■ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি ■
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে ২৯ জুলাই। ডাকসু নির্বাচনের নির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণা না হলেও সেপ্টেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে ভোটগ্রহণ হতে পারে বলে জানানো হয়েছে।
রোববার (২০ জুলাই) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে আলোচনা সভা শেষে এ ঘোষণা দেন নির্বাচনের চিফ রিটার্নিং কর্মকর্তা ও উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন।
এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠনগুলো ও বাস রুটের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের সঙ্গে ডাকসু নিয়ে আলোচনা সভা করে নির্বাচন কমিশন।
চিফ রিটার্নিং কর্মকর্তা ও উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন বলেন, ডাকসুর তফসিল ঘোষণার অফিসিয়াল তারিখ ২৯ জুলাই। আমরা এ সিদ্ধান্ত থেকে এক পাও পিছপা হবো না। তফসিল ঘোষণার পর নির্বাচন সম্পন্ন করার জন্য প্রয়োজনীয় সব ধাপ যথাযথভাবে অনুসরণ করা হবে। এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে আমাদের প্রায় ৪০ থেকে ৪৫ দিনের প্রয়োজন হবে, আমরা এর বাইরে যাব না।
এর আগে, গত ১৭ জুন ডাকসু নির্বাচনের জন্য ১০ সদস্যের নির্বাচন কমিশন গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ জসীম উদ্দিনকে প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তা করা হয়। সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়।
প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তাকে সাহায্য করতে ৯ জন রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। তাঁরা হলেন মৃত্তিকা, পানি ও পরিবেশ বিভাগের অধ্যাপক এ এস এম মহিউদ্দিন, সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক গোলাম রব্বানী, তথ্যবিজ্ঞান ও গ্রন্থাগার ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধ্যাপক কাজী মোস্তাক গাউসুল হক, উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক কাজী মারুফুল ইসলাম, স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক নাসরিন সুলতানা, ব্যাংকিং অ্যান্ড ইন্স্যুরেন্স বিভাগের অধ্যাপক মো. শহিদুল ইসলাম জাহিদ, বাংলা বিভাগের অধ্যাপক তারিক মনজুর, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক এস এম শামীম রেজা এবং শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক শারমীন কবীর।
সদস্য পদ, ভোটার ও প্রার্থী হওয়ার যোগ্যতা ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনে ভোটার ও প্রার্থী হতে হলে শিক্ষার্থীকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পূর্ণকালীন শিক্ষার্থী হতে হবে। এ জন্য শিক্ষার্থীকে ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে স্নাতক প্রথম বর্ষে ভর্তি হয়ে স্নাতক, মাস্টার্স বা এম ফিল প্রোগ্রামে অধ্যয়নরত এবং কোনো আবাসিক হলে অবস্থানরত বা সংযুক্ত হতে হবে।
সন্ধ্যাকালীন কোর্স, পেশাদার বা এক্সিকিউটিভ মাস্টার্স, ডিপ্লোমা, সার্টিফিকেট ও ভাষা কোর্সে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরা ভোটার বা প্রার্থী হওয়ার যোগ্য হবেন না। একইভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত ও সংযুক্ত কলেজ/ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরাও নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না।
হালনাগাদ করা গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ছাত্র সংসদ নির্বাচনে নতুন করে তিনটি সম্পাদকীয় পদ সংযোজন করা হয়েছে। সেগুলো হলো গবেষণা ও প্রকাশনা সম্পাদক, ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট সম্পাদক, স্বাস্থ্য ও পরিবেশ সম্পাদক এবং মানবাধিকার ও আইনবিষয়ক সম্পাদক।
প্রতিটি আবাসিক হলে অথবা ক্যাম্পাসের ভেতরে উপযুক্ত কোনো স্থানে ভোটকেন্দ্র স্থাপন করা হবে। সংশ্লিষ্ট হলে সংযুক্ত শিক্ষার্থীরা নির্ধারিত বুথে ভোট দেবেন।
নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পর তিন কর্মদিবসের মধ্যে কেউ আপত্তি জানালে তা উপাচার্যের কাছে দাখিল করা যাবে এবং এ বিষয়ে তাঁর সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলে গণ্য হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে আচরণবিধি ভঙ্গ করলে প্রার্থিতা বাতিল ও ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। সেই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার কিংবা প্রয়োজনে রাষ্ট্রীয় ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ থাকছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটে পাস হওয়া ‘ডাকসু ও হল সংসদ বিধিমালা ২০২৫’—এ এসব বিধান বলা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের আচরণবিষয়ক কমিটির দেওয়া সুপারিশ সিন্ডিকেট সভায় উত্থাপন করা হয়। কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে বেশ কিছু বিধি চূড়ান্ত করেছে সিন্ডিকেট।
বিধি অনুযায়ী, প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র সংগ্রহ এবং দাখিলের সময় কোনো ধরনের মিছিল বা শোভাযাত্রা করা যাবে না। প্রার্থী পাঁচজনের বেশি সমর্থক নিয়ে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও জমা দিতে যেতে পারবেন না। মনোনয়নপত্র দাখিল ও প্রার্থিতা প্রত্যাহারের সময় অন্য কোনো প্রার্থী বা ব্যক্তি, গোষ্ঠী কিংবা কোনো ছাত্রসংগঠনের কেউ কোনো ধরনের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে পারবেন না। যানবাহন ব্যবহার করে শোডাউন বা মিছিল করা এবং কোনো ভোটারকে আনা-নেওয়া করা যাবে না। তবে রিকশা অথবা সাইকেল ব্যবহার করা যাবে।
প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত হওয়ার দিন থেকে নির্বাচনের দিনের ২৪ ঘণ্টা আগ পর্যন্ত প্রচার চালানো যাবে। তবে এ সময়ের মধ্যে প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত প্রচার চালাতে হবে। রাত ১০টার পর প্রচারে মাইক ব্যবহার করা যাবে না। ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনের ভোটার ও প্রার্থী ছাড়া অন্য কেউ কোনোভাবে কোনো প্রার্থীর পক্ষে বা বিপক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্রচার চালাতে পারবে না।
বিধিতে আরও বলা হয়েছে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার চালানো যাবে। তবে সেটা হতে হবে আইনসিদ্ধ আর ইতিবাচক পদ্ধতিতে। এ ক্ষেত্রে দেশের প্রচলিত আইনে নিষিদ্ধ কোনো কাজ করা যাবে না। সেই সঙ্গে ব্যক্তিগত আক্রমণ, চরিত্রহনন, গুজব ও অসত্য তথ্য ছড়ানো থেকেও বিরত থাকতে হবে।
আরও বলা হয়েছে, সভা-সমাবেশ করার অনুমতি অন্তত ২৪ ঘণ্টা আগে নিতে হবে। একজন প্রার্থী বা তাঁর গ্রুপের পক্ষে প্রতিটি হলে একটি এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনটি প্রজেকশন মিটিং করতে পারবেন। হলের ভেতরে কিংবা ক্যাম্পাসে চিফ রিটার্নিং কর্মকর্তা/রিটার্নিং কর্মকর্তাদের অনুমোদিত স্থান ছাড়া কোনো সভা, সমাবেশ বা শোভাযাত্রা করা যাবে না।
এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সাধারণ মানুষ ও শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি করতে পারে—এমন সড়কে সমাবেশ না করা, এমনকি কোনো মঞ্চ তৈরি না করার বিধি রাখা হয়েছে।
সর্বশেষ ২০১৯ সালে অনুষ্ঠিত ডাকসু নির্বাচনে ‘বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ’ প্যানেলের নুরুল হক নুর ১১ হাজার ৬২ ভোট পেয়ে সহ-সভাপতি (ভিপি) পদে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী সম্মিলিত শিক্ষার্থী সংসদের ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন পেয়েছেন ৯ হাজার ১২৯ ভোট। এছাড়া জিএস পদে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী ১০ হাজার ৪৮৪ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। এজিএস পদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সম্মিলিত শিক্ষার্থী সংসদ মনোনীত প্রার্থী সাদ্দাম হোসেন ডাকসুর ইতিহাসের সর্বোচ্চ ভোট (১৫,৩০১) পেয়ে নির্বাচিত হন। এছাড়াও একমাত্র ভিপি এবং সমাজসেবা বিষয়ক সম্পাদকের পদ ছাড়া মোট ২৫ টি পদের মধ্যে ২৩ টি পদেই বাংলাদেশ ছাত্রলীগ সমর্থিত এবং সম্মিলিত শিক্ষার্থী সংসদ মনোনীত প্রার্থীগণ বিজয়ী হন।
উল্লেখ্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ১৯২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ’ নামে প্রতিষ্ঠিত হয়।পরবর্তীতে ১৯৫৩ সালে গঠনতন্ত্র সংশোধনের মাধ্যমে পূর্বনাম পরিবর্তন করে বর্তমান নাম ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ’ গ্রহণ করা হয়। ঢাবি কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদকে বাংলাদেশের দ্বিতীয় সংসদ বলা হয়। বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক চেতনা ও স্বাধিকার আন্দোলনের অন্যতম সূতিকাগার হল এই ছাত্র সংসদ। প্রতিষ্ঠাকালীন সময় থেকেই বাংলাদেশের সামগ্রিক ইতিহাসে গৌরবময় ভূমিকা রাখে এই ছাত্র সংসদ। ৫২’র ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে পরবর্তীতে ৬২’র শিক্ষা আন্দোলন, ৬৯-এর গণ অভ্যুত্থান, ৭১-এর স্বাধীন বাংলাদেশ নির্মাণের লক্ষ্যে রক্তক্ষয়ী জাতীয় মুক্তি সংগ্রাম এবং পরবর্তীতে স্বাধীন বাংলাদেশে স্বৈরাচার ও সামরিকতন্ত্রের বিপরীতে দাঁড়িয়ে গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গঠনে সাহায্য করেছে ঢাবি কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ।
১৯২২ সালের ১লা ডিসেম্বর কার্জন হলে অনুষ্ঠিত শিক্ষকদের একটি সভায় ১৯২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ’ নামে একটি ছাত্র সংসদ গঠনের সিদ্ধান্ত হয়। ১৯২৩ সালের ১৯শে জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন নির্বাহী পরিষদ পূর্বোল্লিখিত শিক্ষক সভার সিদ্ধান্তকে অনুমোদন দেয়। ১৯২৫ সালের ৩০ অক্টোবর সংসদের সাধারণ সভায় খসড়া গঠনতন্ত্র অনুমোদন করা হয়। পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাহী পরিষদ অনুমোদন করলে তা কার্যকর হয়। প্রথমবার ১৯২৪-২৫ সালে সম্পাদক ছিলেন যোগেন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত, পরের বছর অবনীভূষণ রুদ্র। ১৯২৯-৩০ সালে সম্পাদক নির্বাচিত হন আতাউর রহমান খান।
পরবর্তীতে ১৯৫৩-৫৪ শিক্ষাবর্ষে গঠনতন্ত্র সংশোধনের মাধ্যমে পূর্বনাম পরিবর্তন করে বর্তমান নাম ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ’ গ্রহণ করা হয়। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭২ সালের ডাকসুর সহসভাপতি হিসেবে নির্বাচিত হন বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন থেকে মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম এবং সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন মাহবুবুর জামান। সর্বশেষ ১৯৯০-৯১ সেশনের জন্য সহসভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে যথাক্রমে নির্বাচিত হন ছাত্রদলের আমানউল্লাহ আমান ও খায়রুল কবির খোকন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের ১৯৯০ পর্যন্ত ৩৬ বার নির্বাচন হয়েছে।
ডাকসুতে ক্ষমতাসীন দল বিরোধী ছাত্রসংগঠন জয়ী হতে পারে—এই আশঙ্কা থেকে ৯০ পরবর্তী সরকারগুলো এ নির্বাচন অনুষ্ঠানে অনীহ ছিল। উপাচার্য একে আজাদ চৌধুরী ডাকসু নির্বাচনের উদ্যোগ নিলেও নানা মহলের চাপ ও বাধায় শেষ পর্যন্ত নির্বাচন আর হয়নি। নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার বয়স ও সুযোগ না থাকায় ক্ষমতাসীন দলের ছাত্রসংগঠনগুলোর বড় নেতাদেরও অনাগ্রহ ছিল। ক্যাম্পাসে নিয়ন্ত্রিত পরিবেশ বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা থেকে নির্বাচন অনুষ্ঠানের অর্থবহ কোনো উদ্যোগ নেয়নি সরকার–ঘনিষ্ঠ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনও। ফলে বিশ্ববিদ্যালয় ও হলগুলোয় ক্রমে ক্রমে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে সরকারি দলের ছাত্রসংগঠনের একক আধিপত্য।
উপাচার্যকে সভাপতি এবং ১৬ জন ছাত্র প্রতিনিধি থেকে ১০ জন কর্মকর্তা নির্বাচনের ব্যবস্থা রাখা হয়, কোষাধাক্ষের দায়িত্ব পালন করেন একজন শিক্ষক। ২০১৯ সালে সংশোধিত গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, পদাধিকারবলে ডাকসুর সভাপতি উপাচার্যসহ এর নির্বাহী কমিটি হবে ২৫ সদস্যবিশিষ্ট। ১৯৭৩ সালের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাদেশে ডাকসুর কথা বলা হয়েছে৷ আর ডাকসুর গঠনতন্ত্রে বলা হয়েছে, প্রতি বছর ডাকসু নির্বাচন হবে৷ কীভাবে হবে, কাদেরকে নিয়ে হবে, সেগুলো বিস্তারিত বলা আছে গঠনতন্ত্রে৷ বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে ছাত্র সংসদ আছে৷ সেখানেও সরাসরি ভোটে ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচিত হওয়ার বিধান রয়েছে৷
৫২-এর ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে পরবর্তীতে ৬২-এর শিক্ষা আন্দোলন, ৬৯-এর গণ অভ্যুত্থান, ৭১-এর স্বাধীন বাংলাদেশ নির্মাণের লক্ষ্যে রক্তক্ষয়ী জাতীয় মুক্তি সংগ্রাম এবং পরবর্তীতে ৯০-এর স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়ে গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গঠনে সাহায্য করেছে ঢাবি কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ। ডাকসুর নেতৃবৃন্দের সাহসী ও বলিষ্ঠ উদ্যোগে ১৯৭১ সালের ২রা মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহাসিক বটতলায় প্রথম স্বাধীন বাংলার পতাকা উত্তোলন করা হয়।
ডাকসু ভিপি ও জিএস তালিকা
ক্রম | সেশন | সহ সভাপতি (ভিপি) | ছাত্র সংগঠন | জেনারেল সেক্রেটারি (জিএস) | ছাত্র সংগঠন |
---|---|---|---|---|---|
০১ | ১৯২৪-২৫ | মমতাজ উদ্দিন আহমেদ | যোগেন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত | ||
০২ | ১৯২৫-২৬ | মমতাজ উদ্দিন আহমেদ | এ কে মুখার্জি (ভারপ্রাপ্ত এ বি রুদ্র) | ||
০৩ | ১৯২৭-২৮ | বি কে অধিকারী | |||
০৪ | ১৯২৮-২৯ | এএম আজহারুল ইসলাম | এস চক্রবর্তী | ||
০৫ | ১৯২৯-৩০ | রমণী কান্ত ভট্টাচার্য | কাজী রহমত আলী ও আতাউর রহমান | ||
০৬ | ১৯৩২-৩৩ | ভবেশ চক্রবর্তী | |||
০৭ | ১৯৩৩-৩৪ | ভবেশ চক্রবর্তী | |||
০৮ | ১৯৩৫-৩৬ | এ এইচ এম এ কাদের | |||
০৯ | ১৯৩৬-৩৭ | এ এইচ এম এ কাদের | |||
১০ | ১৯৩৮-৩৯ | আব্দুল আওয়াল খান | |||
১১ | ১৯৪১-৪২ | আব্দুর রহিম | |||
১২ | ১৯৪৫-৪৬ | আহমদুল কবির (ভারপ্রাপ্ত ফরিদ আহমেদ) | সুধীর দত্ত | ||
১৩ | ১৯৪৬-৪৭ | ফরিদ আহমেদ | সুধীর দত্ত | ||
১৪ | ১৯৪৭-৪৮ | অরবিন্দ বোস | গোলাম আযম | ||
১৫ | ১৯৫৩-৫৪ | এস. এ. বারী | জুলমত আলী খান (ভারপ্রাপ্ত ফরিদ আহমেদ) | ||
১৬ | ১৯৫৪-৫৫ | নিরোদ বিহারী নাগ | আব্দুর রব চৌধুরী | ||
১৭ | ১৯৫৫-৫৬ | নিরোদ বিহারী নাগ | আব্দুর রব চৌধুরী | ||
১৮ | ১৯৫৬-৫৭ | একরামুল হক | শাহ আলী হোসেন | ||
১৯ | ১৯৫৭-৫৮ | বদরুল আলম | ফজলী হোসেন | ||
২০ | ১৯৫৮-৫৯ | আবুল হোসেন | এ টি এম মেহেদী | ||
২১ | ১৯৫৯-৬০ | আমিনুল ইসলাম তুলা | আশরাফ উদ্দিন মকবুল | ছাত্র ইউনিয়ন | |
২২ | ১৯৬০-৬১ | বেগম জাহানারা আক্তার | অমূল্য কুমার | ||
২৩ | ১৯৬১-৬২ | এস এম রফিকুল হক | এনায়েতুর রহমান | ||
২৪ | ১৯৬২-৬৩ | শ্যামাপ্রসাদ ঘোষ | কে এম ওবায়েদুর রহমান | ছাত্রলীগ | |
২৫ | ১৯৬৩-৬৪ | রাশেদ খান মেনন | ছাত্র ইউনিয়ন | মতিয়া চৌধুরী | ছাত্র ইউনিয়ন |
২৬ | ১৯৬৪-৬৫ | বোরহানউদ্দিন | ছাত্র ইউনিয়ন | আসাফউদ্দৌলা | |
২৭ | ১৯৬৬-৬৭ | ফেরদৌস আহমেদ কোরেশী | ছাত্রলীগ | শফি আহমেদ | |
২৮ | ১৯৬৭-৬৮ | মাহফুজা খানম | ছাত্র ইউনিয়ন | মোরশেদ আলী | ছাত্র ইউনিয়ন |
২৯ | ১৯৬৮-৬৯ | তোফায়েল আহমেদ | ছাত্রলীগ | নাজিম কামরান চৌধুরী | |
৩০ | ১৯৭০-৭১ | আ স ম আবদুর রব | ছাত্রলীগ | আব্দুল কুদ্দুস মাখন | ছাত্রলীগ |
৩১ | ১৯৭২-৭৩ | মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম | ছাত্র ইউনিয়ন | মাহবুব জামান | ছাত্র ইউনিয়ন |
৩২ | ১৯৭৯-৮০ | মাহমুদুর রহমান মান্না | জাসদ ছাত্রলীগ | আখতারুজ্জামান | বাসদ ছাত্রলীগ |
৩৩ | ১৯৮০-৮১ | মাহমুদুর রহমান মান্না | জাসদ ছাত্রলীগ | আখতারুজ্জামান | বাসদ ছাত্রলীগ |
৩৪ | ১৯৮২-৮৩ | আখতারুজ্জামান | বাসদ ছাত্রলীগ | জিয়া উদ্দীন আহমেদ বাবলু | বাসদ ছাত্রলীগ |
৩৫ | ১৯৮৯-৯০ | সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমদ | ছাত্রলীগ | মুশতাক হোসেন | |
৩৬ | ১৯৯০-৯১ | আমানউল্লাহ আমান | ছাত্রদল | খায়রুল কবির খোকন | ছাত্রদল |
৩৭ | ২০১৯-২০ | নুরুল হক নুর | সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ | গোলাম রব্বানী | ছাত্রলীগ |