■ চট্টগ্রাম প্রতিনিধি ■
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে সংঘর্ষের ঘটনায় গুরুতর আহত হওয়া শিক্ষার্থী ইমিতিয়াজ আহমেদ সায়েমের জ্ঞান ফিরেছে। খুলে নেওয়া হয়েছে লাইফ সাপোর্ট। মা-বাবার সঙ্গে কথাও বলেছেন তিনি।
শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) বিকেল চারটার দিকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রামের পার্কিভিউ হাসপাতালের উপ-মহাব্যবস্থাপক মো. হুমায়ুন কবির।
তিনি বলেন, আজকে মেডিকেল বোর্ড বসেছে। তখন লাইফ সাপোর্ট খুলে নেওয়া হয়। খোলার পর ইমতিয়াজ ভালো রেসপন্স করছে। মা-বাবার সঙ্গে কথাবার্তা বলেছে। বাবা, মা ও ভাইকে চিনতে পেরেছে। মেডিকেল বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তাকে আরও ২৪ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণে রাখা হবে।
তিনি আরও জানান, দুজন মেডিসিন কনসালটেন্ট আজ ইমতিয়াজকে দেখবেন। অক্সিজেন সেচুরেশন ১০০ মেইনটেইন হচ্ছে। সবকিছু মিলিয়ে অবস্থার উন্নতি হয়েছে।
গত রোববার চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয় বাসিন্দাদের সংঘর্ষে গুরুতর আহত হন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ছাত্র ইমতিয়াজ আহমেদ সায়েম। এর পর থেকেই নগরের পার্কভিউ হাসপাতাল -এর নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে (আইসিইউ) লাইফ সাপোর্টে ছিলেন তিনি। গত দুই দিন তাঁর কনশাস লেভেল ৬ থেকে ৭ এর আশপাশে ছিল।
ইমতিয়াজের বাড়ি কুমিল্লায়। তবে তাঁর পরিবারের সদস্যরা বগুড়ায় থাকেন। ইমতিয়াজ আহত হওয়ার খবর পেয়ে গত সোমবার সকালে বগুড়া থেকে তাঁর বাবা আমির হোসেন ও মা শাহনাজ আমিন চট্টগ্রামে আসেন। ছেলে সুস্থ হয়ে ফিরবেন, সেই অপেক্ষায় আইসিইউর সামনে তাঁদের দিন কাটছে।
চিকিৎসকের বরাত দিয়ে ইমতিয়াজের ভাই আসাদুজ্জামান সজীব বেলা সাড়ে তিনটার দিকে বলেন, ‘ইমতিয়াজের জ্ঞান এখনো পুরোপুরি ফেরেনি। তবে সে কিছুটা রেসপন্স করছে। পরীক্ষামূলকভাবে লাইফ সাপোর্ট খোলা হয়েছে। সকালে দ্বিতীয়বারের মতো মেডিকেল বোর্ড বসেছিল। আরেকটি সিটি স্ক্যান করে তার মাথায় রক্তক্ষরণ নেই বলে জানা গেছে। বর্তমানে তার কনশাস লেভেল ৮-৯ এর মতো বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা।’
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, আজ বেলা ১১টায় ইমতিয়াজের বিষয়ে দ্বিতীয়বার মেডিকেল বোর্ড বসে। বোর্ডে নিউরোসার্জন কামাল উদ্দিন, মো. ইসমাইল, মো. মনজুরুল ইসলাম এবং নিউরোমেডিসিন বিশেষজ্ঞ হাসানুজ্জামান ছিলেন। বোর্ডের সিদ্ধান্তে পরীক্ষামূলকভাবে ইমতিয়াজের লাইফ সাপোর্ট খোলার সিদ্ধান্ত হয়। আজ দুজন মেডিসিন বিশেষজ্ঞকে হাসপাতালে আনার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এর আগে গত বুধবার মেডিকেল বোর্ড বসেছিল বলে জানান হাসপাতালের কর্মকর্তারা।
গত ৩০ আগস্ট রাতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ নম্বর গেট এলাকার তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী ও গ্রামবাসীর মধ্যে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। এর জেরে ৩১ আগস্ট দিনভর দফায় দফায় সংঘর্ষ হয় দুই পক্ষের মধ্যে। এতে পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থী আহত। তাদের মধ্যে তিনজনের আঘাত গুরুতর হওয়ায় আইসিইউতে রাখা হয়। পরে একজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়।