পদত্যাগ করলেন ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর প্রধান

■ নাগরিক নিউজ ডেস্ক ■

ব্যর্থতার দায় স্বীকার করে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন ইসরায়েলের সেনাপ্রধান হারজি হালেভি। মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন তিনি।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার ঘটনায় নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা ব্যর্থতার দায় স্বীকার করে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন হালেভি। তিনি আগামী ৬ মার্চ পদত্যাগ করবেন।

ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রীকে পাঠানো পদত্যাগপত্রে হালেভি লিখেছেন, ‘২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর সকালে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) আমাদের নাগরিকদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। এই ব্যর্থতা আমাকে আজীবন তাড়া করে বেড়াবে।’

সামরিক বাহিনীর বিদায়ী প্রধান বলেন, ‘যুদ্ধের সব লক্ষ্য অর্জিত হয়নি। হামাসের লড়াই করার এবং সরকার পরিচালনার সক্ষমতা ধ্বংস করে দিতে; জিম্মিদের ফিরিয়ে আনা এবং জঙ্গিদের হামলার কারণে বাস্তুচ্যুত ইসরায়েলিদের ঘরে ফেরা নিশ্চিত করতে সেনাবাহিনী আরও লড়াই চালিয়ে যাবে।’

পদত্যাগ করায় হালেভির প্রশংসা করেছেন বিরোধীদলীয় নেতা ইয়ার লাপিদ। একইভাবে প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকেও পদত্যাগের আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। লাপিদ বলেন, ‘এখনই প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর গোটা বিপর্যয়কর মন্ত্রিসভার দায় নেওয়ার এবং পদত্যাগের সময়।’

ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর সাউদার্ন কমান্ডের প্রধান মেজর জেনারেল ইয়ারোন ফিনকেলম্যানও পদত্যাগ করেছেন। গাজা এই সাউদার্ন কমান্ডের অধীনেই পড়েছে।

এমন সময় ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর শীর্ষস্থানীয় দুই কর্মকর্তা পদত্যাগ করলেন, যখন গাজায় ১৫ ধরে চলা যুদ্ধ গত রোববার যুদ্ধবিরতির মাধ্যমে বন্ধ হয়েছে।

গাজায় গত ১৫ মাসের ইসরায়েলি আগ্রাসন চলাকালে বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সরকারের কট্টরপন্থী মন্ত্রীরা হালেভির ব্যাপক সমালোচনা করেছেন। তাদের মতে, গাজায় সামরিক অভিযানের ক্ষেত্রে নমনীয় ভূমিকা পালন করেছেন সেনাপ্রধান। যদিও হালেভির বাহিনী এসময়ে গাজায় গণহত্যা চালিয়েছে বলে অভিযোগ করেছে জাতিসংঘসহ বিশ্বের সব শীর্ষ মানবাধিকার সংস্থা।

উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরাইলের সীমান্তে প্রবেশ করে আকস্মিক হামলা চালায় ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। এরপরেই গাজায় পালটা আক্রমণ চালায় ইসরায়েল। এক বছরের বেশি সময় ধরে গাজায় ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে দখলদার সেনারা।

গাজার হামাস-নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সেখানে এখন পর্যন্ত ৪৭ হাজার ৩৫ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। এছাড়া আহত হয়েছে আরও ১ লাখ ১১ হাজার ৯১ ফিলিস্তিনি। হতাহতদের মধ্যে অধিকাংশই নারী এবং শিশু।

শেয়ার করতে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *