তবে কি নিয়ে সংঘর্ষের সূত্রপাত তা এখনও জানা যায়নি।
বাকৃবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. আসাদুজ্জামান সরকার জানান, পশুপালন ও ভেটেরিনারি অনুষদের শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে আজকে একাডেমিক কাউন্সিলের মিটিংয়ে সর্বসম্মতিক্রমে কম্বাইন্ড ডিগ্রির দাবি মেনে নেওয়া হয়েছে। ডিন কাউন্সিলের আহ্বায়ককে প্রধান করে একটি ৪ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি করা হয়েছে, যারা কম্বাইন্ডের জন্যে কোর্স কারিকুলাম প্রণয়ন করবে। মেকআপ কোর্সেরও কারিকুলাম প্রস্তুত করা হবে দ্রুতই। আগামী সেশন থেকে কম্বাইন্ড কোর্সে ১৫০ জন শিক্ষার্থী ভর্তি করানো হবে। এবার যারা ভর্তি হয়েছে তাদের অপশন থাকবে তারা চাইলে ভেটেরিনারি, পশুপালন বা কম্বাইন্ড নিতে পারবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী আমরা দুই অনুষদকে এক করতে পারবো না। দুই অনুষদ মিলিতভাবে কম্বাইন্ড ডিগ্রি দেবে এবং ধারাবাহিকভাবে দুই অনুষদ থেকেই ডিন হবে।
প্রসঙ্গত, কম্বাইন্ড ডিগ্রি চালুর দাবিতে গত ২৭ জুলাই থেকে পশুপালন অনুষদের শিক্ষার্থীরা ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে আন্দোলন চালাচ্ছেন। ৩০ জুলাই থেকে অনুষদটিতে তালা ঝুলছে। একই দাবিতে গত ২৫ আগস্ট থেকে আন্দোলনে যোগ দিয়েছেন ভেটেরিনারি অনুষদের শিক্ষার্থীরাও।
এর আগে, কম্বাইন্ড ডিগ্রি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আয়োজিত একাডেমিক কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত আশানুরূপ না হওয়ায় বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) পশুপালন ও ভেটেরিনারি অনুষদের একক কম্বাইন্ড ডিগ্রির দাবি করা শিক্ষার্থীরা জরুরি সভায় উপাচার্যসহ উপস্থিত সকল শিক্ষককে অবরুদ্ধ করে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছিলেন শিক্ষার্থীরা। শিক্ষকদের প্রায় ৬-৭ ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখার পর এক পর্যায়ে দ্বিতীয়বারের মতো একাডেমিক কাউন্সিলের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
এক পর্যায়ে ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মুফিদুল আলম এবং আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সেখানে উপস্থিত হন। এরপর শিক্ষকরা বাহিরে আসার সাথে সাথে জেলা প্রশাসকের সামনেই বহিরাগতরা আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের উপর হামলা চালায় এবং বেশ কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। হামলায় বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
এসময় নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পশুপালন অনুষদের শিক্ষার্থী বলেন, শিক্ষকরা অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে বাহিরে আসার সাথে সাথে একদল বহিরাগত আমাদের উপর দেশীয় অস্ত্র নিয়ে জেলা প্রশাসকের সামনেই হামলা চালায়। আমাদের বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী এতে আহত হন।
এ বিষয়ে কথা বলতে ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মুফিদুল আলমের সঙ্গে মুঠোফোন না ধরায় যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।