■ নাগরিক প্রতিবেদন ■
ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি আগামী ৯ ডিসেম্বর সোমবার বাংলাদেশ সফরে আসছেন। শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল নয়াদিল্লিতে সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে বলেন, ‘ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জসিম উদ্দিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। এছাড়া ঢাকায় আরও কয়েকটি বৈঠক করবেন তিনি।’
পররাষ্ট্রসচিব হওয়ার পর বিক্রম মিশ্রির এটাই হতে চলেছে প্রথম বাংলাদেশ সফর। এমন একটা সময়ে তিনি সে দেশে যাচ্ছেন, যখন দুই দেশের সম্পর্ক খারাপ যাচ্ছে। রাজনৈতিক পালাবদলের পর সে দেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের অভিযোগ ঘিরে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের অবনতি ঘটেছে। বাংলাদেশ মনে করে, হিন্দুদের প্রতি অত্যাচারের অভিযোগ অতিরঞ্জিত। ভারতের গণমাধ্যম ও রাজনৈতিক দল তা নিয়ে অপপ্রচার চালাচ্ছে।
ভারতের পররাষ্ট্র সচিব ৯ ডিসেম্বর বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে ফরেন অফিস কনসালটেশন করবেন। এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেছেন, এটি বাংলাদেশের সঙ্গে আমাদের নিয়মিত যোগাযোগের অংশ।
গত ৫ আগস্ট হাসিনা সরকারের পতনের পর এই প্রথম উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে শামিল হচ্ছে দুই দেশ। যদিও ইউনুস সরকারের গত চার মাসে দু-দেশের তিনটি টেকনিক্যাল কমিটির বৈঠক করেছে।
ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে গত আগস্টে শেখ হাসিনা সরকারের পতন এবং তার ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে সম্পর্ক হিমশীতল অবস্থায় পৌঁছেছে। এখন নতুন করে সংখ্যালঘু ইস্যু নিয়ে দেশ দুটির মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কেও টানাপোড়ন দেখা দিয়েছে।
ইসকন নেতা চিন্ময় দাসকে গ্রেফতারের পর পরিস্থিতি আরও ঘোলাটে হয়। তাকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে ভারতের একাধিক স্থানে বিক্ষোভ হয়েছে। এ ছাড়া গত সোমবার (২ ডিসেম্বর) ত্রিপুরার আগরতলায় অবস্থিত বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলার ঘটনাও ঘটেছে। এ ঘটনায় শক্ত প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে বাংলাদেশ। শুধু প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বাংলাদেশ থেমে যায়নি। ঘটনার একদিন পর ভারতীয় হাইকমিশনারকে ডেকে ক্ষোভ জানায় ঢাকা।
উল্লেখ্য, এর আগে সবশেষ পররাষ্ট্র দপ্তরের পরামর্শের বৈঠক ২০২৩ সালের নভেম্বর মাসে নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এবারের এই বৈঠকে ভারতের অর্থায়নে উন্নয়ন প্রকল্প পুনরায় শুরু করা, ভিসা ব্যবস্থার সহজীকরণ, সরাসরি ফ্লাইট বাড়ানো এবং বাণিজ্য ও বিনিয়োগের বিষয়গুলো আলোচনা করা হবে বলে জানা গেছে।
হিন্দুস্তান টাইমস বলছে, বাংলাদেশ এই সফরকে এগিয়ে নিতে আগ্রহী। কারণ একে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা কমানো এবং সম্পর্ক স্বাভাবিক করার পদক্ষেপ নেয়ার সুযোগ হিসেবে দেখা হচ্ছে।