চাকসু নির্বাচন ৩ দিন পেছাল

■ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি ■ 

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) নির্বাচনের ভোট গ্রহণ তিন দিন পিছিয়ে ১৫ অক্টোবর (বুধবার) নির্ধারণ করেছে নির্বাচন কমিশন। মঙ্গলবার বিকেলে বিষয়টি নিশ্চিত করেন চাকসু নির্বাচন কমিশনের সদস্যসচিব অধ্যাপক এ কে এম আরিফুল হক সিদ্দিকী।

চাকসু নির্বাচনের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এ সময় বাড়ানো হয়েছে। ২৬ সেপ্টেম্বর থেকে ৪ অক্টোবর পর্যন্ত দুর্গাপূজার কারণে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকবে।

সে হিসাবে প্রার্থীরা নির্বাচনী প্রচারণার সময় পাবেন মাত্র পাঁচ দিন, যা খুবই কম। তাই গতকাল সোমবার প্রার্থীরা দাবি জানান যেন প্রচারণার বিষয়টি মাথায় রেখে নির্বাচন পেছানো হয়।

এ বিষয়ে কমিশনের সদস্যসচিব অধ্যাপক এ কে এম আরিফুল হক সিদ্দিকী বলেন, প্রচারণায় খুবই কম সময় পাচ্ছিলেন প্রার্থীরা। সেই পরিপ্রেক্ষিতেই নির্বাচন পেছানোর দাবি জানান তাঁরা। সেটিকে আমলে নিয়ে নির্বাচন তিন দিন পেছানো হয়েছে।

চাকসু নির্বাচনে সহসভাপতি (ভিপি) পদে ২৫ জন, সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে ২২ জন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) ২২ জন, খেলাধুলা ও ক্রীড়া সম্পাদক ১২ জন, সহ-খেলাধুলা ও ক্রীড়া সম্পাদক ১৫ জন, সাহিত্য, সংস্কৃতি ও প্রকাশনা সম্পাদক ১৮ জন, সহ-সাহিত্য, সংস্কৃতি ও প্রকাশনা সম্পাদক ১৬ জন, দপ্তর সম্পাদক ১৮ জন, সহ-দপ্তর সম্পাদক ১৪ জন প্রার্থিতা করবেন।

এছাড়া ছাত্রী কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক (নারী শিক্ষার্থীদের জন্য সংরক্ষিত) ১২ জন, সহ-ছাত্রী কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক (নারী শিক্ষার্থীদের জন্য সংরক্ষিত) ১১ জন, বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ১১ জন, গবেষণা ও উন্নয়ন বিষয়ক সম্পাদক ১৩ জন, সমাজসেবা ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক ২০ জন, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ১৭ জন, মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন বিষয়ক সম্পাদক ১৭ জন, ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট ও আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ১৬ জন, যোগাযোগ ও আবাসন বিষয়ক সম্পাদক ২০ জন সহ-যোগাযোগ ও আবাসন বিষয়ক সম্পাদক ১৪ জন, আইন ও মানবাধিকার ১১ জন, পাঠাগার ও ক্যাফেটেরিয়া বিষয়ক সম্পাদক ২১ জন এবং নির্বাহী সদস্য ৫টি পদের বিপরীতে ৮৪ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।

সর্বশেষ চাকসু নির্বাচন হয়েছিল ১৯৯০ সালে। এবার ৩৫ বছর পর হচ্ছে নির্বাচন।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) ১৯৬৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে চাকসু গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে।

১৯৬৬ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পরপরই গঠিত হয়েছিল চাকসু। শিক্ষার মান, শিক্ষার্থীদের মানসিক সংস্কৃতির বিকাশ, ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যকার পারস্পরিক সৌহার্দ্যবোধ ও রাষ্ট্রের দমনপীড়নের বিরুদ্ধে সক্রিয় ভূমিকা রাখার জন্যই গঠিত হয় এটি। প্রতিষ্ঠার পর প্রথম কেবিনেট নির্বাচন হয় ১৯৭০ সালে। পরের বছর ১৯৭১ সালেই হয় এর পরের নির্বাচন।এর পর ১৯৭৩ ও ১৯৮০ সালে হয় পরবর্তী দুইটি নির্বাচন। সর্বশেষ নির্বাচন হয় ১৯৯০ সালের ফেবরুয়ারিতে। ১৯৯০ সালে ছাত্র ঐক্য নেতা ফারুকুজ্জামান নিহত হওয়ার অযুহাতে বন্ধ করে দেয়া হয় চাকসু নির্বাচন। সেই থেকে আজ পর্যন্ত অকেজো হয়ে পড়ে ছিল ছাত্র-ছাত্রীদের সাহিত্য, সংস্কৃতি ও ক্রীড়া চর্চার প্রাণ কেন্দ্রটি।

চাকসু নেতৃবৃন্দের তালিকা

ক্রমিকসালভিপিছাত্র সংগঠনজিএসছাত্র সংগঠন
১৯৭০মোহাম্মদ ইব্রাহিমআব্দুর রব
১৯৭২শমসুজ্জামান হীরাছাত্র ইউনিয়নমাহমুদুর রহমান মান্নাবাংলাদেশ ছাত্রলীগ
১৯৭৪এসএম ফজলুল হকজাসদ ছাত্রলীগ (জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল)গোলাম জিলানী চৌধুরী
১৯৭৯মাজহারুল হক শাহ চৌধুরীজাসদ ছাত্রলীগ (জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল)জমির চৌধুরীবাংলাদেশ ছাত্রলীগ
১৯৮১জসিম উদ্দিন সরকারবাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরআবদুল গাফফারবাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির
১৯৯০নাজিম উদ্দিনজাতীয় ছাত্রলীগআজিম উদ্দিনবাসদ ছাত্রলীগ
শেয়ার করতে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *