■ নাগরিক প্রতিবেদন ■
দেশের ১৩ জেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে শৈত্যপ্রবাহ। আবহাওয়া অফিস বলছে, তাপমাত্রা বেড়ে আগামী কয়েকদিন শীতের অনুভূতি কমে আসতে পারে।
শুক্রবার আবহাওয়ার নিয়মিত বুলেটিনে বলা হয়েছে, আজ রাজশাহী, পাবনা, বগুড়া, নওগাঁ, কুষ্টিয়া এবং রংপুর বিভাগে বইছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। সব মিলিয়ে আজ ১৩ জেলায় বইছে শৈত্যপ্রবাহ।
এ দিন দেশের সর্বনিম্ন ৮.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা ছিল পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায়।
শুধু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাওয়া জেলাগুলোতেই নয়, ঢাকাসহ দেশের প্রায় সব জায়গায় আজ তীব্র শীতের প্রকোপ ছিল। বৃহস্পতিবার শুরু হওয়া ঘন কুয়াশার সঙ্গে বাতাস শীতের তীব্রতা বাড়িয়ে দিয়েছে। আবার যেসব এলাকায় রোদ উঠেছে, সেখানে শীতের তীব্রতা কমেনি। ফলে জনজীবনে নেমে এসেছে স্থবিরতা।
বড় এলাকাজুড়ে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নেমে গেলে তাকে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ ধরা হয়; ৬ থেকে ৮ ডিগ্রির মধ্যে থাকলে মাঝারি এবং ৮ থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলে তাকে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বলা হয়।
শুক্রবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় তাপমাত্রা বাড়ার কথা বলা হয়েছে পূর্বাভাসে বলা হয়, সারাদেশে রাতের তাপমাত্রা সামান্য এবং দেশের পশ্চিমাঞ্চলে দিনের তাপমাত্রা ১ থেকে ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়তে পারে। এছাড়া দেশের অন্যান্য এলাকার তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
আবহাওয়ার পূর্বাভাস বলছে, মধ্য রাত থেকে সকাল পর্যন্ত সারাদেশে মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে। কোথাও কোথাও দুপুর পর্যন্ত এ পরিস্থিতি থাকতে পারে। ঘন কুয়াশার কারণে বিমান চলাচল, অভ্যন্তরীণ নদী পরিবহন এবং সড়ক যোগাযোগ সাময়িকভাবে ব্যাহত হতে পারে বলে।
রাজশাহী জেলার ওপর দিয়ে আজ বইছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। দিনের বেলায় রোদ উঠলেও কনকনে ঠান্ডা বাতাস শীতের তীব্রতা আরও বাড়িয়েছে। দেশের যে ১৩ জেলায় আজ শৈত্যপ্রবাহ শুরু হয়েছে, এর মধ্যে রাজশাহী একটি। সেখানে আজ সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৯ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, আজ রাজশাহী, পাবনা, বগুড়া, নওগাঁ, কুষ্টিয়া এবং রংপুর বিভাগে বইছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। রংপুর বিভাগের জেলার সংখ্যা ৮। তাই সব মিলিয়ে আজ ১৩ জেলায় বইছে শৈত্যপ্রবাহ।
শুধু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাওয়া জেলাগুলোতেই নয়, রাজধানীসহ দেশের প্রায় সর্বত্রই আজ তীব্র শীতের প্রকোপ ছিল। এর মধ্যে গতকাল শুরু হওয়া ঘন কুয়াশা শীতের তীব্রতা বাড়িয়ে দিয়েছে। আবার যেসব এলাকায় রোদ উঠেছে, সেখানে তীব্রতা কমেনি শীতের। এ কারণে জনজীবনে অনেক স্থানেই নেমে এসেছে স্থবিরতা। আজ ছুটির দিন এমনিতেই রাস্তাঘাটে মানুষের চলাচল কম থাকে। তীব্র শীত তা আরও কমিয়ে দিয়েছে। নিম্ন আয়ের মানুষদের বিপত্তি বেড়েছে; কারণ, তাঁদের এই শীতেও কাজের সন্ধানে বাইরে বেরোতে হয়েছে। ঘন কুয়াশার কারণে যানবাহন চলাচলে বিপত্তি দেখা দিয়েছে অনেক স্থানে। শীতজনিত নানা অসুখে হাসপাতালসহ চিকিৎসাকেন্দ্রগুলোতে রোগী বেড়েছে।
রাজধানীতে গতকাল বৃহস্পতিবার থেকে সূর্যের দেখা নেই। আগামীকালও রাজধানীতে কুয়াশা থাকতে পারে। তবে রোদ ওঠারও সামান্য সম্ভাবনা আছে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মো. বজলুর রশীদ। তিনি আজ সন্ধ্যায় বলেন, রাজধানীতে তিন দিন সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমে গেছে। আর হঠাৎ তাপমাত্রার এই পতনের কারণেই শীতের তীব্রতা বেড়েছে। তাপমাত্রা কমার আরেকটি কারণ ঘন কুয়াশা।
আবহাওয়া অধিদপ্তর সূত্র জানিয়েছে, গত ৩০ ডিসেম্বর রাজধানীর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২৮ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকাল বৃহস্পতিবার তা হয় ১৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর আজ এ তাপমাত্রা সামান্য বেড়ে হয়েছে, ১৭ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আবহাওয়া অধিদপ্তর প্রতিদিন দেশের ৫১টি স্টেশনের আবহাওয়া পরিস্থিতি তুলে ধরে। সেখানে দেখা গেছে, আজ এর মধ্যে শুধু দুই স্টেশন বাদ দিয়ে সবখানেই সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা এর নিচে। কক্সবাজারে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৭ এবং ওই জেলার কুতুবদিয়া স্টেশনে তাপমাত্রা ১৬ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।