■ নাগরিক প্রতিবেদন ■
হাসিনা সরকারের আমলে সংঘটিত নির্যাতন ও গুমের ঘটনায় জড়িত র্যাব-পুলিশ, আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীসহ ৫৩ জনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
রোববার (১৭ নভেম্বর) র্যাব ও পুলিশের নির্যাতনে সারা জীবনের মতো পঙ্গু হয়ে যাওয়া ইসলামী ছাত্র শিবিরের বিভিন্ন সময়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত সাতজনের পক্ষ থেকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন শাখায় পৃথকভাবে সাতটি অভিযোগ দায়ের করা হয়।
ইসলামী ছাত্র শিবিরের কেন্দ্রীয় আইনবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, দুপুরে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটরের কার্যালয়ে এসে তারা লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ভুক্তভোগী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ড. আমানুল্লাহ আল জিহাদী আদীব। তিনি জানান, গুম, নির্যাতন, পঙ্গুত্ব বরণের মতো অমানবিক ও বর্বোচিত ঘটনায় জড়িত র্যাব-পুলিশ কর্মকর্তাসহ ৫৩ জনের নাম উল্লেখ করে অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে।
ট্রাইব্যুনাল ও ভুক্তভোগী বাদী পক্ষের আইনজীবীরা জানান, অভিযোগকারীরা হলেন- পা হারানো রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্র শিবিরের আবাসিক শাখার কর্মী ও মতিহার থানাধীন বিনোদপুর বাজারের বাসিন্দা মো. জনি ইসলাম, চট্টগ্রাম বাঁশখালীর ছাত্রশিবিরের কর্মী মো. আব্দুল করিম, পঙ্গু হয়ে যাওয়া বগুড়া শেরেপুরের শিবিরের সাবেক কর্মী আলমগীর হোসেন, নির্যাতনে চোখ হারানো নোয়াখালীর দেলোয়ার হোসেন মিশু, পঙ্গু হয়ে যাওয়া চট্টগ্রাম রাঙ্গুনিয়ার সাইফুল ইসলাম তারেক, গুলশান ভাটারা থানা ছাত্রশিবিরের সাবেক সভাপতি নুরুল আমিন এবং ঝিনাইদহের রতনহাট উপজেলার একটি ইউনিয়নের ছাত্রশিবিরের সাবেক সভাপতি মো. কামারুজ্জামান।
এদিকে এখনও নিখোঁজ থাকা ঝিনাইদহের মো. কামারুজ্জামানের পক্ষে তার ভাই উপস্থিত থেকে গুমের অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, বিগত সরকারের আমলে বিভিন্ন সময়ে সংঘটিত শিবিরের বিভিন্ন নেতাকর্মীদের প্রতি পাশবিক নির্যাতন চালানোয় জনি একটি পা হারান, দেলোয়ার হোসেন হারান একটি চোখ এবং আব্দুল করিম ও মো. আলমগীর হোসেন চিরতরে পঙ্গুত্ব বরণ করেন।
অভিযোগে বলা হয়, ২০১৭ সালের ৪ মে তুলে নিয়ে যাওয়ার পর থেকে আজও কামারুজ্জামানের কোন খোঁজ পায়নি তার পরিবার।
খুব শিগগিরই তদন্ত সাপেক্ষে অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা হবে। তবে অভিযোগকারীদের নিরাপত্তা ও গোপনীয়তার স্বার্থে এখনই অভিযুক্তদের নাম জানানো হচ্ছে না বলে জানায় ট্রাইব্যুনাল।