জুলাইয়ে প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের অনুমতি হাসিনা দিয়েছিলেন

■ নাগরিক নিউজ ডেস্ক ■

২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট মাসে চলা ছাত্র আন্দোলন চলাকালে যে প্রাণঘাতী দমন অভিযান চালানো হয়, তা সরাসরি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনুমোদনে হয়েছিল। এমনটাই জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির অনুসন্ধানী ইউনিট বিবিসি আই ইনভেস্টিগেশন।

বিবিসি আই একটি ফোনালাপের অডিও বিশ্লেষণ করেছে, যাতে হাসিনাকে বলতে শোনা যায়, “যেখানেই ওদের (বিক্ষোভকারী) পাওয়া যাবে, গুলি করা হবে”। বুধবার (৯ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বিবিসি।

সংবাদমাধ্যমটি বলছে, ওই ফোনালাপ এখন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মামলায় গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। তিনি বর্তমানে ভারতে পালিয়ে আছেন এবং অনুপস্থিত অবস্থায়ই তার বিচার চলছে। জাতিসংঘের তদন্তকারীদের মতে, গত বছরের জুলাই-আগস্টে সহিংস ওই বিক্ষোভে প্রায় ১৪০০ মানুষ নিহত হয়েছিলেন।

যদিও হাসিনা ও তার দল সব অভিযোগ অস্বীকার করেছে। আওয়ামী লীগের একজন মুখপাত্র বলেছেন, অডিওটি “অবৈধ কোনো মনোভাব” প্রমাণ করে না এবং তাদের মতে এটি ছিল “প্রাসঙ্গিক প্রতিক্রিয়া”।

২০২৪ সালের ১৮ জুলাই তারিখে রেকর্ড হওয়া একটি ফোনালাপে শেখ হাসিনাকে একজন শীর্ষ সরকারি কর্মকর্তার সঙ্গে কথোপকথনে কথা বলতে শোনা যায়। তিনি বলছেন, “প্রয়োজনে প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করতে হবে।”

বিবিসির যাচাই করা ওই রেকর্ডিং অনুসারে, শেখ হাসিনা তার নিরাপত্তা বাহিনীগুলোকে বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে “প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার” করার অনুমতি দিয়েছেন এবং “তারা (এসব বাহিনীর সদস্যরা) যেখানেই তাদের (আন্দোলনকারী) পাবে, তারা গুলি করবে”।

ব্রিটিশ ফরেনসিক অডিও বিশেষজ্ঞ দল ইয়ারশট এবং বাংলাদেশের ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট (সিআইডি) অডিওটি পরীক্ষা করে অবিকৃত এবং বিশ্বাসযোগ্য বলে নিশ্চিত করেছে। ধারণা করা হচ্ছে, অডিওটি বাংলাদেশ সরকারের জাতীয় টেলিযোগাযোগ পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র (এনটিএমসি) রেকর্ড করেছিল। তবে অডিওটি কে ফাঁস করেছে, তা নিশ্চিত নয়।

গত বছরের জুলাইয়ে ছাত্র আন্দোলন শুরু হয়েছিল সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যদের জন্য কোটা পদ্ধতির বিরুদ্ধে। পরে তা ব্যাপক আন্দোলনে রূপ নেয়, যার ফলে শেখ হাসিনাকে ১৫ বছরের ক্ষমতা হারাতে হয়।

বিক্ষোভের চূড়ান্ত সহিংসতা ঘটে ৫ আগস্ট। সেদিন ঢাকার গণভবন থেকে হেলিকপ্টারে করে পালিয়ে যান হাসিনা। সেদিন শুধু যাত্রাবাড়ী এলাকায়ই পুলিশের গুলিতে অন্তত ৫২ জন নিহত হন, যা বাংলাদেশের ইতিহাসে অন্যতম ভয়াবহ পুলিশি সহিংসতা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

৩৬ দিনের আন্দোলনের সময়কার শত শত ভিডিও, ছবি, ডকুমেন্ট বিশ্লেষণ করেছে বিবিসি। সিসিটিভি ফুটেজ, ড্রোন ভিডিও এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের সহায়তায় তারা দেখিয়েছে, পুলিশ বাহিনী নির্বিচারে গুলি চালায়, বিশেষত যেদিন সেনাবাহিনী এলাকা ছেড়ে যায়।

বিক্ষোভকারীরা পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে অন্তত ৩০ মিনিট ধরে পুলিশ গুলি চালায়, এরপর তারা সেনা ক্যাম্পে আশ্রয় নেয়। ঘটনার পর ৬০ জন পুলিশ সদস্যকে গ্রেফতার করা হয় বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ পুলিশ।

মূলত জাতিসংঘের প্রতিবেদন ও বিভিন্ন গণমাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে নানান খবর প্রকাশিত হলেও নির্বিচারে হত্যার ঘটনাটি কীভাবে শুরু ও শেষ হয়েছিল এবং তাতে কত মানুষ হতাহত হয়েছিল, সে সম্পর্কে বিবিসি’র অনুসন্ধানে এমন কিছু তথ্য ও বিবরণ উঠে এসেছে, যা আগে সেভাবে সামনে আসেনি।

আন্দোলনকারীদের ওপর নির্বিচার গুলি ও হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে বক্তব্য জানতে বাংলাদেশ পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে বাহিনীর একজন মুখপাত্র ঘটনা স্বীকার করে বিবিসিকে বলেন, “জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় এ ধরনের দুঃখজনক ঘটনা ঘটেছে, যেখানে তৎকালীন পুলিশ বাহিনীর কিছু সদস্য অতিরিক্ত বলপ্রয়োগে লিপ্ত হয়েছিলেন এবং আন্দোলনকারীদের নিয়ন্ত্রণে অপেশাদার আচরণ করেছিলেন।”

বিবিসি আই’র অনুসন্ধান চলাকালে ঘটনার এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ ভিডিও বিবিসির হাতে আসে, যেখানে পাঁচ আগস্ট বিকেলে যাত্রাবাড়ীতে পুলিশের গুলিবর্ষণ শুরুর কিছু মুহূর্ত দেখা যায়। ভিডিওটি এমন একজন আন্দোলনকারীর মোবাইল ফোন থেকে বিবিসি সংগ্রহ করেছে, যিনি নিজেও সেদিন পুলিশের গুলিতে প্রাণ হারান।

নিহত ওই আন্দোলনকারীর নাম মিরাজ হোসেন। পুলিশ যখন বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলিবর্ষণ শুরু করে, সেই সময়ের ভিডিও ধারণ করেছেন মিরাজ। মর্মান্তিকভাবে মোবাইল ক্যামেরায় ওই ভিডিওতে তার জীবনের শেষ মুহূর্তও ধরা পড়েছে।

মিরাজের মৃত্যুর পর পরিবারের সদস্যরা তার মোবাইলটি খুঁজে পান এবং ফোনে সংরক্ষিত ভিডিওটি বিবিসিকে দেন। ভিডিওর মেটাডেটা বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, সেদিন নির্বিচারে গুলিবর্ষণের ঘটনাটি শুরু হয়েছিল দুপুর ২টা ৪৩ মিনিটে।

ভিডিওটিতে যাত্রাবাড়ী থানার মূল ফটকে বিক্ষোভকারীদের সামনে সেনাবাহিনীর একটি দলকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। এরপর হঠাৎ করেই তারা ওই এলাকা থেকে সরে যান। এ ঘটনার কিছুক্ষণের মধ্যেই যাত্রাবাড়ী থানার ভেতরের পুলিশ সদস্যরা ফটকের সামনে অবস্থানরত বিক্ষোভকারী জনতার ওপর আকস্মিকভাবে গুলিবর্ষণ শুরু করেন।

থানার উল্টো দিকে অবস্থিত একটি ভবনের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যাচ্ছে, পুলিশ গুলি চালানো শুরু করার পর প্রাণ বাঁচাতে গলির ভেতর দিয়ে ছুটে পালাচ্ছেন বিক্ষোভকারীরা। ওই সময়ের আরেকটি ভিডিওতে আহতদের শরীরে লাথি মারতেও দেখা যায় পুলিশকে।

অনুসন্ধানে বিবিসি দেখেছে, পাঁচ আগস্ট বিকেলে যাত্রাবাড়ী থানার সামনে ৩০ মিনিটেরও বেশি সময় ধরে গণহত্যা চালানো হয়েছিল। ঘটনার সময়ের কিছু ড্রোন ভিডিও বিবিসির হাতে এসেছে।

ভিডিওর মেটাডেটার তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, বিকেল তিনটা ১৭ মিনিটেও যাত্রাবাড়ী থানার সামনের মহাসড়কে বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি চালাচ্ছিল পুলিশ। এরপর তাদের বড় একটি দলকে থানার উল্টো পাশে অবস্থিত একটি অস্থায়ী সেনা ব্যারাকে আশ্রয় নিতে দেখা যায়।

ড্রোন ভিডিওতে মহাসড়কের ওপর হতাহতদের একাধিক মৃতদেহ পড়ে থাকতেও দেখা গেছে। ভ্যান-রিকশা এবং বাইকে করে আহতদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন আন্দোলনকারীরা।

পরবর্তী কয়েক ঘণ্টার মধ্যে আন্দোলনকারীদের একটি অংশ শাহবাগের দিকে চলে যান। আর যারা তখনও যাত্রাবাড়ীতে ছিলেন, তাদের মধ্যে বিক্ষুব্ধ একটি অংশ থানায় আগুন দেন। এ ঘটনায় পুলিশের কমপক্ষে ছয়জন সদস্য নিহত হন।

পাঁচ আগস্ট বিকেলে পুলিশের নির্বিচার গুলির ঘটনার পর আহতদেরকে আশপাশের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা বহু ব্যক্তিকে মৃত ঘোষণা করেন। সেদিন যাত্রাবাড়ীতে অন্তত ৩০ জন বিক্ষোভকারী নিহত হন বলে প্রাথমিকভাবে জানা যাচ্ছিল।

কিন্তু গণমাধ্যমে প্রকাশিত তখনকার খবর, নিহতদের পরিবারের সাক্ষাৎকার, হাসপাতালের নথি এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বিভিন্ন পোস্টের সত্যতা যাচাই করার পর বিবিসি দেখেছে, পাঁচ আগস্ট যাত্রাবাড়ীতে কমপক্ষে ৫২ জন সাধারণ মানুষ নিহত হন। এর বাইরে সেদিন আরও অন্তত ছয়জন পুলিশ নিহত হন।

১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার যুদ্ধে অংশগ্রহণকারীদের বংশধরদের জন্য চাকরিতে বরাদ্দকৃত কোটা বাতিলের দাবিতে গত বছরের জুলাইয়ে এই আন্দোলন শুরু হয়। পরে শিগগিরই এটি গণ-আন্দোলনে রূপ নেয় এবং দীর্ঘ ১৫ বছর ক্ষমতায় থাকার পর হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করে। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের পর বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ সহিংসতা ছিল এটি।

এই আন্দোলনে সবচেয়ে রক্তাক্ত দৃশ্য দেখা যায় ৫ আগস্ট। সেদিন বিক্ষুব্ধ জনতা ঢাকায় শেখ হাসিনার সরকারি বাসভবনে ঢুকে পড়ার আগমুহূর্তে তিনি হেলিকপ্টারে পালিয়ে যান। বিবিসি ওয়ার্ল্ড সার্ভিসের তদন্তে ঢাকায় বিক্ষোভকারীদের ওপর পুলিশের হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে অপ্রকাশিত কিছু তথ্য বেরিয়ে এসেছে। বিশেষ করে, মৃতের সংখ্যা অনেক বেশি ছিল বলে প্রমাণ পেয়েছে বিবিসি।

ইয়ারশট জানিয়েছে, অডিওটি সম্ভবত এমন একটি কক্ষে রেকর্ড করা হয়েছে, যেখানে ফোনকলটি স্পিকারে চালানো হচ্ছিল। কারণ এতে নির্দিষ্ট ধরনের টেলিফোনিক ফ্রিকোয়েন্সি ও ব্যাকগ্রাউন্ড সাউন্ড রয়েছে। এতে ইলেকট্রিক নেটওয়ার্ক ফ্রিকোয়েন্সির (ইএনএ) উপস্থিতিও পাওয়া গেছে। কোনো ইলেকট্রনিক ডিভাইস ও বিদ্যুৎ চালিত যন্ত্রপাতির মধ্যে হস্তক্ষেপ করা হলে এই ইএনএ অডিওতে উপস্থিত থাকে, এবং এটা প্রমাণ করে অডিওটি পরিবর্তন করা হয়নি।

ইয়ারশট হাসিনার কথোপকথনের ধ্বনি, উচ্চারণ, নিশ্বাসের শব্দ এবং স্বর ভঙ্গি বিশ্লেষণ করে জানিয়েছে যে, রেকর্ডিংয়ে কোনো কৃত্রিম শব্দ নেই। এই বিষয়ে ব্রিটিশ মানবাধিকার আইনজীবী টবি ক্যাডম্যান বিবিসিকে বলেন, ‘এই রেকর্ডিংগুলো তার ভূমিকা প্রমাণে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এগুলো স্পষ্ট, যথাযথভাবে যাচাই করা হয়েছে এবং অন্যান্য প্রমাণ দ্বারাও সমর্থিত।’ ক্যাডম্যান বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনাসহ অন্যদের বিরুদ্ধে চলা মামলার পরামর্শক।

আওয়ামী লীগের এক মুখপাত্র নাম প্রকাশ না করে বলেছেন, ‘বিবিসি যে রেকর্ডিংয়ের কথা বলছে, তা আমরা সত্যতা যাচাই করতে পারছি না।’

শেখ হাসিনার পাশাপাশি সাবেক সরকার ও পুলিশের একাধিক কর্মকর্তাকে বিক্ষোভকারীদের হত্যা-অভিযানে সম্পৃক্ত হিসেবে অভিযুক্ত করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মোট ২০৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে, যাদের মধ্যে ৭৩ জন বর্তমানে কারাগারে।

বিবিসি আই শত শত ভিডিও, ছবি এবং নথি বিশ্লেষণ করে ৩৬ দিনব্যাপী বিক্ষোভে পুলিশের আক্রমণের বিস্তারিত তুলে এনেছে। তদন্তে দেখা গেছে, ৫ আগস্ট ঢাকার ব্যস্ত এলাকা যাত্রাবাড়ীতে পুলিশের গুলিতে অন্তত ৫২ জন নিহত হন—যা বাংলাদেশের ইতিহাসে অন্যতম ভয়াবহ পুলিশ সহিংসতা। ঘটনার সময়কার প্রাথমিক প্রতিবেদনে ৩০ জন নিহতের কথা বলা হয়েছিল। বিবিসির তদন্তে ওই হত্যাকাণ্ড কীভাবে শুরু ও শেষ হয়, সে বিষয়ে নতুন তথ্য পাওয়া গেছে।

প্রত্যক্ষদর্শীদের মোবাইল ফুটেজ, সিসিটিভি এবং ড্রোন চিত্র ব্যবহার করে বিবিসি আই নিশ্চিত করেছে যে, সেখানে সেনা সদস্যরা পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের মাঝামাঝি অবস্থানে ছিল। তারা সরে যাওয়ার পরপরই পুলিশ নির্বিচারে গুলি ছোড়ে। ৩০ মিনিটেরও বেশি সময় ধরে পুলিশ দৌড়ে পালাতে থাকা বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে গুলি চালায়। শেষ পর্যন্ত তারা একটি সেনা ক্যাম্পে আশ্রয় নেয়। ঘটনার ঘণ্টা কয়েক পর বিক্ষোভকারীরা যাত্রাবাড়ী থানায় আগুন ধরিয়ে দেয় এবং পাল্টা হামলায় ছয় পুলিশ সদস্য নিহত হয়।

বাংলাদেশ পুলিশের এক মুখপাত্র বিবিসিকে জানান, গত বছরের জুলাই ও আগস্টের সহিংসতায় জড়িত থাকার অভিযোগে ৬০ জন পুলিশ সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘বিচারের অপেক্ষায় থাকা এসব ঘটনার মধ্যে কিছু ক্ষেত্রে পুলিশ সদস্যদের অতিরিক্ত বলপ্রয়োগে যুক্ত থাকার দুঃখজনক ঘটনা ঘটেছে। বাংলাদেশ পুলিশ এই সব বিষয়ে নিরপেক্ষ ও গভীর তদন্ত করছে।’

শেখ হাসিনার বিচার শুরু হয়েছে গত মাসে। তার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধ, গণহত্যার নির্দেশ, সাধারণ নাগরিকদের ওপর সহিংসতা, উসকানি, ষড়যন্ত্র ও গণহত্যা ঠেকাতে ব্যর্থ হওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে। বাংলাদেশের অনুরোধ সত্ত্বেও ভারত এখনো তাকে দেশে ফেরত পাঠায়নি। শেখ হাসিনার দেশে ফিরে বিচারপ্রক্রিয়ায় অংশ নেওয়ার সম্ভাবনা নেই বলে জানান টবি ক্যাডম্যান।

আওয়ামী লীগ দাবি করেছে, বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে বলপ্রয়োগে তাদের নেতারা দায়ী নন। দলের এক মুখপাত্র বলেন, ‘দলের কোনো জ্যেষ্ঠ নেতা, এমনকি (ক্ষমতাচ্যুত তৎকালীন) প্রধানমন্ত্রী নিজেও ব্যক্তিগতভাবে সহিংসতার নির্দেশ দিয়েছেন বা দায়িত্বে ছিলেন—আওয়ামী লীগ এমন দাবি দৃঢ়ভাবে অস্বীকার ও প্রত্যাখ্যান করে।’

তিনি আরও বলেন, ‘জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা যে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, তা ছিল যথোপযুক্ত, সদিচ্ছাপূর্ণ এবং প্রাণহানির ঝুঁকি কমানোর লক্ষ্যে।’ দলটি জাতিসংঘের তদন্তকারীদের প্রতিবেদনও প্রত্যাখ্যান করেছে। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, শেখ হাসিনা ও তার সরকারের কর্মকাণ্ড মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে।

বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মন্তব্য চেয়ে বিবিসি যোগাযোগ করলেও কোনো সাড়া পায়নি।

শেয়ার করতে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *