■ নাগরিক প্রতিবেদক ■
চট্টগ্রাম বন্দর নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) নিয়ে চুক্তির সব কার্যক্রম মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত বন্ধ করতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
বৃহস্পতিবার বিকেলে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের বিদেশি কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি সম্পর্কিত শুনানি শেষে এ নির্দেশ দেওয়া হয়।
বিচারপতি ফাতেমা নজীবের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চ এ মৌখিক নির্দেশ দেন। এ সময় রাষ্ট্রপক্ষ সব কার্যক্রম বন্ধ রাখার আশ্বাস দেন।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন ও আহসানুল করিম, সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী মো. আনোয়ার হোসেন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে অংশ নেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল অনীক আর হক।
জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আহসানুল করিম বলেন, আদালত পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী মঙ্গলবার দিন রাখেন। তখন আবেদনকারীপক্ষ থেকে চুক্তি–সম্পর্কিত প্রক্রিয়ায় স্থিতাবস্থা চাওয়া হয়। কারণ, ১৩ নভেম্বর রাষ্ট্রপক্ষ বলেছিল, শুনানি শেষ না হওয়া পর্যন্ত কোনো পদক্ষেপ নেবে না। অথচ ইতিমধ্যে চুক্তি প্রক্রিয়ার জন্য মূল্যায়ন কমিটি গঠনের প্রস্তাবও গ্রহণ করা হয়েছে। আদালত অসন্তোষ প্রকাশ করে শুনানি শেষ না হওয়া পর্যন্ত ওই চুক্তিপ্রক্রিয়া এগিয়ে না নিতে রাষ্ট্রপক্ষকে মৌখিকভাবে নির্দেশ দিয়েছেন। শুনানি না হওয়া পর্যন্ত এ ব্যাপরে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হবে না বলে আদালতকে বলেছেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল।
গত ৩০ জুলাই এনসিটি পরিচালনার বিষয়ে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ এবং একটি বিদেশি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে হওয়া চুক্তির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা রিটের শুনানি নিয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট।
এর আগে নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল বিদেশি কোম্পানির কাছে হস্তান্তরের বৈধতা প্রশ্নে বাংলাদেশ যুব অর্থনীতিবিদ ফোরামের সভাপতি মির্জা ওয়ালিদ হোসাইন এ রিট আবেদন করেন। গত ৩০ জুলাই এনসিটি পরিচালনার বিষয়ে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ এবং একটি বিদেশি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে হওয়া চুক্তির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে এই রিট দায়ের করে।
সে রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে আদালত রুল জারি করেন। পরবর্তীতে গত ১৩ নভেম্বর হাইকোর্ট রুল শুনানির জন্য ১৯ নভেম্বর দিন ধার্য করেন। ফলে গত ১৯ নভেম্বর থেকে মামলাটির রুলের ওপর শুনানি শুরু হয়। তবে আজ বৃহস্পতিবার শুনানি শেষে চুক্তির সব কার্যক্রম স্থগিত রাখতে সরকারকে মৌখিক নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।
উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল পরিচালনার নতুন দায়িত্ব নিয়েছে নৌবাহিনীর প্রতিষ্ঠান চিটাগং ড্রাইডক লিমিটেড। টার্মিনালটি পরিচালনার জন্য বন্দর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সাইফ পাওয়ারটেকের চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার পর ৬ জুলাই দিবাগত রাত ১২টা ১ মিনিটে এ দায়িত্ব নেয় জাহাজ মেরামতের এ প্রতিষ্ঠান। প্রথমবারের মতো বন্দরে টার্মিনাল পরিচালনায় যুক্ত হলো চিটাগং ড্রাইডক।
প্রসঙ্গত, চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল নির্মিত হয় ২০০৭ সালে। বৃহৎ এই টার্মিনালটি নির্মাণ ও যন্ত্রপাতি সংযোজনে বন্দর কর্তৃপক্ষ ধাপে ধাপে মোট ২ হাজার ৭১২ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে। চট্টগ্রাম বন্দরের আমদানি-রফতানি কনটেইনারের অধিকাংশ এই টার্মিনাল দিয়ে পরিবহন হয়।
