■ কূটনৈতিক প্রতিবেদক ■
বাংলাদেশের জন্য নতুন রাষ্ট্রদূত হিসেবে ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেনকে মনোনীত করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। হোয়াইট হাউস এ মনোনয়নের বিষয়ে শুনানির জন্য গতকাল মঙ্গলবার দেশটির সিনেটে পাঠিয়েছে।
ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেনের পুরো নাম ব্রেন্ট টি. ক্রিস্টেনসেন। তাঁকে ২০২৫ সালের ২০ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ ও আন্তর্জাতিক নিরাপত্তাবিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারির দায়িত্বে নিযুক্ত জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা হিসেবে মনোনীত করেন।
ক্রিস্টেনসেন এর আগে, ২০২২ সালের আগস্ট থেকে ২০২৫ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলগত কমান্ডের (ইউএসএসট্র্যাটকম) কমান্ডারের পররাষ্ট্রনীতিবিষয়ক উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এ সময় তিনি ইউএসএসট্র্যাটকমের বৈশ্বিক কৌশলগত প্রতিরোধ মিশনের পররাষ্ট্রনীতিগত প্রভাব সম্পর্কে কমান্ডারকে পরামর্শ দেন।
সিনিয়র ফরেন সার্ভিসের কর্মকর্তা হিসেবে ক্রিস্টেনসেন ঢাকায় অবস্থিত মার্কিন দূতাবাসে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক কাউন্সেলর (২০১৯-২০২১), মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের পলিটিক্যাল-মিলিটারি অ্যাফেয়ার্স ব্যুরোর আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও অস্ত্র হস্তান্তর অফিসের ডেপুটি ডিরেক্টর (২০১৬-২০১৯) এবং হাউস ফরেন অ্যাফেয়ার্স কমিটির এশিয়া ও প্যাসিফিক সাবকমিটির সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের স্টাফে পারসন ফেলো (২০১৫-২০১৬) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
এর বাইরে তিনি বিশেষ প্রতিনিধির (উত্তর কোরিয়া নীতি) বিশেষ সহকারী, ইস্ট এশিয়া ও প্যাসিফিক অ্যাফেয়ার্স ব্যুরোর সাইবার কো-অর্ডিনেটর, ম্যানিলায় মার্কিন দূতাবাসে অর্থনীতিবিষয়ক ডেপুটি কাউন্সেলর, সান সালভাদরে মার্কিন দূতাবাসে ডেপুটি ইকোনমিক কাউন্সেলর, পররাষ্ট্র দপ্তরের পাকিস্তান ও বাংলাদেশবিষয়ক অফিসে বাংলাদেশ কান্ট্রি অফিসার, রিয়াদে মার্কিন দূতাবাসে অর্থনৈতিক কর্মকর্তা এবং হো চি মিন সিটিতে মার্কিন কনস্যুলেট জেনারেলের ভাইস কনসাল হিসেবে কাজ করেছেন।
পররাষ্ট্র দপ্তরের দায়িত্ব ছাড়াও ২০১৮ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেন মার্কিন ফেডারেল লেবার রিলেশনস অথোরিটির অধীনে ফরেন সার্ভিস ইমপাসেস ডিসপিউটস প্যানেলের দুজন ক্যারিয়ার ফরেন সার্ভিস সদস্যের একজন হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
ন্যাশনাল ওয়ার কলেজের একজন ডিস্টিংগুইশড গ্র্যাজুয়েট হিসেবে ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেন ২০২২ সালে ন্যাশনাল সিকিউরিটি স্ট্র্যাটেজিতে সায়েন্সে মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন। এ ছাড়া, তিনি টেক্সাস এঅ্যান্ডএম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পরিসংখ্যান বিষয়ে মাস্টার্স এবং রাইস বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতি ও ম্যানেজারিয়াল স্টাডিজে ব্যাচেলর অব আর্টস ডিগ্রি লাভ করেছেন।
তিনি স্প্যানিশ, জার্মান ও ভিয়েতনামি ভাষায় কথা বলতে পারেন এবং ফরাসি, জাপানি ও পর্তুগিজ ভাষা শিখেছেন। ২০০২ সালে ফরেন সার্ভিসে যোগ দেওয়ার আগে তিনি হিউস্টন ও নিউইয়র্ক সিটিতে ম্যানেজমেন্ট কনসালট্যান্ট হিসেবে কাজ করতেন।
ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসে আগে কাজ করার অভিজ্ঞতা আছে ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেনের। তিনি ২০১৯ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক বিষয়ক কাউন্সেলর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
ট্রাম্প প্রশাসন দ্বিতীয়বার সেদেশের দায়িত্ব নেওয়ার ব্যস্ততায় সিদ্ধান্ত নিতে না পারায় আরেক পেশাদার কূটনীতিক ট্রেসি আ্যান জ্যাকবসনকে যুক্তরাষ্ট্রের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব দেওয়া হয়। নতুন রাষ্ট্রদূত আসার আগ পর্যন্ত ঢাকায় দায়িত্ব পালন করবেন তিনি।
তিনি চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এই পদে দায়িত্বে রয়েছেন।
ঢাকায় সবশেষ মার্কিন রাষ্ট্রদূত ছিলেন পিটার হাস। তিনি ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের ১৭তম রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০২২ সালের মার্চ থেকে ২০২৪ সালের এপ্রিল পর্যন্ত তিনি ঢাকায় দায়িত্ব পালন করেন। গত বছরের ২৭ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের ফরেন সার্ভিস থেকে অবসরে যান পিটার হাস।