এআই প্রস্তুতি সূচকে বাংলাদেশের চেয়ে এগিয়ে কেনিয়া

:: নাগরিক নিউজ ডেস্ক ::

এআই কীভাবে বিশ্ব অর্থনীতিকে নতুন রূপ দিতে পারে তা নিয়ে গবেষণা করছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। এ ক্ষেত্রে দেশগুলোর প্রস্তুতির পরিস্থিতি নিয়ে একটি সূচক প্রকাশ করেছে আইএমএফ, যার নাম এআই প্রস্তুতি সূচক এআইপিআই।

এআই উন্নত দেশগুলোর ৩৩ শতাংশ, উদীয়মান দেশগুলোর ২৪ শতাংশ ও নিম্ন আয়ের দেশগুলির ১৮ শতাংশ চাকরি বিপন্ন করতে পারে। তবে ভালো দিক হলো- বিদ্যমান চাকরির উৎপাদনশীলতা বাড়ানোর ক্ষেত্রে এআই বড় পরিপূরক হাতিয়ার হতে পারে। এটি নতুন চাকরি, এমনকি নতুন শিল্পক্ষেত্রও তৈরি করতে পারে।

ডিজিটাল অবকাঠামো, মানবপুঁজি ও শ্রমনীতি, উদ্ভাবন ও একীকরণ, বিধিমালা—এই চার বিষয়ের ওপর ভিত্তি করে সূচকটি তৈরি হয়েছে। এতে সর্বনিম্ন শূন্য থেকে সর্বোচ্চ ১ পর্যন্ত স্কেলে মান ধরা হয়েছে। 

সরকারিসহ বিভিন্ন উৎস থেকে তথ্য সংগ্রহ করেছে আইএমএফ। এর মধ্যে আছে— ফ্রেজার ইনস্টিটিউট, আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা, আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগ ইউনিয়ন, জাতিসংঘ, জাতিসংঘের বাণিজ্য ও উন্নয়ন সংস্থা আঙ্কটাড, ইউনিভার্সাল পোস্টাল ইউনিয়ন, বিশ্বব্যাংক, ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম।

বিশ্বের ১৭৪টি দেশের তথ্য নিয়ে গত ২৫ জুন এআইয়ের প্রস্তুতি সূচকটি প্রকাশ করা হয়। এআইয়ের প্রস্তুতি সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান ১১৩তম। কেনিয়া, রুয়ান্ডা, ঘানা, সেনেগালের মতো আফ্রিকার দেশের চেয়ে বাংলাদেশ পিছিয়ে আছে। আর ভারত, শ্রীলঙ্কা, ভুটান, ভিয়েতনাম, ইন্দোনেশিয়ার মতো দেশতো এগিয়ে আছেই। 

এআইয়ের প্রস্তুতির সূচকে শূন্য দশমিক ৮০ মান নিয়ে শীর্ষে রয়েছে সিঙ্গাপুর। আর সূচকে নিম্ন আয়ের দেশের তালিকায় থাকা বাংলাদেশের এআই প্রস্তুতির মান শূন্য দশমিক ৩৮।

সূচকের বিভিন্ন ভিত্তির মধ্যে ডিজিটাল অবকাঠামোয় বাংলাদেশের মান শূন্য দশমিক শূন্য ৯। মানবপুঁজি ও শ্রমনীতিতে শূন্য দশমিক শূন্য ৯। উদ্ভাবন ও একীকরণে শূন্য দশমিক ১১ এবং বিধিমালায় শূন্য দশমিক ১০।

এআই হচ্ছে বিজ্ঞানের এমন ক্ষেত্র, যেখানে প্রযুক্তি তথ্য বিশ্লেষণ করে যুক্তি দিতে পারে, শিখতে পারে। পাশাপাশি তারা এমনভাবে কাজ করতে পারে, যার জন্য সাধারণত মানুষের বুদ্ধিমত্তার প্রয়োজন হয়।

আইএমএফের প্রতিবেদনে বলা হয়, উচ্চ দক্ষতাভিত্তিক চাকরির ক্ষেত্রে উন্নত দেশের চেয়ে বেশির ভাগ উদীয়মান অর্থনীতি ও নিম্নআয়ের দেশ কম প্রভাবিত হবে। এসব দেশের ক্ষেত্রে চাকরিতে এআইয়ের প্রভাব কম পড়বে। তবে এসব দেশে এআইয়ের সুবিধা কাজে লাগানোর মতো প্রয়োজনীয় অবকাঠামো ও দক্ষ কর্মীর অভাব আছে। এই বিষয়টি অন্যদের সঙ্গে এই দেশগুলোর বৈষম্য বাড়াতে পারে।

এআইয়ের সম্ভাব্য সুবিধাগুলো কাজে লাগানোসহ ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার জন্য প্রস্তুতির ক্ষেত্রে বিভিন্ন দেশ ভিন্ন ভিন্ন পর্যায়ে রয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। বলা হয়, বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এআই সামগ্রিক বৈষম্যকে আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে, যা রোধে নীতিনির্ধারকেরা কাজ করতে পারে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, উন্নত অর্থনীতির দেশে প্রায় ৩০ শতাংশ চাকরি এআইয়ের একীকরণ থেকে সুফল পেতে পারে। যেসব কর্মী প্রযুক্তি ব্যবহারে দক্ষ, তাঁদের উৎপাদনশীলতা বাড়বে। বাড়বে বেতন। আরা যাঁরা তা পারবেন না, তাঁরা পিছিয়ে পড়তে পারেন।

এআই প্রস্তুতির ক্ষেত্রে উদীয়মান বাজার ও উন্নয়নশীল অর্থনীতির দেশগুলোকে ডিজিটাল অবকাঠামোসহ কর্মীদের প্রশিক্ষণে বিনিয়োগের মাধ্যমে একটি শক্তিশালী ভিত্তি স্থাপনের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে প্রতিবেদনে।

শেয়ার করতে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *