‘জাতীয় সরকার’ পরিকল্পনা জানালেন তারেক রহমান

:: নাগরিক প্রতিবেদন ::

জাতীয় সরকার ও দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদের পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। বুধবার ঢাকা বিভাগে দলের তৃণমূল নেতা-কর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ পরিকল্পনার কথা বলেন।

এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন দলের জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, ড. আবদুল মঈন খান ও গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।

তারেক রহমান বলেছেন, ‘আমাদের পূর্বসূরিরা রণাঙ্গনে যুদ্ধ করে একটা স্বাধীন দেশ আমাদের দিয়েছেন। এই যুদ্ধ জয়ের মূল শক্তি ছিল প্রশ্নহীন জাতীয় ঐক্য। দুঃখজনক হলেও সত্যি যে স্বাধীনতার পর আমরা সেই ঐক্যের শক্তিকে কাজে লাগাতে পারিনি। অত্যাবশ্যকীয় একটা জাতীয় সরকারের পরিবর্তে আওয়ামী লীগের দলীয় সরকার ক্ষমতায় আসায় দেশ বিভক্ত হয়ে পড়েছে প্রথম দিন থেকেই।ফলে একটা বিরাট অংশ ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও দেশ গঠন কোনো অবদান রাখতে পারেনি।’

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমরা দেখেছি দলীয় সরকারে কিভাবে একটি দলের লোকজন বিচরণ করে সর্বত্র; আর অন্য সবার অবস্থান হয়ে পড়ে তুচ্ছ আর গৌণ।

ফলে একটা বিশাল জনগোষ্ঠীর সেবা থেকে দেশ বঞ্চিত হয়। স্বাধীনতার পরপর জাতীয় ঐক্যের শক্তিকে ব্যবহার না করে যে সুযোগ সেদিন হাতছাড়া করা হয়েছে, আগামী দিনে আমরা সেটার পুনরাবৃত্তি করতে চাই না। জনগণের সমর্থন নিয়ে বিএনপি আগামীতে জাতীয় সরকারের মাধ্যমে দেশ পরিচালনা দেখতে চায়।’

তারেক রহমান আরো বলেন, ‘এ দেশের মানুষের জন্য গণতন্ত্র আর ভোটাধিকার পুনরুদ্ধারের সংগ্রামে যারা অংশগ্রহণ করেছেন; তারা সবাই আগামীতে দেশ পরিচালনায় অংশগ্রহণ করবেন, যাতে দেশ তাদের অবদানের সুফল থেকে বঞ্চিত না হয়।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের আরো একটা গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার পরিকল্পনার কথা দেশবাসীকে জানানো প্রয়োজন মনে করছি। দেশে প্রথাগত রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত নন কিন্তু দেশ গঠন, উন্নয়ন ও পরিচালনায় অংশগ্রহণ করতে চান- এমন অসংখ্য জ্ঞানী, গুণী শিক্ষক, শিল্পী-সাহিত্যিক, সাংবাদিক, গবেষক, চিকিৎসক, কারিগরি বিশেষজ্ঞ, মানবতাকর্মী রয়েছেন; কিন্তু বর্তমান সাংবিধানিক কাঠামোতে তাদের পক্ষে সংসদে সদস্য হিসেবে অবদান রাখার সুযোগ নেই। তাদের সেবা আর অবদান দেশের কাজে লাগাতে বিএনপি পৃথিবীর অনেক দেশের মতো আমাদের দেশেও উচ্চ কক্ষসহ দ্বিকক্ষবিশিষ্ট পার্লামেন্ট ব্যবস্থা সংবিধানে সংযুক্ত দেখতে চায়।’ 

তিনি আরো বলেন, ‘আমি বিনয়ের সঙ্গে শুধু আমাদের আগামীর পরিকল্পনা  আর সদিচ্ছার কথা জানাতে পারি, কারণ আমরা জানি দেশের মানুষের সমর্থনই কেবলমাত্র আমাদের পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সহয়তা করতে পারে।’ 

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘আশা করি জনগণ নিশ্চয়ই সেই সব দল বা ব্যক্তিকে জাতীয় সরকারে শামিল দেখতে চাইবেন না; যারা পুরো দেশটাকে একটা দল আর পরিবারের ব্যক্তিগত সম্পত্তিতে পরিণত করেছিল।যারা তথাকথিত উন্নয়নের নামে আমাদের প্রত্যেকের কাঁধে দেড় লক্ষ টাকার ঋণের বোঝা চাপিয়ে হাজার হাজার লাখ লাখ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে। দেশে গড়েছে সম্পদের পাহাড়। গুম-খুন, হামলা-মামলা নির্যাতনে দেশের মানুষের জীবনে নাভিশ্বাস তুলেছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র, চাল-ডাল, লবণ-তেল ওষুধের দাম মানুষের ধরা-ছোঁয়ার বাইরে নিয়ে গেছে। আইন, বিচার, নির্বাহী বিভাগসহ রাষ্ট্রের সব স্তম্ভ ভেঙে গুঁড়িয়ে দিয়েছে। এমনকি পালিয়ে যাওয়ার পূর্বমুহূর্তেও শত শত নিরীহ মানুষের রক্তে রঞ্জিত করেছে বাংলাদেশের রাজধানী থেকে প্রতিটি জেলা উপজেলা; জনগণ নিশ্চয়ই সেই জালেমদের জাতীয় সরকারে অন্তর্ভুক্ত দেখতে চাইবেন না।’ 

বিগত ১৭ বছরের বিরামহীন আন্দোলনে বিএনপির সব পর্যায়ের নেতাকর্মীর অংশগ্রহণ ও দলের প্রতি তাদের অবিচল আস্থার জন্য তারেক রহমান সবাইকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, ‘আপনার আত্মত্যাগ আর অবদান মুষ্টিমেয় হঠকারীর অপকর্মে ক্ষতিগ্রস্ত হতে কেন দেবেন? সতর্ক থাকুন, সচেতন হোন, প্রতিরোধ করুন।’

বর্তমান প্রেক্ষাপটে জনগণের পরিবর্তিত আশা আর ভাষার সঙ্গে নিজেদের মানিয়ে জনগণের আস্থা ও বিশ্বাস অর্জনের উপযুক্ত হতে তিনি নেতাকর্মীদের পরামর্শ দেন। সাম্প্রতিককালে গজিয়ে ওঠা অদৃশ্য প্রতিপক্ষের মোকাবেলায় নিজ রাজনৈতিক প্রজ্ঞা আর কৌশল প্রয়োগের নির্দেশ দেন তিনি।

সর্বশেষে তৃণমূলের প্রতি অগাধ আস্থা ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেন, ‘দলের সব সংকটকালে তৃণমূলই বিএনপিকে বারবার রক্ষা করেছে। এমপি-মন্ত্রী, পদ-পদবির প্রত্যাশা না করা নিবেদিতপ্রাণ কর্মীদল- যারা শহীদ জিয়া, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া আর বিএনপির আদর্শের প্রতি যে অবিচল আস্থা বরাবর রেখেছেন; সেটা অব্যাহত থাকলে দল হিসেবে বিএনপির সফলতা আর অগ্রযাত্রা কখনোই ব্যাহত হবে না।’

জাতীয় সরকারে কারা থাকবেন, তার ইঙ্গিত দিয়ে তারেক রহমান বলেন, ‘জনগণ নিশ্চয়ই সেসব দল বা ব্যক্তিকে জাতীয় সরকারে শামিল দেখতে চাইবেন না, যারা পুরো দেশটাকে একটা দল আর পরিবারের ব্যক্তিগত সম্পত্তিতে পরিণত করেছিল। যারা তথাকথিত উন্নয়নের নামে আমাদের প্রত্যেকের কাঁধে দেড় লাখ টাকার ঋণের বোঝা চাপিয়ে হাজার হাজার, লাখ লাখ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে। গুম-খুন, হামলা-মামলা নির্যাতনে দেশের মানুষের জীবনে নাভিশ্বাস তুলেছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র মানুষের ধরাছোঁয়ার বাইরে নিয়ে গেছে। আইন, বিচার, নির্বাহী বিভাগসহ রাষ্ট্রের সব কটি স্তম্ভ ভেঙে গুঁড়িয়ে দিয়েছে। এমনকি পালিয়ে যাওয়ার পূর্বমুহূর্তেও শত শত নিরীহ মানুষের রক্তে রঞ্জিত করেছে রাজধানীসহ সারা দেশ। জনগণ নিশ্চয়ই সেই জালিমদের জাতীয় সরকারে অন্তর্ভুক্ত দেখতে চাইবেন না।’

বর্তমান পরিস্থিতিতে জনগণের আশা ও ভাষার সঙ্গে নিজেদের মানিয়ে আস্থা ও বিশ্বাস অর্জনের জন্য নেতা-কর্মীদের পরামর্শ দেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। সেই সঙ্গে তিনি সাম্প্রতিক সময়ের গজিয়ে ওঠা ‘অদৃশ্য প্রতিপক্ষ’ মোকাবিলায় নিজ রাজনৈতিক প্রজ্ঞা আর কৌশল প্রয়োগের নির্দেশ দেন। তিনি বলেন, ‘আপনার আত্মত্যাগ আর অবদান মুষ্টিমেয় হঠকারীর অপকর্মে ক্ষতিগ্রস্ত হতে কেন দেবেন? সতর্ক থাকুন, সচেতন হোন, প্রতিরোধ করুন।’

তারেক রহমান বলেন, দেশে প্রথাগত রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত নন কিন্তু দেশ গঠন, উন্নয়ন ও পরিচালনায় অংশ নিতে চান এমন অসংখ্য জ্ঞানী-গুণী, শিক্ষক, শিল্পী, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, গবেষক, চিকিৎসক, কারিগরি বিশেষজ্ঞ এবং মানবতাকর্মী রয়েছেন। তবে বর্তমান সাংবিধানিক কাঠামোতে তাদের পক্ষে সংসদে সদস্য হিসেবে অবদান রাখার সুযোগ নেই। তাদের সেবা আর অবদান দেশের কাজে লাগাতে বিএনপি দ্বিকক্ষ পার্লামেন্ট ব্যবস্থা সংবিধানে সংযুক্ত দেখতে চায়।

তিনি বলেন, গণতন্ত্র আর ভোটাধিকার পুনরুদ্ধারের সংগ্রামে যারা অংশ নিয়েছেন, তারা সবাই আগামীতে দেশ পরিচালনায় অংশ নেবেন, যাতে দেশ তাদের অবদানের সুফল থেকে বঞ্চিত না হয়।

তিনি বলেন, দলের সব সংকটকালে তৃণমূলই বিএনপিকে বার বার রক্ষা করেছে। এমপি ও মন্ত্রী পদ-পদবির প্রত্যাশা না করা নিবেদিত প্রাণ কর্মীদল যারা বিএনপির আদর্শের প্রতি অবিচল আস্থা বরাবর রেখেছেন, সেটা অব্যাহত থাকলে সফলতা আর অগ্রযাত্রা কখনোই ব্যাহত হবে না।

বিগত বছরগুলোর বিরামহীন আন্দোলনে বিএনপি নেতাকর্মীর অংশগ্রহণ ও দলের প্রতি তাদের অবিচল আস্থার জন্য অভিনন্দন জানিয়ে তারেক রহমান বলেন, আপনাদের আত্মত্যাগ আর অবদান মুষ্টিমেয় হঠকারীর অপকর্মে ক্ষতিগ্রস্ত হতে কেন দেবেন? সতর্ক থাকুন, প্রতিরোধ করুন। বর্তমান প্রেক্ষাপটে জনগণের পরিবর্তিত আশা আর ভাষার সঙ্গে নিজেদের মানিয়ে আস্থা ও বিশ্বাস অর্জনের উপযুক্ত হতে হবে। 

ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী সায়েদুল আলম বাবুল জানান, সভায় ঢাকা বিভাগের প্রায় ১৩ হাজার নেতা ভার্চুয়ালি অংশ নেন। এতে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নানা নির্দেশনা দিয়েছেন। যারা দুষ্কর্ম করার চেষ্টা করবে, তাদের প্রতিহত করতে বলেছেন। যেসব নেতাকর্মী দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করবে, তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে উল্লেখ করে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেছেন, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থাও নেওয়া হবে। 

শেয়ার করতে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *