■ মুজতবা খন্দকার ■
বিএনপি ড. ইউনূসের দেখা করতে সময় চেয়ে এক সপ্তাহ ধরে ঘুরছে। কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার সাক্ষাত পাচ্ছে না। অন্যদিকে জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম সকালে শুনলেন, প্রধান উপদেষ্টা গোসসা করে পদ ছাড়তে চাইছেন। শোনামাত্র দিলেন ফোন। সন্ধ্যায় তিনি গোসসা ভাঙাতে ডক্টর সাহেবের খাস কামরায় হাজির হলেন! ওদিকে ভিউ ব্যবসায়ীরা তার স্বরে চিৎকার করে বলতেসে যে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নাকি বিএনপির কারনে পদত্যাগ করতে চেয়েছিল। কি বুঝলেন?
বিএনপি কেন ইউনূসের পদত্যাগ চাইবে? এতে বিএনপির লাভ কি? বরং বিএনপিই সব সময় অন্তর্বর্তী সরকারকে আগলে রেখে শুরুর দিন থেকেই। বিএনপি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহম্যান প্রথম দিনের ভাষন থেকে যতবার তিনি কথা বলেছেন, ততবার তিনি এই সরকারকে সহযোগিতা করার কথা বলেছেন। তাহলে কেন সব দোষ বিএনপির ঘাড়ে চাপাতে চাইছেন কেন ওরা।
বরং অন্তর্বর্তী সরকার যতটুকু বিতর্কিত হয়েছে তার অনেক খানি দায় নয়া বন্দোবস্তের শ্লোগানে সদ্য প্রতিষ্ঠিত দল এনসিপির।
দিকে দিকে মব ভায়োলেন্স কারা করছে? অন্তর্বর্তী সরকার চলমান থাকার সময়, সরকার ও প্রশাসন এমনকি রাষ্ট্রের বিভিন্ন অর্গানে গিয়ে বিশৃঙ্খলা কারা করছে। সচিবালয় গিয়ে তদবির বানিজ্য কারা করছে।
ড. ইউনূস, আপনি ব্যর্থ হলে শুধু তিনি একাই ব্যর্থ হবেন না। পুরো বাংলাদেশ ব্যর্থ হবে। সুতরাং আপনাকে ব্যর্থ হওয়া চলবে না। প্রয়োজনে বিদেশি পাসপোর্টধারী উপদেষ্টাদের বাদ দিয়ে দেশ ও দেশের মানুষের সাথে যাদের সম্পর্ক আছে তেমন মানুষদের নিয়ে নতুন উদ্যমে শুরু করতে হবে। হতে সময় কিন্ত খুব কম। এবারে আপনি পা হড়কালে পুরো বাংলাদেশই খাদে পড়বে। ড. মুহাম্মদ ইউনূস আপনাকে সফল হতেই হবে
বিএনপি তো কোথাও নেই, তাহলে?
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান নিয়োগ দেয়া ইসি। সেই ইসির সামনে গিয়া এনার্কি কারা করছে?
সব কিছুতে বিএনপির দোষ খোজা ছিলো ফ্যাসিবাদী হাসিনা ও লস্করদের মজ্জাগত স্বভাব। সেই একই ভুত দেখি ভর করেছে এনসিপি নেতাদের ঘাড়ে। যদিও অনেকে বলেন জুলাইয়ের ১৫ তারিখের আগেও এই দলের অনেক নেতার মুখের ভাষা না কি ছিলো, প্রিয় আপা কিম্বা জননেত্রী।
ইউনূসের যদি সরকার চালাতে কোনো সমস্যা হয়ে থাকে তবে তিনি কেন বিএনপিসহ সব বড় দলকে ডেকে কথা বললেন না? তাদেরকে বলতেন, আপনারা যদি আমাকে সহযোগিতা না করেন, তবে আমি থাকবোনা। তিনি তো সেটা করেননি। বরং বিএনপি তার সাথে দেখা করতে চাইলেও তিনি তাদের এড়িয়ে চলছিলেন। তাহলে, তার গোসসা, অভিমানের সাথে বিএনপির সস্পর্কটা কি?
ইউনূসের এখন পিছু হটার সুযোগ নেই। তাকে সফল হতে হবে। প্রয়োজনে তাকে তার উপদেষ্টা পরিষদ পুনর্গঠন করে ডিসেম্বরকে টার্গেট করে একটি গ্রহনযোগ্য আন্তর্জাতিক মানের একটি নির্বাচন করতে যা করনীয় তাই করতে হবে। এখানে যদি কিন্তুর কোনো সুযোগ নেই।
আর রাজপাট পরিচালনায় মান অভিমানের কোনো সুযোগ নেই। আপনাকে রুল করতে হবে। আরো ঋজু হতে হবে।
ড. ইউনূস, আপনি ব্যর্থ হলে শুধু তিনি একাই ব্যর্থ হবেন না। পুরো বাংলাদেশ ব্যর্থ হবে। সুতরাং আপনাকে ব্যর্থ হওয়া চলবে না। প্রয়োজনে বিদেশি পাসপোর্টধারী উপদেষ্টাদের বাদ দিয়ে দেশ ও দেশের মানুষের সাথে যাদের সম্পর্ক আছে তেমন মানুষদের নিয়ে নতুন উদ্যমে শুরু করতে হবে। হতে সময় কিন্ত খুব কম। এবারে আপনি পা হড়কালে পুরো বাংলাদেশই খাদে পড়বে। ড. মুহাম্মদ ইউনূস আপনাকে সফল হতেই হবে
লেখক: যুগ্ম প্রধান বার্তা সস্পাদক, এনটিভি