■ নাগরিক নিউজ ডেস্ক ■
গাজামুখী ‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’র থেকে আটক হওয়া ১৩০ মানবাধিকার কর্মীকে মঙ্গলবার জর্ডানে পাঠিয়েছে ইসরায়েল। আলেনবি সেতু দিয়ে এই কর্মীদের দেশে প্রবেশের ব্যবস্থা করা হয়।
জর্ডানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, মুক্তিপ্রাপ্তদের মধ্যে বাহরাইন, তিউনিসিয়া, আলজেরিয়া, ওমান, কুয়েত, লিবিয়া, পাকিস্তান, তুরস্ক, আর্জেন্টিনা, অস্ট্রেলিয়া, ব্রাজিল, কলম্বিয়া, চেক প্রজাতন্ত্র, জাপান, মেক্সিকো, নিউজিল্যান্ড, সার্বিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, সুইজারল্যান্ড, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও উরুগুয়ের নাগরিক রয়েছেন।
জর্ডানের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সহায়তায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাদের সীমান্ত পারাপারের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করে এবং প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করে।
গত সপ্তাহে ইসরায়েলি সেনারা গাজায় ত্রাণ বহনকারী ‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’র ৪২টি নৌকা আটক করে এবং ৪৫০ জনের বেশি কর্মীকে গ্রেফতার করে, যা আন্তর্জাতিকভাবে তীব্র সমালোচনার জন্ম দেয়। এর আগে ইসরায়েল ইতালি ও তুরস্কে কয়েক ডজন কর্মীকে ফেরত পাঠায়।
সোমবার আরও ১৭১ জনকে ইউরোপের দুটি দেশে পাঠানোর পর, মঙ্গলবার নতুন করে ১৩০ জনকে জর্ডানে পাঠানো হয়। ফ্লোটিলার বেশ কয়েকজন মানবাধিকার কর্মী ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে অমানবিক আচরণের অভিযোগ করেছেন। সুইজারল্যান্ড ও স্পেনের কর্মীরা জানিয়েছেন, আটক অবস্থায় ঘুমাতে দেওয়া হয়নি, পর্যাপ্ত খাবার-পানি দেওয়া হয়নি, এমনকি কেউ কেউ মারধরের শিকার হয়েছেন।
একটি সুইস সংগঠন জানায়, তাদের প্রতিনিধিত্বকারী নয়জন কর্মী দেশে ফিরে জানান যে, আটকাবস্থায় কেউ খাঁচায় বন্দি ছিলেন, কেউ আবার লাথি ও ঘুষির আঘাত পেয়েছেন।
শনিবার সুইডিশ কর্মীরা দাবি করেন, জলবায়ু আন্দোলনকর্মী গ্রেটা থুনবার্গকেও ধাক্কা দিয়ে ইসরায়েলি পতাকা পরতে বাধ্য করা হয়েছে।
অন্যরা জানান, তাদের খাবার, পানি, ওষুধ এবং ব্যক্তিগত সামগ্রী কেড়ে নেওয়া হয়। তবে ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র এসব অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন।
‘সুমুদ ফ্লোটিলা’ ছিল আন্তর্জাতিক মানবাধিকার কর্মীদের একটি সংগঠিত প্রচেষ্টা, যা গাজার অবরোধ ভেঙে সরাসরি ত্রাণ পৌঁছাতে চেয়েছিল। অংশগ্রহণকারীরা দাবি করেন, তারা শুধুই মানবিক সহায়তা পৌঁছে দিতে গিয়েছিলেন।
তবে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ ফ্লোটিলাকে ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ আখ্যা দিয়ে অভিযান চালায়, যা এখন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলোর তদন্তের দাবিকে আরও জোরালো করছে।