■ নাগরিক প্রতিবেদন ■
সাভারে ২০২১ সালে অধ্যাপক মাহমুদুর রহমান নামে দাফন করা লাশটি বিএনপি নেতা হারিছ চৌধুরীর। তাঁর সঙ্গে মেয়ে সামিরা তানজিন চৌধুরীর ডিএনএ মিলেছে।
এই বিষয়ে প্রতিবেদন উপস্থাপনের পর হারিছ চৌধুরীকে তাঁর শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী স্থানে দাফন করার অনুমতি দিয়েছেন হাইকোর্ট।
হারিছ চৌধুরী বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব ছিলেন।
বুধবার (৪ ডিসেম্বর) বিচারপতি ফাহমিদা কাদের ও বিচারপতি মুবিনা আসাফের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ-সংক্রান্ত আবেদন মঞ্জুর করে আদেশ দেন। আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার মাহদীন চৌধুরী।
এর আগে হারিছ চৌধুরীর মেয়ে সামিরা তানজিন চৌধুরীর করা এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গত ৫ সেপ্টেম্বর হাইকোর্ট রুলসহ আদেশ দেন।
রিট আবেদনে প্রার্থনা ছিল, সাভারের মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে হারিছ চৌধুরীর দেহাবশেষ যা আছে, তা তুলে ডিএনএ পরীক্ষা করে তাঁর প্রকৃত পরিচয় নির্ধারণ। তাঁর শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী বীর মুক্তিযোদ্ধার প্রাপ্য সম্মানসহ নিজ বাড়িতে দাফন করা।
আগের ধারাবাহিকতায় আজ বিষয়টি আদালতে ওঠে। রিট আবেদনকারীর পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মাহদীন চৌধুরী। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শফিকুর রহমান ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মো. ইছা।
পরে আইনজীবী মাহদীন চৌধুরী বলেন, হারিছ চৌধুরীর মেয়ের সঙ্গে ডিএনএ মিলেছে। অর্থাৎ, মাহমুদুর রহমান নামে দাফন করা ব্যক্তিই হারিছ চৌধুরী। দেহাবশেষ এখন ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে রয়েছে। বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে যথাযথ সম্মান দিয়ে তাঁকে তাঁর পরিবারের ইচ্ছা অনুযায়ী দাফন করার অনুমতি দিয়েছেন আদালত।
সাভারের জামিয়া খাতামুন নাবিয়্যিন মাদ্রাসার কবরস্থানে ‘মাহমুদুর রহমান’ নামে সমাহিত হারিছ চৌধুরীর লাশ (দেহাবশেষ) তুলে ডিএনএ পরীক্ষা করতে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।
হারিছ চৌধুরীর প্রকৃত পরিচয় শনাক্তে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) পরিচালককে এ নির্দেশ দেওয়া হয়।
রিট আবেদনকারীর আইনজীবীর ভাষ্য, তৎকালীন সরকারের রোষানল থেকে বাঁচার জন্য হারিছ চৌধুরী আত্মগোপনে ছিলেন। পরবর্তী সময়ে মাহমুদুর রহমান পরিচয়ে ঢাকা শহরেই ছিলেন তিনি। আমৃত্যু ঢাকা শহরেই ছিলেন। ২০২১ সালের ৩ সেপ্টেম্বর করোনায় আক্রান্ত হয়ে তিনি রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে মারা যান। কিন্তু তৎকালীন সরকারের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চাপে তাঁর মৃত্যুর বিষয়টি ধামাচাপা দিয়ে জোরপূর্বক ঢাকার অদূরে সাভারের একটি মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে তাঁকে কবর দিতে বাধ্য করা হয়। সরকার সে সময় তাঁর প্রকৃত পরিচয় অনুযায়ী কোনো মৃত্যুসনদ দেয়নি। একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তাঁর প্রাপ্য সম্মান দেয়নি।
২০২১ সালের ৩ সেপ্টেম্বর করোনায় আক্রান্ত হয়ে তিনি রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে মারা যান। কিন্তু তৎকালীন সরকারের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চাপে তার মৃত্যুর বিষয়টি ধামাচাপা দিয়ে জোরপূর্বক ঢাকার অদূরে সাভারের একটি মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে তাকে কবর দিতে বাধ্য করা হয়। সরকার সে সময় তার প্রকৃত পরিচয় অনুযায়ী কোনো মৃত্যুসনদ দেয়নি। একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তার প্রাপ্য সম্মানও দেয়া হয়নি।
এর আগে ২০২১ সালে মানবজমিন পত্রিকার সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে জানান, ওই বছরের ৪ সেপ্টেম্বর হারিছ চৌধুরীকে ‘অধ্যাপক মাহমুদুর রহমান’ পরিচয়ে সাভারে জামিয়া খাতামুন নাবিয়্যিন মাদ্রাসার কবরস্থানে দাফন করা হয়।