খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীকে গুলি করে হত্যা

■ খুলনা প্রতিনিধি ■

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের এমবিএর ছাত্র অর্ণব কুমার সরকার (২২) সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত হয়েছেন। শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) রাত সোয়া ৯টার দিকে নগরীর শেখপাড়া তেঁতুলতলা এলাকায় এই হত্যার ঘটনা ঘটে।

নিহত অর্ণব নগরীর বানরগাতী ইসলাম কমিশনার মোড়ের চিত্ত রঞ্জন সরকারের ছেলে। অর্ণবের নিহত হওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করেন খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের (কেএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার (মিডিয়া) মোহা. আহসান হাবীব।

অর্ণব খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন ডিসিপ্লিনের মাস্টার্সের ছাত্র। তাঁর রোল নম্বর ২৩০৩১৭। এ বিষয় নিশ্চিত করেছেন ব্যবসায় প্রশাসন ডিসিপ্লিনের প্রধান অধ্যাপক শেখ মাহমুদুল হাসান, প্রভোস্ট অধ্যাপক শরিফ মোহাম্মদ খান এবং ছাত্র বিষয়ক পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. নাজমুস সাদাত।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাত সোয়া ৯টার দিকে নগরীর ময়লাপোতা থেকে তেঁতুলতলা মোড়ে এসে নর্থ ওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটির পাশে একটি চায়ের দোকানের সামনে মটরসাইকেলে (খুলনা মেট্রো-ল-১২-৩৮৭৭) হেলান দিয়ে চা খাচ্ছিলেন অর্ণব। এ সময় ১০-১৫টি মোটরসাইকেলে সশস্ত্র লোকজন এসে প্রথমে তাঁকে গুলি করে। গুলি তাঁর গায়ে লাগার পর রাস্তার ওপর পড়ে গেলে সন্ত্রাসীরা তাঁকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ও গুলি হত্যা করে রেখে যায়। গুলি অর্ণবের মাথা ভেদ করে বেরিয়ে যায়। স্থানীয় বাসিন্দারা তাঁকে উদ্ধার করে বেসরকারি সিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

রাত ১০টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত নিহত অর্ণব শীলের লাশ খুলনা সিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ছিল।

নিহত অর্নবের বন্ধু ফাহিম বলেন, হঠাৎ গুলির শব্দ শুনে এগিয়ে গিয়ে দেখি লোকজন জড়ো হয়ে আছে। এ সময় হেলমেট ফেলানো দেখে বুঝতে পেরেছি আমার বন্ধু। পরে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হয়। অর্নব ও আমি খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে এমবিএতে পড়ি। 

রাত ১০টার দিকে নগরীর সোনাডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘নিহত অর্ণবের লাশ খুলনা সিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রয়েছে। শুনেছি তাঁকে গুলি ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। তবে তাঁর শরীরের কোথায় গুলি ও কোপানো হয়েছে, তা এই মুহূর্তে বলতে পারব না। আমরা এখনো তাঁকে দেখতে পারিনি। কারা বা কী কারণে তাঁকে হত্যা করেছে, তা-ও প্রাথমিকভাবে বলা সম্ভব নয়। আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শনসহ সবকিছুর খোঁজখবর নেওয়ার চেষ্টা করছি।’

এ ঘটনার পর থেকে এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। সোনাডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সফিকুল ইসলাম আরও জানান, ঘটনাস্থল থেকে একটি বন্দুকের গুলির খোসা, ব্যবহৃত পিস্তলের গুলি ও একটি রক্তমাখা জুতা উদ্ধার করা হয়েছে। কেন ও কী কারণে তাকে হত্যা করা হয়েছে, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। হত্যার সঙ্গে জড়িতদের ধরতে অভিযান শুরু হয়েছে।

খুলনা মহানগর পুলিশের (কেএমপি) উপকমিশনার (দক্ষিণ) মো. মনিরুজ্জামান বলেন, সন্ত্রাসীদের গুলিতে এক শিক্ষার্থী নিহত হয়েছেন। কেন ও কী কারণে তাঁকে হত্যা করা হয়েছে, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের ধরতে অভিযান শুরু হয়েছে।

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের প্রধান অধ্যাপক শেখ মাহমুদুল হাসান জানান, অর্ণব খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী ছিলেন। এর আগে তিনি নর্থ ওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটি থেকে অনার্স পাস করেন।

নিহতের পরিবারের দাবি- অর্ণব কোন ধরনের রাজনীতি বা স্থানীয় কোন্দলে জড়িত নয়। তার কে বা কারা কেন গুলি করেছে তারা জানেন না।

শেয়ার করতে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *