■ নাগরিক প্রতিবেদন ■
ব্যবসায়ীদের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে সয়াবিন ও পাম তেলের দাম বাড়ানোর বিষয়ে বৈঠক করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, ট্যারিফ কমিশন ও ব্যবসায়ীরা। ভোজ্যতেল পরিশোধনকারী কোম্পানিগুলো লিটারে ১০ টাকা বাড়াতে চায়। তবে সরকার এক টাকা বাড়ানোর অনুমতি দিয়েছে। বৈঠক শেষ হয়েছে সিদ্ধান্ত ছাড়াই।
সোমবার সচিবালয়ে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে দেশের ভোজ্যতেল পরিশোধন ও বিপণনকারীদের সংগঠন বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্যসচিব মাহবুবুর রহমান ও বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের কর্মকর্তারা।
বাণিজ্যসচিব সাংবাদিকদের বলেন, ‘ব্যবসায়ীরা দাম বাড়ানোর যে প্রস্তাব দিয়েছে, তা আন্তর্জাতিক বাজারের তুলনায় অনেক বেশি। আমরা পর্যালোচনা করছি। তারপর তাদের সঙ্গে আবার আলোচনা করে ভোজ্যতেলের দাম কত বাড়ানো হবে, সে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন টি কে গ্রুপের পরিচালক (ব্র্যান্ড) শফিউল আতহার তসলিম। জানতে চাইলে আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, বৈঠকে দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে, তবে কত বাড়বে, তা নিয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, গত সপ্তাহে সয়াবিন ও পাম অয়েলের দাম লিটারে ১০ টাকা বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছিলেন পরিশোধনকারী মিলমালিকেরা। তাঁদের যুক্তি হলো—সম্প্রতি আন্তর্জাতিক বাজারে ১৮-২০ শতাংশের মতো তেলের দাম বেড়েছে; প্রতি টন সয়াবিন তেলের দাম ১ হাজার ২০০ ডলার ছুঁয়েছে। পাম অয়েলেরও দাম বাড়ার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। এ কারণে দাম সমন্বয়ের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
তবে আজকের বৈঠকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় মাত্র এক টাকা দাম বাড়ানোর অনুমোদন দিয়েছে। যদিও ট্যারিফ কমিশনের পর্যবেক্ষণে প্রতি লিটার সয়াবিন তেলের দাম সাড়ে চার টাকা ও পাম তেলের দাম সাত টাকা বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে।
বৈঠকে উপস্থিত বাংলাদেশ এডিবল অয়েল কোম্পানির হেড অব ফিন্যান্স দাবিরুল ইসলাম বলেন, “অনেক কিছুই আলোচনা হয়েছে। তবে আমরা এখনও সিদ্ধান্ত নিতে পারিনি। আরও কিছুদিন সময় লাগবে।”
তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একটি কোম্পানির প্রতিনিধি বলেন, ট্যারিফ কমিশন থেকে প্রায় ৪ টাকা বাড়ানোর সুপারিশ এসেছে। কিন্তু মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে দামটা আরেকটু কম রাখার কথা বলা হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে বৈঠকে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
তবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানান, ভোজ্যতেলের দাম কত বাড়ানো যাবে, সেটা ব্যবসায়ীদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। এখন দাম ঘোষণা করার দায়িত্ব মিল মালিকদের।
এর আগে গত ১৩ এপ্রিল সয়াবিন তেলের দাম ১৮৯ টাকা ও পাম তেলের দাম ১৬৯ টাকা নির্ধারণ করে দিয়েছিল বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। পরে গত ১২ আগস্ট প্রতি লিটার পাম তেলের দাম ১৯ টাকা কমিয়ে ১৫০ টাকা নির্ধারণ করে দেয় এবং সয়াবিন তেলের দাম অপরিবর্তিত রাখা হয়।
জানা গেছে, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ১৫ সেপ্টেম্বর এক প্রজ্ঞাপনে সয়াবিন, সানফ্লাওয়ার, পাম ও ভুট্টার তেল আমদানিতে এক শতাংশ উৎসে কর বসিয়েছে, যা ভোজ্যতেলের দামে প্রভাব ফেলছে বলেও জানান ব্যবসায়ীরা।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, ট্যারিফ কমিশন, শফিউল আতহার তসলিম, পাম অয়েলের দাম, সয়াবিন তেলের দাম