:: নাগরিক নিউজ ডেস্ক ::
আবগারি দুর্নীতি মামলায় জামিন পেয়েছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। বৃহস্পতিবার তাঁকে জামিন দিলেন দিল্লির রউস এভিনিউ আদালতের অবকাশকালীন বিচারক ন্যায় বিন্দু।
শুক্রবার তিহাড় কারাগার থেকে মুক্তি পাবেন তিনি। সেখানে জামিনের নির্দেশ পৌঁছনোর পর শুরু হবে প্রক্রিয়া। তার আগে জামিনের বন্ড হিসাবে কেজরিকে দিতে হবে এক লক্ষ টাকা। আদালতের রায়ের পরেই তার সরকারি বাসভবনের সামনে জড়ো হন আম আদমি পার্টির কর্মী-সমর্থকেরা। বাজি পোড়াতে শুরু করেন তাঁরা।
কেজরিওয়ালের আইনজীবী দাবি করেছেন, তার বিরুদ্ধে মদ নীতি মামলায় দোষী সাব্যস্ত করার মতো কোনো প্রমাণ পায়নি এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)।
গত ২১ মার্চ আম আদমি পার্টির (এএপি) প্রধান নেতাকে তার বাসভবন থেকে গ্রেফতার করা হয়। দেশটির লোকসভা নির্বাচনের মাত্র কয়েক সপ্তাহ আগে নয়াদিল্লির রাজনীতিতে এমন চমকপ্রদ ঘটনা দেখা যায়।
স্বাধীন ভারতের ইতিহাসে প্রথম ক্ষমতাসীন মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে কেজরিওয়াল গ্রেফতার হয়েছিলেন। যদিও তার রাজনৈতিক দল এএপি জানিয়েছিল, গ্রেফতার হলেও কেজরিওয়াল দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে থাকবেন।
বৃহস্পতিবার আদালতে কেজরীর আইনজীবী সওয়াল করে বলেন, ‘‘যাঁরা নিজেদের দোষ স্বীকার করেছেন, তাঁদের বয়ানই নেওয়া হয়েছে। তাঁরা কেউ সাধু নন। তাঁরা শুধু দাগি নন, মনে হচ্ছে, ধৃতদের অনেককে জামিন এবং ক্ষমাপ্রদানের প্রতিশ্রুতিও দেওয়া হয়েছে। আর কেউ কেউ রয়েছেন, যাঁদের গ্রেফতারই করা হয়নি।’’ এই সওয়ালের পর রায়দান স্থগিত রেখেছিল রউস এভিনিউ আদালত। তার পরেই বৃহস্পতিবার রাত ৮ টা নাগাদ জামিনের রায় দিলেন বিচারক।
ইডি আদালতে দাবি করেছিলে, তেলঙ্গানার একটি দল দিল্লিতে আবগারি লাইসেন্স পাওয়ার জন্য ষড়যন্ত্র করেছে। তাদের ‘দক্ষিণের গোষ্ঠী’ বলে উল্লেখ করেছে তারা। সেই দাবি উড়িয়ে দিয়েছেন কেজরীর আইনজীবী। তিনি আদালতে সওয়াল করে বলেন, ‘‘দক্ষিণের গোষ্ঠীর থেকে ১০০ কোটি টাকা এসেছে, এ রকম কোনও প্রমাণ নেই। এগুলো সব বয়ান। এর কোনও প্রমাণ নেই।’’
‘আবগারি দুর্নীতিকাণ্ডে’ গত ২১ মার্চ কেজরীকে গ্রেফতার করেছিল ইডি। তিনি দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দেননি। এর ফলে তিনিই দেশের ইতিহাসে প্রথম মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন, যিনি পদে থাকাকালীন গ্রেফতার হয়েছেন। জেলে বসেই দিল্লির সরকার পরিচালনা করেছেন কেজরী। কিছু দিন আগে লোকসভা নির্বাচনের আবহে প্রচারের জন্য তাঁকে জামিন দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। ২১ দিনের অন্তর্বর্তী জামিন পেয়েছিলেন তিনি। জেলের বাইরে বেরিয়ে প্রচারও করেছেন আপের হয়ে। তার পর ২ জুন আদালতের নির্দেশ মেনে আবার তিহাড় জেলে ফিরে গিয়েছেন। অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে জামিনের মেয়াদ বৃদ্ধির আবেদন জানিয়েছিলেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু শীর্ষ আদালত তা খারিজ করে দেয়। এ বার তাঁকে জামিন দিল দিল্লির রউস এভিনিউ আদালত।
ইডির অভিযোগ, ২০২১-২২ সালে দিল্লির আবগারি নীতির খসড়া তৈরির সময় টাকা তছরুপ হয়েছে। পরে উপরাজ্যপাল সেই নীতি বাতিল করে দেন। ইডির অভিযোগ, মদ ব্যবসায়ীদের থেকে টাকা নিয়ে তাঁদের নতুন নীতিতে সুবিধা পাইয়ে দিতে চাইছিলেন কেজরীওয়াল। সেই টাকা গোয়ার বিধানসভা নির্বাচনে আপের প্রচারে খরচ করেছিলেন তিনি।