■ ক্রীড়া প্রতিবেদক ■
প্রথমবার এশিয়া কাপের ফাইনালে ভারতের মুখোমুখি হয়েও ব্যর্থ পাকিস্তান দল। শেষ ওভারে ৫ উইকেটের জয়ে নবম বারের মতো ভারত এশিয়া কাপ চ্যাম্পিয়ন হল।
শেষ দুই ওভারে দরকার ১৭ রান। ভারতের ইনিংসের ১৯তম ওভার করতে আসেন ফাহিম আশরাফ। তবে পায়ে টান লাগায় ওভার শুরু করার আগেই মাঠে প্রথমিক চিকিৎসা নিতে হয় তাকে। ওই ওভারে ৭ রান দিয়ে দুবেকে ৩৩ রানে ফিরিয়ে ৬০ রানের জুটি ভাঙেন ফাহিম।
তবে শেষ ওভারে ১০ রান দরকার হলেও সেটি ৪ বলেই নিয়ে নেয় ভারত। শেষ পর্যন্ত ভারত ম্যাচ জেতে ২ বল ও ৫ উইকেট হাতে রেখে।
১৪৭ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুতে বড় ধাক্কা খেলেও শেষ ওভারে তিলক ভার্মা ও রিংকু সিংয়ের ঝড়ে জয় নিশ্চিত করে সূর্যকুমার যাদবের দল। শেষ ওভারে ভারতের দরকার ছিল ১০ রান। বল হাতে ছিলেন হারিস রউফ। প্রথম বলে ২ রান নেন তিলক ও রিংকু। দ্বিতীয় বলেই তিলক ছক্কা মারেন। তৃতীয় বলে তিনি নেন ১ রান। চতুর্থ বলে রিংকু মিড অনের ওপর দিয়ে চার মারেন। ৪ বলে ১৩ রান তুলে নেন দুজন। বিজয়ীর হাসি হাসে ভারত।
যেভাবে শুরু করেছিল পাকিস্তান, সেই শুরু দেখে কল্পনাও করা যায়নি দেড় শ রানের আগেই গুটিয়ে যাবে তারা। ওপেনিংয়ে ৮৪ রানের দারুণ একটা জুটি গড়ে দিয়েছিলেন সাহিবজাদা ফারহান ও ফখর জামান। ভারতীয় বোলারদের পাত্তা দেননি তাঁরা। এমনকি যশপ্রীত বুমরার ওপরও চড়াও হয়ে খেলেছেন তারা। ফারহান তো বুমরাকে তিনটি ছক্কাও হাঁকিয়েছেন। এই সংস্করণে ফারহানই প্রথম ব্যাটার যিনি বুমরাকে তিনটি ছক্কা মারলেন। দুজনে যখন রানের চাকাকে দ্রুত এগিয়ে নিচ্ছিলেন, তখন মনে হয়েছিল আজ হয়তো বড় একটা স্কোরই গড়বে পাকিস্তান। কিন্তু ৩৮ বলে ৫৭ করে ফারহান বরুণ চক্রবর্তীর বলে তিলক ভার্মার তালবন্দী হলে ভাঙে এই জুটি। দারুণ শুরুর পরও পাকিস্তান বিপর্যয়ে পড়ে ১৩তম ওভারে সাইম আইয়ুব আউট হয়ে গেলে। তাঁর আউটের আগে পাকিস্তানের রান ছিল ১ উইকেটে ১১৩। কিন্তু আইয়ুবের বিদায়ের পর একের পর এক উইকেট হারাতে থাকে পাকিস্তান।
পাকিস্তান শেষ ৯ উইকেট হারায় মাত্র ৩৩ রানে। ফারহানের পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩৫ বলে ৪৬ করেন ফখর জামান। রানের দুই অঙ্ক ছোঁয়া পাকিস্তানের তৃতীয় ব্যাটার হলেন সাইম আইয়ুব।
বল হাতে সবচেয়ে সফল স্পিনার কুলদীপ যাদব; ৩০ রানে ৪ উইকেট নিয়েছেন তিনি। ২টি করে উইকেট নিয়েছেন যশপ্রীত বুমরা, বরুণ চক্রবর্তী ও অক্ষর প্যাটেল।
১৪৭ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে পাওয়ারপ্লেতেই চাপে পড়ে ভারত। ৬ ওভারে তাদের স্কোর ছিল ৩৬/৩। দ্রুত আউট হন অভিষেক শর্মা, সূর্যকুমার যাদব ও শুবমান গিল। তবে একপ্রান্ত আগলে রাখেন তিলক ভার্মা। তিনি দায়িত্বশীল ব্যাটিং করে ফিফটি পূরণ করেন। সাঞ্জু স্যামসন ও শিবম দুবের সঙ্গে ছোট ছোট জুটি গড়েন। দুবে আউট হওয়ার পর শেষ দিকে রিংকু সিংকে নিয়ে জয়ের পথ নিশ্চিত করেন তিলক।
আবরার আহমেদের করা নবম ওভারে ডিপ মিডে ক্যাচ তুলেছিলেন সঞ্জু স্যামসন। কিন্তু ব্যক্তিগত ১২ রানে থাকা এই ব্যাটারের একেবারে সহজ ক্যাচ হাতছাড়া করে বসেন হুসাইন তালাত। সেটাই বিপদের তিরটা পাকিস্তানের দিকে ঘুরিয়ে দিয়েছে। এরপর তিলক-স্যামসন মিলে গড়েম বোঝাপড়ার জুটি। রান নিয়ে প্রান্ত বদল করেছেন, সুযোগমতো হাঁকিয়েছেন বাউন্ডারি। ৫৭ রানে সেই জুটি ভেঙেছেন আবরার, ব্যক্তিগত ২৪ রানে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে ক্যাচ দিয়েছেন স্যামসন।
পাকিস্তানের হয়ে শাহিন আফ্রিদি, ফাহিম আশরাফ ও আবরার আহমেদ দারুণ বোলিং করলেও ভারতের ব্যাটারদের থামাতে পারেননি। শেষ ওভারে রউফের বাজে বোলিংও পাকিস্তানের স্বপ্ন ভেঙে দেয়।
এই জয়ে ভারত নবমবারের মতো এশিয়ার চ্যাম্পিয়ন হলো। এর মধ্যে সাতবার ওয়ানডেতে আর দুবার টি–টোয়েন্টিতে শিরোপা জিতল তারা।