সিলেট বিভাগের এইচএসসি পরীক্ষা স্থগিত

:: সিলেট প্রতিনিধি ::

বন্যায় সৃষ্ট জলাবদ্ধতার কারণে সিলেট বিভাগের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা আগামী ৮ জুলাই পর্যন্ত স্থগিত করা হয়েছে। এই পরীক্ষা ৩০ জুন থেকে শুরু হওয়ার কথা ছিল। 

আন্তশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির কমিটির প্রধান ও ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার জানিয়েছেন, ৯ জুলাই থেকে যে পরীক্ষাগুলো হওয়ার কথা ছিল সেগুলো যথারীতি হবে। 

বৃহস্পতিবার এক জরুরি বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির কমিটির প্রধান ও ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান তপন কুমার সরকার জানান।

তিনি বলেন, ৩০ জুন থেকে সারা দেশে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা ছিল। এর মধ্যে কেবল সিলেট বিভাগের পরীক্ষা ৮ জুলাই পর্যন্ত স্থগিত করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। ৯ জুলাই থেকে যে পরীক্ষাগুলো হওয়ার কথা ছিল সেগুলো যথারীতি চলবে।

এবার ১১টি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় মোট পরীক্ষার্থী ১৪ লাখ ৫০ হাজার ৭৯০ জন। গত বছরের চেয়ে এবার পরীক্ষার্থী বেশি ৯১ হাজার ৪৪৮ জন।

মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে আলিম পরীক্ষায় শিক্ষার্থী ৮৮ হাজার ৭৬ জন। তাদের মধ্যে ছাত্র ৪৭ হাজার ৫৯২ জন ও ছাত্রী ৪০ হাজার ৪৮৪ জন। এইচএসসিতে কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে পরীক্ষার্থী ২ লাখ ৩৪ হাজার ৪৩৩ জন। তাদের মধ্যে ছাত্র ১ লাখ ৬৯ হাজার ৯ জন ও ছাত্রী ৬৫ হাজার ৪২৪ জন। বিদেশে আটটি কেন্দ্রে মোট ২৮১ জন শিক্ষার্থী এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেবে।

২০২৩ সালের তুলনায় এবার পরীক্ষার্থী বেড়েছে ৯১ লাখ ৪৪৮ জন। মোট প্রতিষ্ঠান বেড়ে ২৯৪টি ও কেন্দ্র বেড়েছে ৬৭টি।

২০২৪ সালের পুনর্বিন্যাসকৃত পাঠ্যসূচি অনুযায়ী সকল বিষয়ে পূর্ণ নম্বর ও পূর্ণ সময়ে পরীক্ষা হবে এবার। তবে কোথাও বন্যা দেখা দিলে শুধু ওই এলাকার পরীক্ষেই যে স্থগিত করা হবে, তা আগেই জানিয়েছিলেন শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।

গত ৫ জুন সচিবালয়ে এক সভার পর সাংবদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “এইচএসসি পরীক্ষা চলাকালে আবহাওয়ার যে পূর্বাভাস আছে, আমাদের বিভিন্ন নদীর পানি ঊর্ধ্বমুখী, সেখানে বিপৎসীমা অতিক্রম করছে, সেটা নিয়ে এরই মধ্যে আমরা অবগত। যেসব কেন্দ্র এবং অঞ্চল ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা আছে, শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের বিষয়টি মাথায় রেখে আমরা এরই মধ্যে প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি।

“যে অঞ্চলগুলোতে বন্যা আরও ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা আছে। সেখানে পরীক্ষা নেওয়া হবে না প্রাথমিকভাবে। পরে সেই পরীক্ষাগুলা নেওয়ার জন্য আমাদের যথাযথ প্রস্তুতি আছে।”

মন্ত্রী যে সময় ওই বক্তব্য দিয়েছিলেন, তখনও প্রবল বর্ষণ আর উজানের ঢলে সিলেটে বন্যা পরিস্থিতি দেখা দিয়েছিল। কয়েক দিনের মধ্যে সেখানে পরিস্থিতির উন্নতি হলেও ঈদের দুদিন আগে থেকে টানা বৃষ্টিতে ফের বন্যা দেখা দিয়েছে ওই অঞ্চলে।

এ বিভাগের চার জেলার মধ্যে সুনামগঞ্জ এখন মোটামুটি পানির নিজেই ডুবে আছে। সিলেটের বেশিরভাগ এলাকাও প্লাবিত। বন্যা দেখা দিয়েছে মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জের নিচু এলাকাতেও।

সব মিলিয়ে এ বিভাগের ১৬ লাখ মানুষ এখন পানিবন্দি। অনেক এলাকায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও এখন পানির নিচে। যেসব স্কুল বন্যার কবলে পড়েনি, সেগুলো ব্যবহৃত হচ্ছে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে।

প্রবল বর্ষণ আর বন্যার কারণে গত বছরও তিন বোর্ডের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা ১০ দিন পেছাতে হয়েছিল। অন্য সব বোর্ডের পরীক্ষা ১৭ আগস্ট শুরু হলেও চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ড, বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড ও কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা শুরু হয় ২৭ আগস্ট থেকে।

শেয়ার করতে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *