■ চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি ■
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে নিহতের এক সপ্তাহ পর চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার ঝাঁঝাডাঙা গ্রামের ইব্রাহিম খলিল বাবুর (২৯) মরদেহ ফেরত দিয়েছে বিএসএফ।
মঙ্গলবার (৮ জুলাই) রাত ৯টার দিকে চুয়াডাঙ্গার দর্শনার জয়নগর সীমান্তের শূন্য রেখায় পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে মরদেহটি বাংলাদেশে হস্তান্তর করা হয়। এ সময় চুয়াডাঙ্গা ব্যাটালিয়নের অধীনস্থ (৬ বিজিবি) দর্শনা কোম্পানি কমান্ডার এবং ভারতের ৩২ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের গেদে কোম্পানির কমান্ড্যান্টের উপস্থিতিতে এই পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
রাতে চুয়াডাঙ্গার দর্শনা সীমান্তের জয়নগর শূন্য রেখায় উভয় দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্য পতাকা বৈঠকের পর মরদেহ হস্তান্তর কার্যক্রম শুরু হয়। বাংলাদেশের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গা ৬ বিজিবি ব্যাটালিয়নের উপ-অধিনায়ক মেজর মাসুদ হায়দার, সহকারী পরিচালক হায়দার আলী, দর্শনা বিওপির কোম্পানি কমান্ডার নায়েক সুবেদার এনায়েত হোসেনসহ আর বিজিবির ৯ সদস্য এবং দর্শনা থানার ওসিসহ আরও অনেকে।
অন্যদিকে, ৩২ বিএসএফের অধিনায়ক সুজিত কুমার, হালদাপাড়া বিএসএফ ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার এসি তপস্যর কুমার, ভারতের কৃঞ্চগঞ্জ থানার ওসি সৌগত রায়সহ পুলিশের অন্য সদস্যরা।
পরে ভারতের নদীয়া জেলার কৃষ্ণনগর থানা পুলিশ নিহতের মরদেহ দর্শনা থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে। দর্শনা থানা পুলিশের পরিদর্শক (ওসি) মুহম্মদ শহীদ তিতুমীর এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
বুধবার (২ জুলাই) দুপুরে দামুড়হুদা উপজেলার ঝাঁঝাডাঙা সীমান্তে গবাদিপশুর জন্য ঘাস কাটতে যান ইব্রাহিম। এ সময় অসাবধানতাবশত ভারতের অভ্যন্তরে চলে গেলে বিএসএফের টহলদল এলোপাতাড়ি গুলিতে ঘটনাস্থলেই ইব্রাহিম নিহত হন। পরে মরদেহ বিএসএফের সদস্যরা নিয়ে যায়। সেখানে একটি হাসপাতালে ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করে আইনি প্রক্রিয়া শেষে সাত দিন পর মরদেহ হস্তান্তর করেছে।
জানা গেছে, নিহত ইবরাহিম বাবু ঝাঁঝাডাঙা গ্রামের মো. নুর ইসলামের ছেলে। সংসারে একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন তিনি। তার মৃত্যুর খবরে পরিবারে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।
নিহতের মৃত্যুতে তাঁর পরিবার ও স্থানীয় এলাকাবাসীর মধ্যে শোক ও ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। তাঁরা এই অনাকাঙ্ক্ষিত হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত এবং সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদারের দাবি জানিয়েছেন।
ওসি মুহম্মদ শহীদ তিতুমীর বলেন, মঙ্গলবার রাতে জয়নগর সীমান্তে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে মরদেহ হস্তান্তর করে বিএসএফ। রাতেই পরিবারের সদস্যদের নিকট মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে।
দর্শনা থানার ওসি শহীদ তিতুমীর জানান, দামুড়হুদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার মহিবুল্লাহ মরদেহের পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর নিহতের দুলাভাই এনামুলের কাছে হস্তান্তর করা হয়। রাতেই গ্রামের কবর স্থানে দাফন কার্য সম্পন্ন হবে।