■ নাগরিক প্রতিবেদক ■
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদিকে গুলি করে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় প্রধান আসামি ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে রাহুল ওরফে দাউদ খানের স্ত্রী সাহেদা পারভীন সামিয়া, তার শ্যালক ওয়াহিদ আহমেদ এবং তার বন্ধবী মারিয়া আক্তার লিমাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডে নিয়েছে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক ফয়সাল আহমেদ আসামিদের আদালতে হাজির করে পৃথকভাবে সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন।
এ বিষয়ে ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জশিতা ইসলাম -এর আদালতে শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। শুনানি শেষে আদালত প্রত্যেকের পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এর আগে হাদিকে গুলি করে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে গতকাল (১৪ ডিসেম্বর) পল্টন থানায় ইনকিলাব মঞ্চের সদস্য সচিব আব্দুল্লাহ আল জাবের বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন।
মামলায় দণ্ডবিধির একাধিক ধারায় আসামিদের বিরুদ্ধে অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র, হত্যাচেষ্টা, বিপজ্জনক অস্ত্র ব্যবহার করে স্বেচ্ছায় গুরুতর আঘাত, দুষ্কর্মে সহায়তার অভিযোগ আনা হয়েছে।
গত ১২ ডিসেম্বর (শুক্রবার) জুমার নামাজের পর রাজধানীর পুরানা পল্টনের বক্স-কালভার্ট রোড এলাকায় হামলার শিকার হন শরীফ ওসমান হাদি। মোটরসাইকেলে করে আসা দুই আততায়ীর একজন চলন্ত রিকশায় থাকা হাদির মাথায় গুলি করে পালিয়ে যায়। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তাকে প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে সেখান থেকে তাকে এভারকেয়ার হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সর্বশেষ আজ তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর নেওয়া হচ্ছে।
চিকিৎসকদের ভাষ্য অনুযায়ী, তার শারীরিক অবস্থা বর্তমানে বেশ সংকটাপন্ন।
সীমান্তে মানুষ পার করা ফিলিপকে খুঁজছে পুলিশ
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদিকে গুলির ঘটনায় সীমান্ত এলাকা থেকে মানুষ পারাপারকারী ফিলিপ স্নালের দুই সহযোগীকে আটক করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। শেরপুরের নালিতাবাড়ী সীমান্ত এলাকা থেকে তাঁদের আটক করা হয়।
আজ সোমবার সন্ধ্যায় বিজিবির জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শরীফুল ইসলাম এ তথ্য জানিয়েছেন।
শরীফুল ইসলাম বলেন, ওসমান হাদির ওপর গুলির ঘটনায় সীমান্তে সতর্ক বিজিবি। এর ধারাবাহিকতায় আজ বিকেলে বিজিবির ময়মনসিংহ ব্যাটালিয়নের (৩৯ বিজিবি) বারোমারি বিওপির টহল দল দায়িত্বপূর্ণ এলাকা থেকে অবৈধভাবে মানুষ পারাপারে সহায়তাকারী ফিলিপের মামাশ্বশুর বেঞ্জামিন চিড়ান (৪৫) ও ফিলিপের ঘনিষ্ঠ বন্ধু সীশলকে (২৮) আটক করতে সক্ষম হয়।
এর আগে ফিলিপের স্ত্রী ডেলটা চিড়ান, শ্বশুর ইয়ারসন রংডি ও আরেক সহযোগী লুইস লেংমিঞ্জাকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে বিজিবি।
এদিকে আজ সকালে ময়মনসিংহের ৩৯ বিজিবির সেক্টর সদর দপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে সেক্টর কমান্ডার কর্নেল সরকার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান জানান, গত শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) ঢাকায় ওসমান হাদির ওপর গুলিবর্ষণের পর অভিযুক্ত ব্যক্তিদের পালানো ঠেকাতে বিজিবি সদর দপ্তরের নির্দেশনায় রাত সাড়ে ৮টা থেকে ৯টার মধ্যে ৩৯ বিজিবির অধীন সীমান্তের সম্ভাব্য রুটগুলো চিহ্নিত করে টহল ও চেকপোস্ট বসানো হয়। পরদিন শনিবার পুলিশ ও বিজিবির যৌথ অভিযানের মাধ্যমে সন্দেহভাজন হিসেবে নালিতাবাড়ী উপজেলায় শ্বশুরবাড়িতে অবস্থানরত ফিলিপ নামের এক ব্যক্তিকে আটকের পরিকল্পনা করা হয়। হামলায় অভিযুক্ত ব্যক্তিরা এই অঞ্চল দিয়ে ভারতে পালালে ফিলিপ স্নাল ভালো বলতে পারবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে, তবে তাঁকে পাওয়া যায়নি। তবে তাঁর স্ত্রী ডেলটা চিরান, শ্বশুর ইয়ারসন রংডি ও মানব পাচারকারী লুইস লেংমিঞ্জাকে আটক করা হয়। তাঁদের বাড়ি থেকে একটি মোটরসাইকেলও উদ্ধার করা হয়।
