চাকসু নির্বাচন: ২৬ পদের ২৪টিতেই শিবিরের জয়

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি ■

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) নির্বাচনে ২৬ পদের মধ্যে ২৪টিতেই জয় পেয়েছেন ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেলের শিক্ষার্থীরা।

নির্বাচনে ভিপি (সহসভাপতি) ও জিএস (সাধারণ সম্পাদক) পদে জয় পেয়েছেন ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেলের প্রার্থীরা। অন্যদিকে এজিএস (সহ-সাধারণ সম্পাদক) পদে জয়ী হয়েছেন ছাত্রদল সমর্থিত প্রার্থী।

নির্বাচনে ছাত্রশিবির সমর্থিত ‘সম্প্রীতির শিক্ষার্থী জোট’ প্যানেলের ভিপি পদে ইব্রাহিম হোসেন রনি ও জিএস পদে সাঈদ বিন হাবিব নির্বাচিত হয়েছেন। অন্যদিকে এজিএস নির্বাচিত হয়েছেন ছাত্রদলের প্যানেলের প্রার্থী আইয়ুবুর রহমান তৌফিক।

বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) রাত চারটার দিকে ১৪টি হল ও একটি হোস্টেলের অনানুষ্ঠানিকভাবে ঘোষিত ফলাফল থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

চাকসুর ১৪টি হলের ফলাফল অনুযায়ী, ভিপি পদে ইব্রাহিম হোসেন রনি ভোট পেয়েছেন ৭ হাজার ২২১টি আর জিএস পদে সাঈদ বিন হাবিব ভোট পেয়েছেন ৭ হাজার ২৯৫টি। অন্যদিকে এজিএস পদে আইয়ুবুর রহমান তৌফিক ভোট পেয়েছেন ৬ হাজার ৪৪১টি।

বুধবার সকাল ৯টায় ভোটগ্রহণ শুরু হয়ে শেষ হয় বিকেল ৪টায়। চাকসুর ২৬টি পদের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন ৪১৫ জন প্রার্থী, আর হল ও হোস্টেল সংসদের ২৪টি পদের জন্য লড়েছেন ৪৯৩ জন।

চাকসু নির্বাচনে শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হলেও ফলাফল প্রকাশের আগে বেশ কিছু জায়গায় উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। বুধবার রাত একটার পর দুই হলের ভোট কারচুপির অভিযোগ তুলে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দিনকে অবরুদ্ধ করে রাখে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। পরে রাত সাড়ে ৩টার দিকে অধ্যাপক কামাল মুক্ত হন।

এর আগে দিনভর সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোটগ্রহণ হলেও ফলাফল প্রকাশের আগে বিভিন্ন জায়গায় উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি হয়। এদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের এক নম্বর গেটের বাইরে ছাত্রদলের সমর্থনে বিএনপি ও ছাত্রশিবিরের সমর্থনে জামায়াতের নেতাকর্মীরা আশেপাশে অবস্থান নেন। এ সময় উভয় পক্ষই শান্তিপূর্ণভাবে রাস্তার পাশে থাকলেও অপ্রীতিকর কোনো ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। রাত একটা পর্যন্ত তাদের অবস্থান করতে দেখা গেছে। এমন পরিস্থিতিতে রাতেই ক্যাম্পাসে বিজিবি মোতায়েন করা হয়।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে ছাত্রশিবির সর্বশেষ বিজয়ী হয়েছিল ১৯৮১ সালের চাকসু নির্বাচনে। সেবার ভিপি হয়েছিলেন জসিম উদ্দিন সরকার এবং জিএস হয়েছিলেন আবদুল গাফফার। দুজনই শিবিরের তৎকালীন নেতা ছিলেন।

দীর্ঘ ৪৪ বছর ছাত্রশিবির নেতৃত্বের বাইরে থাকলেও এবারের নির্বাচনে তারা আবারও চাকসুর নিয়ন্ত্রণ ফিরে পেয়েছে, যা সংগঠনটির জন্য এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত।

শেয়ার করতে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *