■ নাগরিক প্রতিবেদক ■
পল্টন মডেল থানার মকবুল হত্যা মামলায় সাবেক গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।
রোববার (২৭ অক্টোবর) ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে শুনানি শেষে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. জিয়াদুর রহমানের আদালত এ আদেশ দেন।
এর আগে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পল্টন মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) নাজমুল হাচান সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে তদন্ত কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত আসামিকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন।
এ সময় আসামির জামিন চেয়ে শুনানি করেন তার পক্ষের আইনজীবী খোরশেদ আলম আজাদ। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ওমর ফারুক ফারুকী জামিন আবেদনের ঘোর বিরোধিতা করে আসামিকে কারাগারে পাঠানোর প্রার্থনা করেন। উভয়পক্ষের যুক্তি-তর্ক শুনে এবং মামলার এজহারের গুণাগুণ বিবেচনা করে আদালত ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এদিন দুপুরে ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনকে রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে গ্রেফতার করে ডিএমপির গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) একটি দল।
মামলার এজহার থেকে জানা যায়, ২০২২ সালের ১০ ডিসেম্বর বিএনপির ডাকা সরকার পতনের একদফা দাবি আদায়ের কর্মসূচি ঘিরে নেতাকর্মীরা সমাবেশের কয়েক দিন আগে থেকে রাজধানীর নয়াপল্টন এলাকায় জড়ো হতে থাকলে মামলার আসামিরা সমাবেশ বানচালের চক্রান্ত করে। এর আগে ৭ ডিসেম্বর পুলিশ কর্মকর্তা হারুন অর রশীদ, মেহেদী হাসান ও বিপ্লব কুমারসহ অন্যরা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের যোগসাজশে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে প্রবেশ করে ভাঙচুর ও লুটপাট করে। আন্দোলন দমন করতে নির্বিচারে লাঠিচার্জ, ককটেল হামলা, টিয়ার শেল নিক্ষেপ, সাউন্ড গ্রেনেড বিস্ফোরণ ও গুলিবর্ষণ করা হয়। এতে বিএনপির কয়েকশ নেতাকর্মী আহত হন এবং মকবুল হোসেন নামে এক বিএনপি কর্মী গুলিবিদ্ধ হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। এ ঘটনায় ২০২৪ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর রাজধানীর পল্টন মডেল থানায় মাহফুজুর রহমান বাদী হয়ে শেখ হাসিনাসহ ২৫৬ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন।
সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর (গোয়েন্দা) পুলিশ।
এর আগে গত ২০ অক্টোবর সাবেক এই মন্ত্রীসহ ৩৫ জনের নামে একটি মামলা দায়ের করা হয়। চট্টগ্রামে যাওয়ার পথে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের গাড়ি বহরে হামলার ঘটনায় হয় এ মামলা।
ওই মামলার এজহারে উল্লেখ করা হয়, বিগত ২০২৩ সালের ৫ অক্টোবর বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপির) মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সহ কেন্দ্রীয় নেতাদের পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে রোড মার্চ করে চট্টগ্রাম যাওয়া পথে তাদের শুভেচ্ছা জানানোর জন্য বারইয়ারহাট পৌরসভার গাছ মার্কেট এলাকায় উপজেলা বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের ১০০/১৫০ জন নেতাকর্মী অবস্থান করেন। এসময় কেন্দ্রীয় নেতাদের গাড়ী পৌঁছালে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন ও তার ছেলে সাবেক সংসদ সদস্য মাহবুব রহমান রুহেল -এর নির্দেশে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন, এনায়েত হোসেন নয়ন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক একেএম জাহাঙ্গীর ভূঁইয়া, বারইয়ারহাট পৌরসভার সাবেক মেয়র রেজাউল করিম খোকনের নেতৃত্বে লোহার রড, রাম দা, কিরিচ, লাঠিসোঠাসহ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে মহাসচিবে গাড়ী বহর ও উপস্থিত নেতাকর্মীদের ওপর হামলা করে। আসামিরা ৫-৮টি গাড়ীর সামনের ও পিছনের গ্লাস ভাঙচুর করে ৫ লাখ টাকার ক্ষতি করে। হামলায় মামলার স্বাক্ষী জসিম উদ্দিন ও আলমগীর হোসেন গুরুতর আহত হন।