■ নাগরিক প্রতিবেদক ■
সংস্কারের অংশ হিসেবে বাংলাদেশ পুলিশ, র্যাব ও আনসারের পোশাক পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করা হয়েছে। সোমবার (২০ জানুয়ারি) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নতুন পোশাক পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়েছে।
সোমবার সচিবালয়ে আইনশৃঙ্খলা-সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির সভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। এ সময় অন্যদের মধ্যে সমাজকল্যাণ উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী খোদা বখস চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদী সরকারের পতনের পর পুলিশ বাহিনী সংস্কারের দাবি ওঠে। একই সঙ্গে পুলিশের পোশাক পরিবর্তন দাবি ওঠে।
তিনি বলেন, তিনটা সংস্থার (পুলিশ, র্যাব ও আনসারের) জন্য পোশাক সিলেক্ট করা হয়েছে। এটা পর্যায়ক্রমে পরিবর্তন করা হবে। একসঙ্গে সব করা সম্ভব নয়। তবে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়ে গেছে।
এক প্রশ্নে জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, পোশাকের সঙ্গে আমাদের সবার মন মানসিকতারও পরিবর্তন হতে হবে। আমাদের সবাইকে দুর্নীতি প্রতিরোধ করতে হবে। তাহলেই অনেক কিছুই পরিবর্তন হবে। গত ১৫ বছর তাদের যে ট্রেনিং ছিল সেই ট্রেনিংও পরিবর্তন করতে হবে, তাদের মানবিক হতে হবে।
তিনি বলেন, আজকে পোশাক সিলেক্ট করা হয়েছে। এটা হয়তো প্রধান উপদেষ্টাকেও দেখানো হতে পারে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, পুলিশের পোশাক হবে লোহার (আয়রন) রঙের। র্যাবের পোশাক হবে জলপাই (অলিভ) রঙের। আর আনসারের পোশাক হবে সোনালি গমের (গোল্ডেন হুইট) রঙের।
কবে থেকে পোশাক পরিবর্তন হবে, জানতে চাইলে জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, ধীরে ধীরে পরিবর্তন হবে।
পুলিশকে জনবান্ধব করতে হলে বাহিনীটির প্রশিক্ষণে পরিবর্তন আনতে হবে বলে মন্তব্য করেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।
এদিকে সীমান্তে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) ব্যবহারের জন্য সাউন্ড গ্রেনেড ও কাঁদানে গ্যাস কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এই তথ্য জানিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্তে দেখা যাচ্ছে, বিএসএফ কাঁদানে গ্যাস ও সাউন্ড গ্রেনেড ব্যবহার করছে। বিজিবির কাছে কাঁদানে গ্যাস ও সাউন্ড গ্রেনেড নেই। তাদের কাছে শুধু প্রাণঘাতী অস্ত্র আছে। এমন বাস্তবতায় বিজিবির জন্য কাঁদানে গ্যাস ও সাউন্ড গ্রেনেড কেনার সিদ্ধান্ত হয়েছে। পরিস্থিতি অনুযায়ী তাঁরা ব্যবহার করবে। তবে সীমান্ত এখন স্থিতিশীল আছে বলে জানান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।
জাহাঙ্গীর আলম জানান, বাংলাদেশে অনেকে অবৈধভাবে বসবাস করছেন। তাঁদের ভিসার মেয়াদ শেষ। ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়া বাংলাদেশে অবৈধ অভিবাসীর সংখ্যা ছিল ৪৯ হাজার ২২৬। সেটি কমে এখন দাঁড়িয়েছে ৩৩ হাজার ৬৩৮। বৈধ হওয়ার আবেদন থেকে ১০ কোটি টাকা আয় হয়েছে। যাঁরা অবৈধ অভিবাসীদের থাকতে সহায়তা করেছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।