গণঅভ্যুত্থানে চোখ হারানো ৪ তরুণের বিষপান

■ নাগরিক প্রতিবেদক ■

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে চোখ হারানো চার তরুণ রাজধানীর জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের পরিচালকের কক্ষে গিয়ে বিষপান করেছেন। পরে তাৎক্ষণিকভাবে তাদের শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।

রোববার (২৫ মে) দুপুরে এ ঘটনা ঘটে বলে গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. খায়ের আহমেদ চৌধুরী।

বিষপানকারীরা চারজন হলেন— শিমুল, মারুফ, সাগর ও আখতার হোসেন (আবু তাহের)।

জুলাই ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধর সঙ্গে চলমান বৈঠকের সময় ওই চারজন দাবি নিয়ে তার কক্ষে যান। সিইও তাদের অপেক্ষা করতে বললে ক্ষুব্ধ হয়ে সেখানেই বিষপান করেন তারা। 

জুলাই গণআন্দোলনে চোখ হারানো আহতরা অভিযোগ করেছেন, দীর্ঘ ৯ মাসেও তাদের উন্নত চিকিৎসা বা পুনর্বাসনের বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। বরং প্রতিশ্রুতি দিয়ে নানা বাহানা করা হয়েছে। আহতদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের দায়িত্ব নেওয়ার কথা বললেও তা বাস্তবে ঘটেনি।

হিল্লোল নামে আহত একজন বলেন, এই সরকারের কাছ থেকে কিছু পেতে হলে আন্দোলনে নামতেই হয়। শান্তিপূর্ণভাবে কিছু চাওয়া যায় না। আমাদের চিকিৎসার জন্য কেউ এগিয়ে আসেনি।

জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট সূত্র জানিয়েছে, জুলাই আন্দোলনে চোখে গুরুতর আঘাত পাওয়া ৫৫ জন এখনো ওই হাসপাতালে আছেন। যাদের মধ্যে ৪৬ জন পুরোপুরি সুস্থ। তবে কয়েকজন মানসিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছেন। তারা মনে করছেন, পুনর্বাসন না হলে হাসপাতাল ছাড়লে আরও বিপদে পড়তে পারেন। তাই তারা এখনই বাড়ি যেতে চাইছেন না।

হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. খায়ের আহমেদ চৌধুরী বলেন, জুলাই আন্দোলনে আহত হয়ে ভর্তি থাকা ৪ জন আজ বিষপান করেছেন। তারা আগেই পকেটে করে বিষ নিয়ে আসে। কিন্তু আমার রুমে এসে মিটিং চলাকালীন তাদের এই কর্মকাণ্ডে খুবই অবাক হয়েছি। ঠিক কি কারণে তারা এমন করেছে আমরা কিছুই জানি না।

তাদের তাৎক্ষণিকভাবে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয় এবং বর্তমানে তারা সম্পূর্ণ সুস্থ আছেন বলে জানান তিনি।

রাত সাড়ে ৯টায় শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পরিচালক ডা. শফিকুর রহমান বলেন, বিষপান করে আসা জুলাই যোদ্ধা চারজনকেই মেডিসিন ইউনিটে ভর্তি করা হয়েছে। একটু আগেও খোঁজ নিয়েছি সবাই ঝুঁকিমুক্ত। সকালে দেখে রিলিজ দেওয়া হতে পারে।

শেয়ার করতে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *