শিক্ষকদের কর্মবিরতি স্থগিত, বুধবার থেকে বার্ষিক পরীক্ষা

■ নাগরিক প্রতিবেদক ■ 

আন্দোলনরত সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা তাঁদের চলমান কর্মবিরতি সাময়িকভাবে স্থগিত করেছেন। ফলে আগামীকাল বুধবার থেকে সারাদেশে সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোর বার্ষিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।

শিক্ষার্থীদের স্বার্থ ও একাডেমিক চাপ বিবেচনায় বাংলাদেশ সরকারি মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতি (বাসমাশিস) এ সিদ্ধান্ত জানিয়েছে। ফলে দীর্ঘ অনিশ্চয়তার পর আগামীকাল থেকে সারা দেশে নিয়মিত সূচি অনুযায়ী বার্ষিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।

মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) রাতে প্রকাশিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ সুরক্ষা ও শিক্ষাজীবনকে স্বাভাবিক ধারায় ফিরিয়ে আনা তাদের অন্যতম দায়িত্ব। তাই, আগামীকাল বুধবার (৩ ডিসেম্বর) থেকে সারা দেশের বিদ্যালয়ে সুষ্ঠুভাবে বার্ষিক পরীক্ষা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে সহযোগিতা করার আহ্বান জানানো হয়েছে।

সমিতির ন্যায্য দাবি–দাওয়াগুলো দ্রুত সমাধানের পথে এগিয়ে নিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কার্যকর উদ্যোগ চাওয়া হচ্ছে। যাতে ভবিষ্যতে আর কোনোভাবে শিক্ষা কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত না হয়। সংগঠনের পরবর্তী সিদ্ধান্ত আলোচনার মাধ্যমে শিগগিরই জানিয়ে দেওয়া হবে। 

এর আগে, ১ ডিসেম্বর থেকে এন্ট্রি–পদের বেতন ৯ম গ্রেডসহ চার দফা দাবিতে ‘পূর্ণদিবস কর্মবিরতি’ কর্মসূচি ঘোষণা করে বাংলাদেশ সরকারি মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতি। তাদের কর্মসূচির অংশ হিসেবে চলমান বার্ষিক পরীক্ষা, এসএসসি নির্বাচনী পরীক্ষা ও খাতা মূল্যায়ন থেকেও শিক্ষকরা বিরত থেকেছেন।

চার দফা দাবিতে ‘বাংলাদেশ সরকারি মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতি’র (বাসমাশিস) ব্যানারে সরকারি মাধ্যমিক স্কুলের শিক্ষকরা গতকাল সোমবার থেকে পূর্ণ দিবস কর্মবিরতি শুরু করেছেন। কর্মসূচির অংশ হিসেবে গত ২৪ নভেম্বর শুরু হওয়া বার্ষিক পরীক্ষাও বন্ধ রেখেছেন তারা। ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, বরিশাল, কুমিল্লা, রংপুরসহ বিভিন্ন বিভাগের অনেক সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে গতকাল পরীক্ষা হয়নি। ঢাকা কলেজিয়েট স্কুল, সরকারি করোনেশন গার্লস হাইস্কুল (খুলনা), গভর্নমেন্ট ল্যাবরেটরি হাই স্কুল, শেরেবাংলা নগর সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়, সবুজবাগ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, শেরপুরের সরকারি ভিক্টোরিয়া একাডেমি, কুষ্টিয়া জিলা স্কুল, চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুলসহ অসংখ্য প্রতিষ্ঠানে পরীক্ষা স্থগিতের খবর পাওয়া গেছে।

শিক্ষকদের চার দফা দাবি হলো—

১. সহকারী শিক্ষক পদকে বিসিএস (সাধারণ শিক্ষা) ক্যাডারে অন্তর্ভুক্ত করে নবম গ্রেডসহ পদসোপান নির্ধারণ এবং মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের গেজেট প্রকাশ।

২. বিদ্যালয় ও পরিদর্শন শাখায় শূন্যপদে দ্রুত নিয়োগ, পদোন্নতি ও পদায়ন কার্যকর করা।

৩. সুপ্রিম কোর্টের রায় অনুযায়ী বকেয়া টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেডের অনুমোদন প্রদান।

৪. ২০১৫ সালের মতো সহকারী শিক্ষকদের জন্য ২ থেকে ৩টি ইনক্রিমেন্টসহ অগ্রিম বেতন-সুবিধা পুনর্বহাল করে গেজেট প্রকাশ।

শিক্ষক সমিতি আশা প্রকাশ করেছে, আলোচনার মাধ্যমে তাঁদের দীর্ঘদিনের সমস্যাগুলো দ্রুত সমাধান হবে এবং শিক্ষা কার্যক্রম আর কোনোভাবে ব্যাহত হবে না।

শেয়ার করতে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *