নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনে সার্চ কমিটি গঠন

■ নাগরিক প্রতিবেদন ■

নতুন নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনের লক্ষে সার্চ কমিটির প্রধান হচ্ছেন আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী। একই সঙ্গে কমিটির সদস্য হিসেবে হাইকোর্টের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি একেএম আসাদুজ্জামানকে মনোনীত করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) কমিটির প্রধান হিসেবে তার নাম মনোনীত করেন প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ।

এর আগে আজ সচিবালয়ে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন গঠন করার জন্য যে সার্চ কমিটি, সেই সার্চ কমিটি গঠন করা হয়ে গেছে। আমি যতদূর জানি, সেই প্রজ্ঞাপনটা আমাদের প্রধান উপদেষ্টা স্বাক্ষর করে দিলেই আপনারা জানতে পারবেন। হয়তো উনি করেছেনও আজ-কালের মধ্যে জেনে যাবেন। সার্চ কমিটি হয়ে গেলে নির্বাচন কমিশন গঠন করা হবে।’

জাতীয় সংসদে পাস হওয়া প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ সংক্রান্ত আইন অনুযায়ী সার্চ কমিটি গঠন করেন রাষ্ট্রপতি। আপিল বিভাগের একজন বিচারপতির নেতৃত্বে ছয় সদস্যের এ অনুসন্ধান কমিটি গঠিত হয়। এতে সদস্য হিসেবে থাকেন প্রধান বিচারপতির মনোনীত হাইকোর্ট বিভাগের একজন বিচারপিত, মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক, সরকারি কর্ম কমিশনের চেয়ারম্যান এবং রাষ্ট্রপতির মনোনীত দুজন বিশিষ্ট নাগরিক। এ দুই বিশিষ্ট নাগরিকের মধ্যে একজন হবেন নারী।

সার্চ কমিটি আইনে বর্ণিত যোগ্যতা-অযোগ্যতা বিবেচনা করে ইসি গঠনে ১০ জনের নাম প্রস্তাব করবেন। তাদের মধ্য থেকেই পাঁচজনকে নিয়ে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করেন রাষ্ট্রপতি।

সার্চ কমিটির কাজে সাচিবিক সহায়তা দেবে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। কমিটি গঠনের ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে ১০ জনের নাম সুপারিশ করে রাষ্ট্রপতির কাছে পেশ করার বিধান রয়েছে।

‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ বিল-২০২২’ আইন প্রণীত হয় ২০২২ সালের ২৭ জানুয়ারি। ওই আইনের ধারায় ওই বছরের ৫ ফেব্রুয়ারি ছয় সদস্যের সার্চ কমিটি গঠন করেছিলেন রাষ্ট্রপতি। সার্চ কমিটির দায়িত্ব ছিল সিইসিসহ ইসির প্রতিটি শূন্য পদের বিপরীতে দুজনের নাম ১৫ দিনের মধ্যে রাষ্ট্রপতির কাছে সুপারিশ করা।

কমিটি প্রথমে রাজনৈতিক দলসহ সবার কাছ থেকে প্রস্তাব আহ্বান করে ৩২২টি নাম সংগ্রহ করে। এর মধ্যে বিশিষ্টজনদের সঙ্গে বৈঠক করেও মতামত নেয়। সাতটি বৈঠকের পর কমিটি ১০ জনের নাম চূড়ান্ত করে নিজেদের সুপারিশ দেয় রাষ্ট্রপতিকে। প্রথমে আসা ৩২২টি নাম প্রকাশ করলেও চূড়ান্ত সুপারিশে থাকা ১০টি নাম সার্চ কমিটি প্রকাশ করেনি। ফলে এটা জানা যায়নি যে হাবিবুল আউয়ালের সঙ্গে আর কার নাম সার্চ কমিটি সিইসি হিসেবে প্রস্তাব করেছিল। আর কমিশনার হিসেবে নিয়োগ পাওয়াদের বিপরীতে কার কার নাম ছিল, তাও অজানাই রয়ে যায়। এর আগের দুবার প্রস্তাবিত নামগুলো পরে প্রকাশ করা হয়েছিল।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর ৫ সেপ্টেম্বর পদত্যাগ করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল ও চার কমিশনার। কমিশনাররা হলেন- মো. আহসান হাবীব খান, রাশেদা সুলতানা, মো. আলমগীর ও মো. আনিছুর রহমান। 

শেয়ার করতে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *