সিলেট বিভাগে পানিবন্দি সাড়ে ২৩ লাখ মানুষ

:: সিলেট প্রতিনিধি ::

ভারী বৃষ্টিপাট ও ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে সৃষ্ট বন্যায় সিলেট বিভাগের তিন জেলায় পানিবন্দি হয়ে পড়েছে সাড়ে ২৩ লাখ মানুষ।

সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর ছয় পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এ অবস্থায় সিলেটের বন্যা পরিস্থিতি অবনতি না হলেও উন্নতি হয়নি। দ্বিতীয় দফা বন্যায় সিলেট জেলাজুড়ে ৯ লাখ ৫৭ হাজার ৪৪৮ মানুষ বন্যাকবলিত হয়েছে। তার মধ্যে সিলেট মহানগরীতে বন্যাকবলিত ৫৫ হাজার মানুষ।

সিলেট আবহাওয়া অফিসের তথ্যমতে, গত ২৪ ঘণ্টায় (গতকাল বুধবার সকাল ৬টা থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত) বৃষ্টিপাত হয়েছে ১১০ মিলিমিটার। বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে সকাল ৯টা পর্যন্ত সিলেটে বৃষ্টিপাত হয়েছে ১০ মিলিমিটার। সকাল ৯টা থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত বৃষ্টিপাত হয়েছে ১০ মিলিমিটার। পাশাপাশি আজ সিলেট বিভাগে সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টা অস্থায়ী দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি ও বজ্রবৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। কিছু কিছু এলাকায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের সতর্কবার্তা দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

ভারতের হাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য থেকে জানা গেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় (বুধবার সকাল ৯টা থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা পর্যন্ত) ভারতের  চেরাপুঞ্জিতে কোনো বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়নি। এর আগে গত মঙ্গলবার সকাল ৯টা থেকে বুধবার সকাল ৯টা পর্যন্ত ভারতের চেরাপুঞ্জিতে ১১০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়। যার ফলে সিলেটের সব কটি নদ-নদীর পানি দ্রুতগতিতে বৃদ্ধি পেতে শুরু করে।

সিলেট আবহাওয়া অধিদপ্তরের সহকারী আবহাওয়াবিদ শাহ মো. সজীব হোসাইন বলেন, সিলেটে সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টা অস্থায়ী দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি ও বজ্রবৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। কিছু কিছু এলাকায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস আছে। 

গত ১৩ জুন ভোর থেকে শুরু হওয়া বজ্রসহ বৃষ্টি ও ভারতের  চেরাপুঞ্জিতে বৃষ্টিপাত চলমান থাকার কারণে সিলেটের নদ-নদীর পানি বাড়তে শুরু করে। শুক্রবার দিনের বেলা বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কিছুটা কমলেও সন্ধ্যার পর থেকে আবারও শুরু হয় বৃষ্টি। শুক্রবার রাত থেকে শনিবার বেলা ১২টা পর্যন্ত টানা বৃষ্টি ছিল। এরপর আবার বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কিছুটা কমলেও রবিবার রাত থেকে আবারও টানা বৃষ্টিপাত এখনো চলমান আছে। যার ফলে সিলেটে নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে দ্রুতগতিতে।

বৃহস্পতিবার সকালে জেলা প্রশাসন জানায়, এ সময় পর্যন্ত সিলেট মহানগরীর ২৩টি ওয়ার্ডসহ জেলার ১৩০টি ইউনিয়ন ও পৌরসভার ১ হাজার ৬০২টি গ্রাম বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়ে পড়েছে। এতে ৯ লাখ ৫৭ হাজার ৪৪৮ মানুষ পানিবন্দি রয়েছে। এর মধ্যে সিলেট মহানগরীতে বন্যাকবলিত রয়েছে ৫৫ হাজার মানুষ। জেলা ও মহানগর মিলিয়ে ৬৯৮টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এর মধ্যে সিলেট মহানগরীতে ৮০টি। এই আশ্রয়কেন্দ্রগুলোর মধ্যে ব্যবহৃত হচ্ছে ৩৬১টি।  এসব আশ্রয়কেন্দ্রে ২১ হাজার ৭৮৬ জন মানুষ আশ্রয় নিয়েছে।

গত ২৭ মে সিলেটে আগাম বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। এতে জেলার সব উপজেলার সাড়ে ৭ লাখ মানুষ বন্যাকবলিত হয়। প্রথম দফা বন্যায় সড়ক, মহাসড়ক, ঘরবাড়ির অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সেই ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার আগেই দ্বিতীয় দফায় আবার বন্যাকবলিত হলো সিলেটের মানুষজন।  

সুনামগঞ্জ জেলাজুড়ে সৃষ্ট বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। গত তিন দিন ধরে জেলার ১৫ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। গত মঙ্গলবার বিকেল থেকে বৃষ্টি কম হওয়ায় সুরমা নদীর পানি কমে বিপৎসীমার ২৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে নদীপাড়ের বসতঘর থেকে পানি নামলেও বাড়ছে হাওরে। 

সুনামগঞ্জ শহরের সুরমা নদীর পাড় থেকে পানি কিছু কমলেও এখন শহরের বড়পাড়া, তেঘরিয়া, হাজিপাড়া, নতুনপাড়া, বাঁধনপাড়া, হাছননগর, মল্লিকপুর, নবীনগর ও কালীপুর এলাকায় কোথাও কোমর থেকে হাঁটু সমান পানি রয়েছে। এসব পানি স্থির হয়ে আছে।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রাশেদ ইকবাল চৌধুরী জানান, বানভাসি মানুষ ইতোমধ্যে সরকারি-বেসরকারি ৬৯১ আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছে। এসব আশ্রয়কেন্দ্রে সরকারের দেওয়া ত্রাণসহায়তা দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি রান্না করা খাবারও দেওয়া হচ্ছে।  ইউনিয়নে ইউনিয়নে মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। 

সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মামুন হাওলাদার জানান, ২৪ ঘণ্টায় পানি কমার কোনো সম্ভাবনা নেই। ভারী বৃষ্টিপাতের আভাস থাকায় পানি আরও বৃদ্ধি হতে পারে।

মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, জেলায় ২ লাখ ৮১ হাজার ৯২০ জন মানুষ পানিবন্দি আছে। ২০৫টি আশ্রয়কেন্দ্র রয়েছে। এসব আশ্রয়কেন্দ্রে ৬ হাজার ২৫৩ জন মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। এ ছাড়া ৭০টি মেডিকেল টিম কাজ করছে। এদিকে ঢলের পানিতে ডুবে দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। 

বৃহস্পতিবার দুপুরে সদর উপজেলার চাঁদনীঘাট ইউনিয়নের শ্যামেরকোনা গ্রামে ঢলের পানি থেকে তাদের লাশ উদ্ধার করা হয়। 

মৃত শিশুরা হলো শ্যামেরকোনা গ্রামের জমির আলীর ছেলে হৃদয় আহমদ (১৬) ও একই গ্রামের ফয়সল মিয়ার ছেলে সাদী আহমদ (৮)।

বৃহস্পতিবার সরেজমিনে সিলেট নগরী ঘুরে দেখা গেছে, নগরীর তালতলা, জামতলা, মাছুদিঘির পাড়, উপশহর, যতরপুর, সোবাহানীঘাট, মীরাবাজার, মেন্দিবাগ, শিবগঞ্জ, তোপখানা ও বেতের বাজার এলাকার রাস্তাঘাটে হাঁটু সমান পানি রয়েছে।

এসব এলাকার বাসিন্দারা বলছেন, পানি আগের থেকে কিছুটা কমেছে। তবে বৃষ্টি শুরু হলে আবার বেড়ে যাবে।

সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তথ্য মতে, সিলেটের প্রধান দুটি নদী সুরমা ও কুশিয়ারার ছয়টি পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ওপরে প্রবাহিত হচ্ছে। আর গোয়াইনঘাটের সারি নদীর পানি সকাল থেকে বিপৎসীমার নিচে রয়েছে।

সিলেট নগরীর উপশহরের ডি ব্লকের বাসিন্দা আহমেদ চৌধুরী বলেন, ঈদের দিন বাসার নিচতলায় পানি প্রবেশ করেছিল। পানির জন্য ঠিকমতো ঈদের আনুষ্ঠানিকতা করা হয়নি। বৃহস্পতিবারও বাসায় পানি রয়েছে। বন্দির মতো দিনকাল যাচ্ছে, তবে পানি একটু কমছে।

সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাশ সাংবাদিকদের বলেন, সিলেটে বৃষ্টিপাত কম হওয়া ও ভারতের চেরাপুঞ্জিতেও বৃষ্টির পরিমাণ কমে আসায় নদ-নদীর পানি কিছুটা কমেছে। ভারতের মেঘালয়ে বৃষ্টির ওপর বন্যা পরিস্থিতি উন্নতির বিষয়টি নির্ভর করছে। পাহাড়ি ঢল নামার ফলে নদ-নদীর পানি বেড়ে গিয়ে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।

সিলেট আবহাওয়া অধিদপ্তরের সহকারী আবহাওয়াবিদ শাহ মো. সজীব হোসাইন বলেন, বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত তিন ঘণ্টায় ১০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ১১০ দশমিক ২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। তবে বুধবার রাতে কোনো বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়নি। আগামী দুই দিন মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে।

এ অবস্থায় পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত সিলেটে সব পর্যটনকেন্দ্র বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। সিলেট বিভাগে শুরু হতে যাওয়া এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষাও পেছানো হয়েছে।

কোম্পানীগঞ্জের পাড়ুয়া গ্রামের বাসিন্দা জাফরুল হক বলেন, আজকে ঢল থামায় পানি বাড়েনি। তবে এখনও ঘরের ভেতর গলা সমান পানি। এই পানি কমতে অনেকদিন সময় লাগবে। তিনি বলেন, এখন পরিবার নিয়ে আশ্রয় কেন্দ্রে উঠেছি। কিন্তু এখানে রান্না করা খাবারের সংকট রয়েছে। তাই শুকনো খাবার খেয়েই কাটাতে হচ্ছে।

কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, পানিতে তলিয়ে গেছে উপজেলা পরিষদ কার্যালয়। এ ছাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেও পানি ঢুকে পড়েছে। এতে ব্যাহত হচ্ছে সেবা।

সিলেট জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার মো ওমর সানি জানান, বন্যায় সিলেট জেলায় প্রায় ১০ লাখ মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন। জেলার ১৫৩টি পৌরসভা ও ইউনিয়নের মধ্যে ১৩০টিই প্লাবিত হয়েছে।

তিনি জানান, জেলায় বন্যার্তদের জন্য ৬৯৮টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তত রাখা হয়েছে। এর মধ্যে ৩৬১টি আশ্রয়কেন্দ্রে ২১ হাজার ৭০০ মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন।

আগাম বন্যার কবল থেকে রক্ষা করতে সুরমা নদী ড্রেজিংয়ের ঘোষণা

পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক বলেছেন, সিলেট নগরকে আগাম বন্যার কবল থেকে রক্ষা করতে সুরমা নদী ড্রেজিং করা হবে। নদীতে পলিমাটি থাকার ফলে এর আগেও ড্রেজিং কাজ ব্যাহত হয়েছিল। প্রকৌশলীদে সঙ্গে আলাপ করেছি দ্রুত সুরমা নদী ড্রেজিং ব্যবস্থা নেওয়া হবে। গতকাল বৃহস্পতিবার (২০ জুন) সিলেট নগরীর ৩৯ নং ওয়ার্ডের টুকেরবাজার এলাকার শাদীখাল পরিদর্শনকালে তিনি এসব বলেন।

তিনি আরও বলেন, দেশের ৯টি স্থানে ড্রেজিং স্টেশন তৈরি করা হচ্ছে। নদী ভাঙন, পলিমাটি অপসারণে নিয়মিত নদী খনন করা হবে। প্রতিমন্ত্রী বলেন, কিশোরগঞ্জের মিঠামইন সড়ক দিয়ে পানি পারাপারের জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করছে সরকার। প্রধানমন্ত্রী বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন। বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সবধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

এ সময় সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী, সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাবৃন্দ, সিলেট জেলা প্রশাসন কর্মকর্তাবৃন্দ, বিভিন্ন ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

৫ দিন বৃষ্টিপাতের প্রবণতা অব্যাহত থাকতে পারে

রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে অতিভারী বর্ষণ হতে পারে।

গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত দেশের অভ্যন্তরীণ নদীবন্দর সমূহের জন্য আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, রংপুর, দিনাজপুর, ঢাকা, ফরিদপুর, কুষ্টিয়া, যশোর, টাঙ্গাইল, খুলনা, পটুয়াখালী, ময়মনসিংহ এবং সিলেট অঞ্চলের উপর দিয়ে দক্ষিণ অথবা দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে দমকা অথবা ঝোড়োহাওয়াসহ অস্থায়ীভাবে বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এসব এলাকার নৌবন্দর সমূহকে ১ নম্বর সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

গত ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ বৃষ্টি হয়েছে পঞ্চগড়ে ১৫৩ মিলিমিটার। এর বাইরে সিলেট ও হবিগঞ্জে ১১০ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে।

প্রায় ১২ হাজার গ্রাহক বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন

সিলেট বিভাগে চলমান বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট বন্যায় বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) ও বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের (আরইবি) সিলেট জোনের প্রায় ১২ হাজার গ্রাহক বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় রয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (২০ জুন) এক বার্তায় এ তথ্য জানায় বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়।

বার্তায় জানানো হয়, সিলেটে পিডিবির অধীনে ৩৩/১১ কেভি মোট ২১ টি উপকেন্দ্রের মধ্যে সকল উপকেন্দ্রই বর্তমানে চালু রয়েছে, যার মাধ্যমে বিদ্যুৎ সরবরাহ সচল রয়েছে।

সিলেটে বিভিন্ন শ্রেণির মোট গ্রাহক সংখ্যা ৫  লাখ ৬১ হাজার ৬৯ জন। সর্বোচ্চ বিদ্যুতের চাহিদা ২২৫ মেগাওয়াট। চলমান বৃষ্টিপাত ও উজান হতে বয়ে আসা পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট বন্যার প্রভাবে ৩৩/১১ কেভি ২১টি উপকেন্দ্রের মধ্যে ৭টি উপকেন্দ্রের ভেতরে পানি প্রবেশ করলেও নিরাপদ দূরত্বে থাকায় উপকেন্দ্রসমূহ চালু অবস্থায় রয়েছে।

বিতরণ জোনের আওতাধীন সব এলাকাই কম-বেশি বন্যা কবলিত হওয়ায় বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনা রোধে নিরাপত্তার স্বার্থে অনেক জায়গায় ট্রান্সফরমারের ফিউজ কেটে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে রাখা হয়েছে। এছাড়াও, অনেক বসতবাড়িতে পানির পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়ে মিটার পর্যন্ত চলে আসায় বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনা রোধে নিরাপত্তার স্বার্থে বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করে রাখা হয়েছে। এ সব কারণে বিতরণ জোনের প্রায় ১০ হাজার থেকে ১২ হাজার গ্রাহক বিদ্যুৎ বিহীন অবস্থায় রয়েছেন। বন্যার পানি কমলে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক করার কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে।

বার্তায় আরও জানানো হয়, পল্লী বিদ্যুতের কর্মকর্তা/কর্মচারীগণ যার যার অবস্থান থেকে বিদ্যুৎ ব্যবস্থা সচল রাখার কাজে নিয়োজিত রয়েছে। যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলা করার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করা হচ্ছে। বিতরণ জোনের আওতাধীন সকল এলাকাই কম-বেশি বন্যা কবলিত হওয়ায় বন্যার পানি কমার পর প্রকৃত ক্ষয়ক্ষতির সঠিক তথ্য নিরূপণ করা সম্ভব হবে।

এছাড়া বিদ্যুৎ বিভাগ সার্বিকভাবে সিলেটের বন্যা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে এবং সদা সতর্ক রয়েছে। কোথাও ছেড়া বৈদ্যুতিক তার দেখলে নিকটস্থ বিদ্যুৎ অফিসে অবহিত করার জন্য বিদ্যুৎ বিভাগের পক্ষ থেকে অনুরোধ করা হলো।

শেয়ার করতে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *