খালেদা জিয়াকে রাষ্ট্রের ‘অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি’ ঘোষণা

■ নাগরিক প্রতিবেদক ■

বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক তিনবারের প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে রাষ্ট্রের ‘অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি’ ঘোষণা করেছে সরকার। সোমবার (১ ডিসেম্বর) এ বিষয়ে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।

রাষ্ট্রপতির নির্দেশে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের মহাপরিচালক (প্রশাসন) মোহাম্মদ আব্দুল ওয়াদুদ চৌধুরী এ আদেশে সাক্ষর করেন।

তার জন্য বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনী স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স নিয়োগ দেবে সরকার। বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনী (স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স) আইন, ২০২১ এর ধারা ২(ক)-এ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে তাকে ‘অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি’ হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছে। এতে খালেদা জিয়া এবং তার পরিবারের সদস্যরা এসএসএফের বিশেষ নিরাপত্তা পাবেন। 

৭৯ বছর বয়সী খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে লিভার, কিডনি, হৃদরোগসহ নানা জটিলতায় ভুগছেন। গত চার দিন ধরে তিনি রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালের করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) চিকিৎসাধীন আছেন।

‘অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি’রা যেসব সুবিধা পান

বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনী আইন, ২০২১ অনুযায়ী, অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের নিরাপত্তা বিধান করা এই বাহিনীর অর্থাৎ এসএসএফের দায়িত্ব।

রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী বা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ছাড়াও আইনের ৮(২) ধারা মোতাবেক, এসএসএফ ‘বাহিনী বাংলাদেশে অবস্থানরত অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিকেও দৈহিক নিরাপত্তা প্রদান করিবে।’

অর্থাৎ, সরকারের অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ঘোষিত হলে তার সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতে এসএসএফ নিয়োজিত হবে এবং তার ‘নিরাপত্তার বিঘ্ন ঘটাইতে পারে এইরূপ গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ ও আদান-প্রদান করিবে এবং তাহাদিগকে দৈহিক নিরাপত্তা প্রদানের জন্য প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা গ্রহণ করিবে।’

অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির নিরাপত্তার জন্য কাউকে ক্ষতিকর মনে হলে এসএসএফ তাকে বিনা গ্রেফতারি পরোয়ানায় গ্রেফতারও করতে পারে এবং তাদের এই ক্ষমতা দেশের সব প্রান্তে প্রযোজ্য। শুধু তাই নয়, পরিস্থিতি বিবেচনায় তাকে গুলি অথবা হত্যাও করতে পারবে।

খালেদা জিয়ার অবস্থা স্থিতিশীল

খালেদা জিয়ার অবস্থা স্থিতিশীল, চিকিৎসকদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে তার চিকিৎসা চলছে বলে জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। একই তথ্য জানান বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীও।

সোমবার (১ ডিসেম্বর) খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের অবস্থা নিয়ে বিভিন্ন ধরনের খবর প্রকাশিত হওয়র পর তারা গণমাধ্যমকে এসব কথা জানান।

মির্জা ফখরুল বলেন, ম্যাডামের অবস্থা স্থিতিশীল রয়েছে। ডাক্তারদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে তার চিকিৎসা চলছে। বিভিন্ন গণমাধ্যমে ম্যাডামকে নিয়ে যে সংবাদ প্রচারিত হচ্ছে, এটা সঠিক নয়। কেউ এতে বিভ্রান্ত হবেন না।

একই সঙ্গে দলের চেয়ারপারসনের আশু আরোগ্য কামনায় কায়মনো বাক্যে মহান রাব্বুল আলামীনের কাছে দোয়া করতে দলের নেতাকর্মী ও দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান বিএনপি মহাসচিব।

বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এ বিষয়ে বলেন, এভারকেয়ার হাসপাতালের ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে আগের মতোই ম্যাডামের চিকিৎসা চলছে। দয়া করে যে যাই বলুক এ ব্যাপারে কারও কথায় কেউ বিভ্রান্ত হবেন না। তাদের কাছ থেকে যতটুকু জানতে পেরেছি, তার চিকিৎসা চলছে, এটাই আপডেট। আপনারা সবাই দোয়া করুন যেন, আল্লাহ তাকে আমাদের কাছে ফিরিয়ে দেন সুস্থভাবে।

খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনা মো‌দির

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার অবনতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।

সোমবার (১ ডিসেম্বর) রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে এক বার্তায় তিনি বেগম জিয়ার দ্রুত আরোগ্য কামনা করেন।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী তার পোস্টে লেখেন, বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের খবরে আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। দীর্ঘদিন তিনি বাংলাদেশের জনগণের জন্য কাজ করেছেন। তার দ্রুত সুস্থতায় আমাদের আন্তরিক প্রার্থনা এবং মঙ্গল কামনা। 

পাশাপাশি সব ধরনের সহায়তা প্রদানে ভারত প্রস্তুত রয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি লেখেন, সম্ভাব্য সব সহায়তা প্রদানে আমরা প্রস্তুত, তা যেভাবেই হোক।

শেয়ার করতে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *