■ নাগরিক প্রতিবেদন ■
সারাদেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে একদিনে ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে, যা চলতি বছরে একদিনে সর্বোচ্চ। আলোচ্য সময়ে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৯৬৬ জন। এ নিয়ে চলতি বছর ডেঙ্গুতে মৃতের সংখ্যা ৩১০ জনে দাঁড়িয়েছে ও আক্রান্ত হয়েছেন ৬৩ হাজার ১৬৫ জন।
শনিবার (২ নভেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত ডেঙ্গু বিষয়ক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত ৯৬৬ জনের মধ্যে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন এলাকার বাসিন্দা ৪৫২ জন। এছাড়া ঢাকা বিভাগে ১৬৯ জন, বরিশালে ১২৫ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৭১ জন, খুলনায় ৮১ জন, ময়মনসিংহে ৪০ জন, রংপুরে ২ জন, সিলেটে ৫ জন ও রাজশাহীতে ২১ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
ডেঙ্গুতে মারা যাওয়া ১০ জনের মধ্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের বাসিন্দা চারজন, ঢাকা বিভাগের একজন, বরিশাল বিভাগের তিনজন, খুলনা বিভাগের একজন ও ময়মনসিংহ বিভাগের একজন রয়েছেন।
চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে গতকাল শুক্রবার পর্যন্ত সারাদেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৬৩ হাজার ১৬৫ জন। তাদের মধ্যে ৬৩ দশমিক ২ শতাংশ পুরুষ এবং ৩৬ দশমিক ৮ শতাংশ নারী।
২০২৩ সালে ডেঙ্গুতে মৃতের সংখ্যা ছিল ১৭০৫ জন।
২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন রোগী ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ২০০০ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত ২৩ বছরে ডেঙ্গুতে মৃত্যু ৮৬৮ জনের। এ সময়ে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে ২ লাখ ৪৩ হাজার ৭৪৮ জন। ২০২৩ সালে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে ১ হাজার ৭০৫ জন। ২৩ বছরে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে যত মানুষ মারা গিয়েছিল, শুধু ২০২৩ সালেই তার প্রায় দ্বিগুণ মানুষের মৃত্যু হয়েছে এ রোগে।
দেশের প্রথম ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয় ২০০০ সালে। ওই বছর ৫ হাজার ৫৫১ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়, আর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ৯৩ জনের মৃত্যু হয়।
২০০০ সালের পরে ডেঙ্গুতে আক্রান্তের সংখ্যা ও মৃত্যু ধীরে ধীরে কমে এলেও ২০১৯ সালে ডেঙ্গুতে ভয়াবহ পরিস্থিতি অতিক্রম করে দেশ। ২০১৯ সালে ১ লাখেরও বেশি মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়, আর মৃত্যু হয় ১৭৯ জনের।
২০২০ সালে করোনার প্রকোপের মধ্যে ডেঙ্গুর সংক্রমণ কম ছিল। ২০২০ সালে ডেঙ্গুতে মারা যায় ৭ জন, ২০২১ সালে ১০৫ জন এবং ২০২২ সালে ২৮১ জনের মৃত্যু হয়।
ঢাকার তুলনায় এর বাইরে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ২০২৩ সালে ছিল দ্বিগুণের বেশি। সারা দেশের মৃত্যুর ৫৮ শতাংশই ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনের।