লন্ডনে জিয়া পরিবারের পুনর্মিলন

■ যুক্তরাজ্য প্রতিনিধি ■

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডনে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ৭ বছর পর লন্ডনে গিয়ে ছেলে তারেক রহমান ও পুত্রবধূ জুবাইদা রহমানের সঙ্গে আবেগঘন পুনর্মিলন ঘটে তার। 

বিমানবন্দরে খালেদা জিয়াকে স্বাগত জানান তাঁর বড় ছেলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও পুত্রবধূ জুবাইদা রহমান। যুক্তরাজ‍্যে বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার হজরত আলী খান বিমানবন্দরে খালেদা জিয়াকে ফুল দিয়ে স্বাগত জানান। যুক্তরাজ্য বিএনপির শীর্ষস্থানীয় নেতারাও বিমানবন্দরে খালেদা জিয়াকে স্বাগত জানান। বিএনপির চেয়ারপারসনের আগমন উপলক্ষে বিমানবন্দরের বাইরে সমবেত হন দলের কয়েক শ নেতা-কর্মী। সেখানে ইমিগ্রেশনের কাজ শেষে হাসপাতালের উদ্দেশে যাত্রা করেন বিএনপির নেত্রী।

হিথ্রো বিমানবন্দর থেকে নিজে গাড়ি চালিয়ে মা খালেদা জিয়াকে নিয়ে লন্ডন ক্লিনিক গেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। বুধবার (৮ জানুয়ারি) স্থানীয় সময় সকাল ৮টা ৫৯ মিনিটে বিএনপি চেয়ারপারসনকে বহনকারী এয়ার অ্যাম্বুলেন্স লন্ডনের হিথ্রো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।

এরপর যখন হুইল চেয়ারে করে মা খালেদা জিয়া ছেলের কাছে এলেন সঙ্গে সঙ্গে জড়িয়ে ধরে স্বাগত জানান। মুহূর্তেই সেখানে আবেগঘন মধুর পরিবেশ সৃষ্টি হয়। মাকে জড়িয়ে ধরতে পারার অধিকার থেকে বঞ্চিত থাকার দুঃখ হয়তো খানিকের জন্য ভুলে গিয়েছিলেন তিনি।

এছাড়া যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি এমএ মালেক ও সাধারণ সম্পাদক কয়সর এম আহমেদ উপস্থিত ছিলেন। এ সময় বিমানবন্দরের বাইরে উপস্থিত নেতাকর্মীরা খালেদা জিয়াকে লন্ডরে স্বাগত জানিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দেন।

বিএনপি চেয়ারপারসনের মিডিয়া ইউংয়ের কর্মকর্তা শামসুদ্দিন দিদার এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, লন্ডনে পৌঁছানোর পর হিথ্রো বিমানবন্দর থেকে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য ‘লন্ডন ক্লিনিক’ ভর্তি করা হবে তাকে।

মঙ্গলবার রাতে কাতারের আমিরের পাঠানো বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে খালেদা জিয়া লন্ডনের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন। উড়োজাহাজটি বুধবার (৮ জানুয়ারি) সকালে লন্ডনের হিথরো বিমানবন্দরে পৌঁছালে, বিমানবন্দরে তাকে স্বাগত জানান তার বড় ছেলে তারেক রহমান এবং অন্যান্য নেতারা।

খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে লিভার সিরোসিস, কিডনি, হার্ট, ডায়াবেটিস এবং আর্থ্রাইটিসসহ নানা শারীরিক সমস্যায় ভুগছেন। চিকিৎসকদের মতে, তার লিভার প্রতিস্থাপন জরুরি, এবং চিকিৎসা শেষে তাকে কয়েক মাস সময় লাগতে পারে। বর্তমানে, তাকে লন্ডনের দ্য ক্লিনিক হাসপাতালে প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। পরবর্তীতে, মেরিল্যান্ডের জনস হপকিনস হাসপাতালেও তার চিকিৎসা নেওয়ার কথা রয়েছে।

যুক্তরাজ্য বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কামাল উদ্দিন গণমাধ্যমকে বলেন, খালেদা জিয়াকে বিমানবন্দর থেকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছে। বাংলাদেশ থেকে খালেদা জিয়ার সঙ্গে আসা চিকিৎসকেরা যুক্তরাজ্যের দ্য ক্লিনিকের চিকিৎসকদের কাছে খালেদা জিয়াকে কাগজপত্রসহ বুঝিয়ে দিচ্ছেন। এখন প্রয়োজনীয় সব পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও কাগজপত্র দেখে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা শুরু হবে।

লন্ডনের এই ক্লিনিকে কিছুদিন চিকিৎসার পর যুক্তরাষ্ট্রের মেরিল্যান্ডের জনস হপকিনস বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা নেওয়ার কথা রয়েছে। ২০২৩ সালের অক্টোবরে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ঢাকায় আসা জনস হপকিনস বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের তিন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে খালেদা জিয়ার শরীরে রক্তনালিতে সফল অস্ত্রোপচার হয়েছিল।

২০১৮ সালে কারাবন্দি হওয়ার পর খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে পরিবারের পক্ষ থেকে তার বিদেশে চিকিৎসার অনুমতি চাওয়া হলেও সরকার তা মঞ্জুর করেনি। তবে, ২০২৩ সালের আগস্টে তার মুক্তির পর তিনি অবশেষে চিকিৎসার জন্য বিদেশ যেতে সক্ষম হন।

বিএনপির চেয়ারপারসন সর্বশেষ ২০১৭ সালের জুলাইয়ে লন্ডন সফরে গিয়েছিলেন। এরপর তার আর কোনও বিদেশ সফর হয়নি। এই সময়ের মধ্যে তার সঙ্গে ছেলে তারেক রহমানেরও সরাসরি দেখা হয়নি।

উন্নত চিকিৎসার জন্য যুক্তরাজ্যের উদ্দেশে মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) রাতে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে ঢাকা ছাড়েন সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। রাত ১১টা ৪৬ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়ন করে কাতার আমিরের পাঠানো এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি। এই সফরের মধ্য দিয়ে নানা চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে সাড়ে সাত বছর পর খালেদা জিয়ার সঙ্গে তার বড় ছেলে ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেখা হলো সাড়ে ৭ বছর পর।

যুক্তরাজ্য বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কামাল উদ্দিন বলেন, খালেদা জিয়াকে বিমানবন্দর থেকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছে। বাংলাদেশ থেকে খালেদা জিয়ার সঙ্গে আসা চিকিৎসকেরা যুক্তরাজ্যের দ্য ক্লিনিকের চিকিৎসকদের কাছে খালেদা জিয়াকে কাগজপত্রসহ বুঝিয়ে দিচ্ছেন। এখন প্রয়োজনীয় সব পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও কাগজপত্র দেখে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা শুরু হবে।

লন্ডনের এই ক্লিনিকে কিছুদিন চিকিৎসার পর যুক্তরাষ্ট্রের মেরিল্যান্ডের জনস হপকিনস বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা নেওয়ার কথা রয়েছে। ২০২৩ সালের অক্টোবরে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ঢাকায় আসা জনস হপকিনস বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের তিন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে খালেদা জিয়ার শরীরে রক্তনালিতে সফল অস্ত্রোপচার হয়েছিল।

খালেদা জিয়ার চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, খালেদা জিয়ার লিভার প্রতিস্থাপন খুব জরুরি হয়ে পড়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, লিভার প্রতিস্থাপনের পর পুরো চিকিৎসায় দুই মাসের মতো লেগে যেতে পারে। দলীয় সূত্রে জানা গেছে, চিকিৎসা শেষ হলে বিএনপির চেয়ারপারসন আবার লন্ডনে যাবেন। সেখান থেকে সৌদি আরবে পবিত্র ওমরাহ পালন করে তারপর দেশে ফিরতে পারেন।

গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর রাষ্ট্রপতির এক আদেশে খালেদা জিয়া মুক্তি পান। এরপর দুর্নীতির যে দুটি মামলায় তিনি কারাবন্দী হয়েছিলেন, সেগুলোর রায় বাতিল করেন আদালত।

গতকাল মঙ্গলবার রাত ১১টা ১০ মিনিটে খালেদা জিয়াকে বহনকারী রয়েল এয়ার অ্যাম্বুলেন্স হযরত শাহজালাল বিমানবন্দর ত্যাগ করে। এর আগে রাত ৮টা ১৫ মিনিটে গুলশানের বাসভবন ফিরোজা থেকে খালেদা জিয়ার গাড়িবহর বের হয়। এ সময় তাকে বিদায় জানাতে বিমানবন্দর সড়কে নেতাকর্মীদের ঢল নামে। পথে পথে জড়ো হন হাজারো নেতাকর্মী। এতে গাড়িবহরের গতি মন্থর হয়ে যায়।

এর প্রায় আড়াই ঘণ্টা পর রাত ১০টা ৫১ মিনিটের দিকে গাড়িবহরটি বিমানবন্দরে প্রবেশ করে। এর আগেই বিশেষ প্রক্রিয়ায় খালেদা জিয়ার ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করা হয়। তবে বিমানবন্দরে দেরিতে পৌঁছানোয় খালেদা জিয়ার ফ্লাইটটি নির্ধারিত সময়ে ছেড়ে যেতে পারেনি। দুইবার ফ্লাইটের সময় পরিবর্তন করা হয়।

২০০৭-০৮ সালের সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে খড়গ নেমে আসে জিয়া পরিবারে। খালেদা জিয়ার মত তার বড় ছেলে তারেক রহমানকেও গ্রেফতার করা হয়েছিল। তাকে কারাগারে নির্যাতন করে পাজরের হাড় ভেঙে দেওয়া হয়েছিল। মুক্তি পাওয়ার পর তিনি পরিবার নিয়ে লন্ডনে চলে যান, দেশে আর ফিরতে পারেননি।  এর মধ্যে পাসপোর্টের মেয়াদ ফুরিয়ে যাওয়ায় তারেক রহমানকে যুক্তরাজ্যে রাজনৈতিক আশ্রয় নিতে হয়। ছোট ভাই আরাফাত রহমান কোকোর মৃত্যু আর মায়ের কারাগারে যাওয়ার মত দুঃসময়েও তিনি দেশে ফিরতে পারেননি। তার মতো ভাগ্য বিড়ম্বনার শিকার আর কজন রাজনীতিক আছেন! যিনি কিনা স্নেহের আপন ছোটভাইয়ের লাশটি দেখার সুযোগ পাননি-তার কবরটি ছুঁয়ে দেখার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়েছেন।  

আশি ঊর্ধ্ব একজন রাজনীতিকের জীবনে আপনজনদেরকে কাছে ভিড়তে দেওয়া হচ্ছিল না। কারাগারের অন্ধকার প্রকোষ্টে বছরের পর বছর আটকে রাখা হয়েছে। অসুস্থ হয়েছেন বারবার; চিকিৎসাটুকুও দেওয়া হয়নি।  সন্তান-পুত্রবধূ-নাতনিকে হাজার হাজার কিলোমিটার দূরে রাখা হয়েছে। কাছে ভিড়তে দেওয়া হয়নি। খালেদা জিয়ার মতো জুলুমের শিকার নারী রাজনীতিক পৃথিবীতে দ্বিতীয়জন আছে কিনা ভেবে দেখতে হবে। যিনি অল্প বয়সে স্বামীকে হারিয়েছেন। গৃহবধূ থেকে রাজপথের আন্দোলন-সংগ্রাম করে আপোষহীন নেত্রীর উপাধি পেয়েছেন। সেনা নিয়ন্ত্রিত সরকার বারবার দেশত্যাগের চাপ দিলেও জনগণের কথা ভেবে দলের নেতাকর্মীদের কথা ভেবে যাননি। অথচ জীবন সায়াহ্নে চিকিৎসার বিদেশে যাওয়ার জন্য বারবার আবেদন করেও সেই অধিকারটুকু দীর্ঘকাল পাননি। গণতন্ত্রের জন্য বিএনপি নেত্রীর দীর্ঘ সংগ্রাম পৃথিবীর ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।    

২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি দুর্নীতি মামলায় সাজা দিয়ে খালেদা জিয়াকে কারাগারে পাঠানো হয়। সেদিনই বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে তারেককে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দেওয়া হয়। দীর্ঘ কারাভোগের পর ২০২০ সালে আওয়ামী লীগ সরকার খালেদা জিয়াকে নির্বাহী আদেশে সাময়িক মুক্তি দেয়। কিন্তু দুই শর্তের কারণে তিনি কার্যত বন্দি ছিলেন বাসা আর হাসপাতালের জীবনে। চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার জন্য বার বার অনুমতি চাইলেও তাতে সাড়া দেয়নি আওয়ামী লীগ সরকার।

এবার খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য লন্ডন যাত্রা রাজনৈতিক অঙ্গনে ভিন্ন আবহ তৈরি করেছে। হাসিনা পতনের পর বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক অভিযাত্রায় খালেদা জিয়ার প্রয়োজনীয়তা যে কতটুকু তা বলে বোঝানো যাবে না। রাজনীতিক থেকে সাধারণ মানুষ সবাই উপলব্ধি করেছে বাংলাদেশে গণতন্ত্র প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে খালেদা জিয়ার উপস্থিতি, অংশগ্রহণ ও নেতৃত্ব বলার অপেক্ষা রাখে না।  

১৯৮২ সালে ৩ জানুয়ারি খালেদা জিয়া দলে প্রাথমিক সদস্যপদ নিয়ে গৃহবধূ থেকে রাজনীতিতে আসেন। ১৯৮৩ সালে সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান, ১৯৮৪ সালে ১২ জানুয়ারি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও একই বছরে ১ মে চেয়ারপারসনের দায়িত্ব পান। এরপর থেকে ‘স্বৈরাচারের সঙ্গে কোনো আপস নয়’ এই নীতিতে অটুট থেকে ৯ বছর এরশাদবিরোধী আন্দোলন চালিয়ে যান। এরশাদের অধীনে ১৯৮৬ সালের নির্বাচনে যাননি তিনি। ওই নির্বাচনে অংশ না নেওয়ায় খালেদা জিয়া আপসহীন নেত্রী হিসেবে পরিচিতি পান। ১৯৯১ সালের নির্বাচনে বিএনপি জয়লাভ করে সরকার গঠন করে। দেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হন খালেদা জিয়া।

১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন করে বিএনপি আবারও ক্ষমতায় আসে। বেশিদিন টিকতে পারেননি তারা। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করে ক্ষমতা থেকে সরে যেতে হয়। পরের নির্বাচনে জয়ী হয়ে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করে। এরপর ২০০১ সালের আবারও ক্ষমতায় আসে বিএনপি। ২০০৬ সালে ২৮ অক্টোবর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করে দলটি। ২০০৭ সালে ২২ জানুয়ারির নির্বাচন আওয়ামী লীগ বয়কট করলে জটিল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। দেশজুড়ে শুরু হয় তুমুল আন্দোলন। এর প্রভাবে ফখরুদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বাধীন ১১/১ সরকার আবির্ভাব ঘটে। দুর্নীতির দায়ে সপরিবারে খালেদা জিয়াকে জেলে যেতে হয়। পরবর্তীতে জামিনে মুক্তি পান । দুই ছেলেকে বিদেশে চলে যেতে হয়। বড় ছেলে তারেক রহমান এখনও দেশে ফিরতে পারেননি। আরেক ছেলে আরাফাত রহমান কোকো বিদেশের মাটিতেই মারা গেছেন।

৮০ বছর বয়সী খালেদা জিয়া ভাগ্য বিড়ম্বনার শিকার এমন একজন রাজনীতিক যিনি রাজনীতি করার কারণে গণতন্ত্রের পক্ষে থাকার কারণে বারবার নিগৃহীত হয়েছেন। স্বামীর স্মৃতি বিজরিত বাড়ি থেকে বিতাড়িত হয়েছেন। শেষ বয়সে জেল খেটেছেন। সুচিকিৎসা পর্যন্ত পাননি। যে বয়সে মানুষ সন্তান-আত্মীয় পরিজন নিয়ে সময় কাটান সেই সময়ে তাকে একাকি সময় কাটাতে হচ্ছে। ছেলে-পুত্রবধূ-নাতনিকে থাকতে হয়েছে হাজার হাজার কিলোমিটার দূরে। দেশে আসতে দেওয়া হচ্ছে না তাদের। খালেদা জিয়ার সন্তান তারেক রহমান যার বাবা জিয়াউর রহমান স্বাধীন দেশের জন্য সম্মখ সমরে লড়াই করেছেন দেশের জন্য জীবন দিয়েছেন তাকে আজ দেশে আসতে দেওয়া হচ্ছে না। যার বাবা ৫৬ হাজার বর্গমাইলের ভূ-খন্ড সৃষ্টিতে ভূমিকা রেখেছেন স্বাধীন দেশে সেই তারেক রহমানের মাথা গোজার কোনো ঠাঁই নাই।

খালেদা জিয়া সন্তান তারেক রহমানকে সঙ্গে করেই নতুন বাংলাদেশে ফিরবেন এমন প্রত্যাশা দলটির নেতাকর্মীদের। 

শেয়ার করতে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *