ফাহিম আল চৌধুরী: অবিচল কণ্ঠস্বর ও মানবতার মূর্তপ্রতীক

■ তানভীর আহমেদ ■

ফাহিম আল চৌধুরী কেবল একজন নাম নন, একটি আদর্শ—যিনি অন্যায়ের মুখে নতজানু হননি, বরং ন্যায়ের পতাকাকে উড়িয়েছেন সমাজের প্রতিটি আঁধার ভেদ করে। সাম্প্রতিক ছাত্র আন্দোলনে তাঁর ভূমিকা শুধু ইতিহাসের পাতায় নয়, তরুণ প্রজন্মের হৃদয়েও অমোচনীয় দাগ কেটেছে। তিনি শুধু অর্থ দিয়ে নয়, বরং আন্তর্জাতিক পরিসরে আন্দোলনের বিষয়টি তুলে ধরে, কূটনৈতিক যোগাযোগের মাধ্যমে এবং সরাসরি অনুদান প্রদান করে গণআন্দোলনের মশাল প্রজ্বলিত রেখেছেন।

২০২৪ সালের ২৭মে তারিখটি বাংলাদেশের সংগ্রামী ইতিহাসে একটি মাইলফলক। ফাহিম আল চৌধুরী সেদিন ফেসবুকে একটি যুগান্তকারী পোস্ট শেয়ার করেন, যেখানে তিনি সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদের বিদেশগমনের প্রসঙ্গ টেনে আসন্ন ছাত্র আন্দোলনের পূর্বাভাস দেন। তাঁর এই সতর্কবার্তা যেন এক বিদ্যুৎপ্রবাহের মতো ছড়িয়ে পড়ে তরুণদের মধ্যে। পরবর্তীতে তিনি বিভিন্ন মাধ্যমে আন্দোলনের প্রতি দৃঢ় সমর্থন জানিয়ে বলেন, “ছাত্রদের অধিকার ছিনিয়ে আনতে হবে রাস্তায়—কাগজে-কলমে নয়!” তাঁর বক্তব্য আন্দোলনকে নতুন গতি, নতুন প্রাণ দেয়।

গত বছরের ৩০ জুলাই তাঁর এক ঘোষণা দেশবাসীকে স্তম্ভিত করে দেয়। আহত ছাত্রদের জন্য প্রাথমিকভাবে ২ কোটি টাকা অনুদানের ঘোষণা দেওয়ার পর জনতার জোয়ারে সাড়া দিয়ে তিনি তা বাড়িয়ে ৫ কোটি টাকা করেন। এই অর্থ শুধু চিকিৎসায় নয়, আন্দোলনকারীদের নিরাপত্তা, আইনি সহায়তা ও পরিবহন খরচে ব্যয় হয়। তাঁর প্রতিষ্ঠিত স্বেচ্ছাসেবী বাহিনী—যাদের তিনি “মানবতার সৈনিক” নামে অভিহিত করেন—দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে ঢাকার আন্দোলনকারীদের সহায়তা দিতে কাজ করেছে। তবে তাঁর এই অবদান অনেকের নজরে পড়েছে, এবং তাঁকে নানাভাবে হুমকির সম্মুখীন হতে হয়েছে। আন্দোলনের এই সংকটময় সময়ে ফাহিম আল চৌধুরী শুধু অর্থ সহায়তা দেননি, তিনি আন্তর্জাতিক মহলে বাংলাদেশের পরিস্থিতি তুলে ধরতে সক্রিয় ভূমিকা রেখেছেন। যুক্তরাজ্য, ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকার মানবাধিকার সংস্থাগুলো এবং আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে তিনি আন্দোলনের ন্যায্যতা তুলে ধরেন।

এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “আমাদের চাওয়া একটাই—বাংলাদেশে যেন আর কোনো শিক্ষার্থী অধিকারবঞ্চিত না হয়। শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকারীদের ওপর দমনপীড়ন বন্ধ করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নজর দেওয়া জরুরি।” ৫ আগস্ট—এই দিনটি বাংলাদেশের গণতন্ত্রের ইতিহাসে এক স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। ফাহিমের নেতৃত্বে পরিচালিত অনুদান কার্যক্রম, মিডিয়া ক্যাম্পেইন এবং আন্তর্জাতিক লবিংয়ের ফলে আন্দোলন বৈশ্বিক সমর্থন লাভ করে। এই আন্দোলনের গৌরবগাথা নিয়ে নির্মিত উচ্চবাজেটের ডকুমেন্টারি “অগ্নিঝরা আগস্ট” এবং সংগীত “জ্বালো প্রাণের মশাল” মুহূর্তেই ভাইরাল হয়, যা তরুণদের মধ্যে জাতীয়তাবাদী চেতনা নতুন করে জাগিয়ে তোলে। ফাহিম আল চৌধুরীর পরিচয় বহুমাত্রিক।

গত বছরের ৩০ জুলাই তাঁর এক ঘোষণা দেশবাসীকে স্তম্ভিত করে দেয়। আহত ছাত্রদের জন্য প্রাথমিকভাবে ২ কোটি টাকা অনুদানের ঘোষণা দেওয়ার পর জনতার জোয়ারে সাড়া দিয়ে তিনি তা বাড়িয়ে ৫ কোটি টাকা করেন। এই অর্থ শুধু চিকিৎসায় নয়, আন্দোলনকারীদের নিরাপত্তা, আইনি সহায়তা ও পরিবহন খরচে ব্যয় হয়। তাঁর প্রতিষ্ঠিত স্বেচ্ছাসেবী বাহিনী—যাদের তিনি “মানবতার সৈনিক” নামে অভিহিত করেন—দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে ঢাকার আন্দোলনকারীদের সহায়তা দিতে কাজ করেছে।

সিলেটের জকিগঞ্জে তাঁর ট্রাস্ট শুধু স্কুল-মাদ্রাসা নির্মাণই করেনি, গড়ে তুলেছে মুক্ত চিকিৎসাকেন্দ্র ও বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট। ২০০২ সালে শুরু করা এই যাত্রা আজ লক্ষ মানুষের আশার নাম। বিদেশে তাঁর রিয়েল এস্টেট সাম্রাজ্য (ফিহা ক্যাপিটাল লিমিটেড) যেমন অর্থনৈতিক সাফল্যের প্রতীক, তেমনি সুদমুক্ত ঋণ প্রদানের মাধ্যমে তিনি ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের স্বপ্নসাধকে জয় করেছেন। যুক্তরাজ্যে বেড়ে ওঠা এই বাঙালি যুবক বিশ্বাস করেন, “মাতৃভূমির ডাকে সাড়া দেওয়াই প্রকৃত সন্তানের দায়িত্ব।” তাঁর মুখে বারবার শোনা যায়, “আমার সাফল্য তখনই অর্থপূর্ণ, যখন একজন গরিব শিশু আমার ট্রাস্টের স্কুলে পড়তে পারে, একজন মা বিনামূল্যে চিকিৎসা পায়।”

বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে ফাহিম আল চৌধুরী এক অনন্য ব্যক্তিত্ব। তিনি নেতা নন, এক জীবন্ত বিপ্লব—যার হৃদয়ে ধ্বনিত হয় গণমানুষের আর্তনাদ। তাঁর প্রতি সমর্থনে সোশ্যাল মিডিয়ায় #StandWithFahim ট্রেন্ড হয়েছে, তরুণরা তাঁকে ডাকে “আমাদের কণ্ঠস্বর”। বিশ্লেষকদের মতে, “ফাহিমের নেতৃত্বে এই আন্দোলন শুধু ছাত্র অধিকারই প্রতিষ্ঠা করেনি, রাষ্ট্র ও সমাজের সম্পর্ককে পুনর্নির্মাণের দিশা দেখিয়েছে।”

তাঁর গল্প শুধু সংগ্রামের নয়—একটি জাতির জাগরণের গল্প। তিনি প্রমাণ করেছেন, “একজন মানুষই পারে ইতিহাসের গতিপথ বদলে দিতে।” তাঁর জীবনাদর্শ আজ কোটি তরুণের হৃদয়ে অনির্বাণ শিখা—যে আলোয় উদ্ভাসিত হবে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ।

শেয়ার করতে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *