■ নাগরিক প্রতিবেদক ■
ভোটার সংখ্যাসহ সামগ্রিক বিষয় বিবেচনায় রেখে দেশের ৩০০ সংসদীয় আসনে ১৪ জেলায় ৩৯টির সীমানা পরিবর্তন আসছে। বুধবার (৩০ জুলাই) সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার (ইসি) আনোয়ারুল ইসলাম সরকার।
নির্বাচন কমিশনের বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে গঠিত বিশেষায়িত কারিগরি কমিটি সংসদীয় আসনের সীমানা পুনরায় নির্ধারণে সুপারিশ জমা দিয়েছে জানিয়ে আনোয়ারুল ইসলাম সরকার বলেন, ‘সীমানা পুনর্নির্ধারণ আইন ২০২১ সেই ২১-এর ৬ ধারায় বলা হয়েছে, সীমানা নির্ধারণের ক্ষেত্রে প্রশাসনিক ব্যবস্থা ভৌগোলিক অখণ্ডতা এবং আদমশুমারি এ তিনটি বিষয়কে গুরুত্ব দিয়ে এই সীমানাটা নির্ধারণ করতে হবে। তবে আদমশুমারি ২০২২ অনুযায়ী, কিছু বিষয় আছে একটু অসামঞ্জস্যপূর্ণ। আমাদের কাছে আছে হালনাগাদ ভোটার সংখ্যা। এ ছাড়া আমাদের ভোটার তালিকার ভিত্তিতে, ভোটার সংখ্যার ভিত্তিতে কমিটি এভারেজ আসনভিত্তিক ভোটার সংখ্যা নির্ধারণ করেছে। তা হলো, ৪ লাখ ২০ হাজার সামথিং, অর্থাৎ ৩০০ আসনের এবার ভোটার সংখ্যা হলো ৪ লাখ ২০ হাজার। উনারা ভোটারের সংখ্যার ভিত্তিতে একটা গ্রেডিং করেছেন, সেটি হচ্ছে সবচেয়ে বেশি ভোটার কোন জেলায় এবং সবচেয়ে কম ভোটার কোন জেলায়।’
সারা দেশে ৩৯টি আসনে পরিবর্তন আসছে জানিয়ে ইসি আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ১০ আগস্ট পর্যন্ত এ বিষয়ে দাবি আপত্তি নেয়া হবে।
সীমানা নির্ধারণে আগে যেসব বিষয়ে গুরুত্ব দিতে হয়, তা জানিয়ে কমিশনার বলেন, সংবিধানের ১১৯-১২৪ ধারা অনুযায়ী জাতীয় নির্বাচনে সীমানা নির্ধারণ করার দায়িত্ব কমিশনের। এই সীমানা নির্ধারণে কিছু বিশেষজ্ঞদের মতামত নেওয়া হয়। ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশ নেওয়া হয়। একটা বিশেষজ্ঞ টিম গঠন করা হয়। নানা বিষয় গুরুত্ব দিয়ে সীমানা নির্ধারণ করা হয়। ২০২২ সালের জনশুমারির কিছু তথ্য নেওয়া হয়।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সীমানা নির্ধারণ বিষয়ে তিনি বলেন, সীমানা পুনঃনির্ধারণের গেজেট প্রকাশের অনুমতি দিয়েছে ইসি। আগামীকালের মধ্যে প্রকাশ হবে।
এই কমিশনার বলেন, সীমানা নির্ধারণে ইসি ১৬ জুলাই ৯ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি করেছিল। তারা ভোটারের সংখ্যা অনুযায়ী গ্রেডিং করেছেন। ১, ২, ৩ আসনবিশিষ্ট জেলাকে ভাঙার সুযোগ নেই। এসব জেলার সীমানা বৃদ্ধি বা হ্রাসের বিবেচনায় নেওয়া হয়নি।
২৫০-এর কাছাকাছি জেলার সীমানা পুনর্নির্ধারণে আবেদন ছিল না। তাই এসব জায়গায় পরিবর্তন করা হয়নি বলেও জানান আনোয়ারুল ইসলাম।
ইসি আনোয়ারুল বলেন, ‘কারিগরি কমিটি ফাইন্ড আউট করেছেন যে, সবচেয়ে বেশি ভোটার যে জেলায়, সেই জেলায় একটি আসন উনারা বাড়ানোর প্রস্তাব করেছেন এবং সর্বনিম্ন ভোটার যে জেলায়, সেই জেলায় একটি আসন কমানোর প্রস্তাব করেছে। সেই আলোকে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
এদিকে টেকনিক্যাল কমিটির তথ্যানুযায়ী, সর্বোচ্চ ভোটার হচ্ছে গাজীপুর। আর বাগেরহাট জেলায় সবচেয়ে কম। মানে বিশেষায়িত কমিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী তারা ভোটার সংখ্যা এবং জনসংখ্যা অ্যানালাইসিস করে তাদের প্রস্তাব হচ্ছে যে বাগেরহাট একটি আসন কমবে, গাজীপুরে জনসংখ্যা ও ভোটারের সংখ্যার ভিত্তিতে একটি আসন বৃদ্ধি পাবে।
যেসব আসনের সীমানায় পরিবর্তন আসছে পঞ্চগড়-১, ২, রংপুর-৩, সিরাজগঞ্জ-১, ২ সাতক্ষীরা-৩, ৪, শরীয়তপুর- ২, ৩, ঢাকা-২, ৩, ৭, ১০, ১৪, ১৯, গাজীপুর-১, ২, ৩, ৫, ৬, নারায়ণগঞ্জ-৩, ৪, ৫, সিলেট-১, ৩, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২, ৩, কুমিল্লা-১, ২, ১০, ১১, নোয়াখালী-১, ২, ৪, ৫, চট্টগ্রাম-৭, ৮ ও বাগেরহাট-২, ৩, আসনের সীমানা পরিবর্তন করা হয়েছে